Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

করোনা শনাক্তে ‘গণস্বাস্থ্যের’ রিএজেন্ট আসছে বৃহস্পতিবার


২২ মার্চ ২০২০ ২০:৫৫

ঢাকা: করোনাভাইরাস শনাক্তে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত পরীক্ষা পদ্ধতির রিএজেন্টগুলো (Reagent) আগামী বুধ-বৃহস্পতিবার নাগাদ ঢাকায় পৌঁছাবে। সবকিছু ঠিক থাকলে ঢাকায় পৌঁছানোর পরবর্তী তিনদিনের মধ্যে নমুনা পদ্ধতি তৈরি করে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠাবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। সেখান থেকে ছাড়পত্র পেলে নিজেদের উদ্ভাবিত পদ্ধতি ব্যবহার করে করোনা শনাক্তের কাজ শুরু করবে প্রতিষ্ঠানটি।

রোববার (২২ মার্চ) বিকেলে মোবাইল ফোনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সারাবাংলাকে এসব তথ্য জানান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

বিজ্ঞাপন

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ফলে কোভিড-১৯ নামে যে রোগে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে— সেটি শনাক্তের জন্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল একটা পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। ওই পদ্ধতি প্রয়োগের জন্য যেসব রিএজেন্ট (Reagent) প্রয়োজন, সেগুলো আমদানির জন্য ওষুধ প্রশসানের কাছে আবেদন করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।

গত ১৮ মার্চ ওষুধ প্রশাসন বেশকিছু শর্ত সাপেক্ষ যুক্তরাজ্যের এম/এস দ্যা নেটিভ এন্টিজেন কোম্পানির কাছ থেকে প্রায় দশ প্রকারের ১০০ কেজি রিএজেন্ট আমদানির অনুমতি দেয়। ওই অনুমতি সাপেক্ষে এরই মধ্যে এলসি খোলা, চাহিদাপত্র প্রদানসহ সবধরনের অনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। যুক্তরাজ্য থেকে শিগগিরই রিএজেন্টগুলো ঢাকায় এসে পৌঁছাবে।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরা সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে এলসি খোলা, চাহিদাপত্র পাঠানোসহ সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। আশা করছি আগামী বুধ-বৃহস্পতিবার নাগাদ ইংল্যান্ড থেকে রিএজেন্টগুলো ঢাকায় এসে পৌঁছাবে।’

বিজ্ঞাপন

‘রিএজেন্টগুলো হাতে পাওয়ার পর আমরা কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ পদ্ধতির স্যাম্পল তৈরি করে সরকারকে দেবো। সরকার ছাড়পত্র দেওয়ার পর আমরা পুরোদমে কাজ শুরু করব। তারপর এগুলো দিয়ে কোভিড-১৯ শনাক্ত করা যাবে। শুধু আমাদের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র নয়, সব হাসপাতাল-ক্লিনিক আমাদের এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারবে। চাহিদা অনুযায়ী আমরা সবাইকে এ পদ্ধতি সরবরাহ করব’— বলেন ডা. জাফরুল্লাহ।

এর আগে গত ১৭ মার্চ ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘মূলত ওটা কিট নয়, করোনাভাইরাস সংক্রমণের ফলে কোভিড-১৯ নামে যে রোগে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে— সেটি শনাক্ত করণের জন্য আমরা একটা পদ্ধতি আবিষ্কার করেছি।’

‘ডা. বিজন কুমার শীলের নেতৃত্বে চারজন ডাক্তার মিলে এই পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন। কিট তো অনেক বড় ব্যাপার। একটা কিটের খরচ ৯/১০ হাজার টাকা। আর আমরা যে পদ্ধতি আবিষ্কার করেছি, সেটার খরচ পড়বে ২০০ টাকা। যেকোনো প্যাথোলজিক্যাল ল্যাব বা হাসপাতালে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে ৩০০ টাকা খরচে কোভিড-১৯ শনাক্ত করা যাবে।’

তিনি বলেন, ‘গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র আবিষ্কৃত এই পদ্ধতিতে কোভিড-১৯ শনাক্ত করার জন্য কিছু উপকরণ ব্যবহার করতে হবে। সেই উপকরণগুলো ব্যবহার করতে হলে ওষুধ প্রশাসনের অনুমোদন লাগবে।’

তার এই বক্তব্যের পরের দিনই ওষুধ প্রশাসন রিএজেন্ট আমদানির অনুমতি দেয় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে। অনুমতি পাওয়ার পরই যুক্তরাজ্যের এম/এস দ্যা নেটিভ এন্টিজেন কোম্পানির কাছে নিজেদের চাহিদাপত্র পাঠায় প্রতিষ্ঠানটি।

ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘যে কিটের মাধ্যমে আইইডিসিআর কোভিড-১৯ শনাক্ত করছে, সেটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা চীনের সরবরাহ করা কিট। এটি অত্যন্ত ব্যয় বহুল এবং তা দিয়ে পরীক্ষার জন্যও প্রয়োজন উন্নত ল্যাবরেটরি। কিন্তু আমাদের এই পদ্ধতি অত্যন্ত সূলভ ও সহজলভ্য। এই পদ্ধতিতে দেশের যেকোনো হাসপাতালে কোভিড-১৯ শনাক্ত করা যাবে। এর জন্য একটা জায়গায় ভিড় করতে হবে না। মানুষের মধ্যে যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে সেটি দূর হবে।’

তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস মোকাবিলার প্রথম চ্যালেঞ্জ হলো লাখ লাখ মানুষের পরীক্ষা করা। হাতে গোনা কয়েকটি জায়গায় সেটি করা একেবারেই অসম্ভব। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের আবিষ্কৃত পদ্ধতি ব্যবহার করে যেকোনো ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে মাত্র তিনশ টাকায় কোভিড-১৯ শনান্ত করা যাবে।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রোববার (২২ মার্চ) সন্ধ্যায় ড. বিজন কুমার শীল সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি ল্যাবে ব্যস্ত আছি। এসব বিষয় নিয়ে আমাদের মুখপাত্র আপনাদের সঙ্গে কথা বলবেন। আপাতত আমি কথা বলতে পারছি না।’

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ঢাকা রিএজেন্ট

বিজ্ঞাপন

নামেই শুধু চসিকের হাসপাতাল!
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৬

আরো

সম্পর্কিত খবর