‘মহামারি নিয়ন্ত্রণ দলীয় রাজনীতির বিষয় নয়, জাতীয় অস্তিত্বের বিষয়’
২৩ মার্চ ২০২০ ১৭:৩৮
ঢাকা: ‘বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের মতো মহামারির প্রভাব নিয়ন্ত্রণ দলীয় রাজনীতির কোনো বিষয় নয়, এটি জাতীয় অস্তিত্বের বিষয়। মানুষের জীবন বাঁচাতে দ্রুত দৃঢ় ও সমন্বিত নীতি গ্রহণ করতে হবে। একই সঙ্গে অর্থনৈতিক ও সামাজিক ত্যাগ স্বীকারের মধ্যে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।’
সোমবার (২৩ মার্চ) গণফোরামের সভাপতি কামাল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া এক যুক্ত বিবৃতিতে এসব মন্তব্য করেন।
বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, ‘বর্তমান সরকার বিষয়টি মোকাবিলায় অনেক মূল্যবান সময়ক্ষেপণ করে যৎসামান্য কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। করোনাভাইরাস সংক্রমিত বিভিন্ন দেশ থেকে আসা প্রবাসীদের কার্যকরভাবে আলাদা রাখতে ব্যর্থতার বিষয়টি গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। এসব ব্যর্থতার ফলে দেশের ৬৩ জন শিক্ষক ও গবেষক প্রধানমন্ত্রীকে খোলা চিঠি দিয়ে একটি সম্ভাব্য কর্মপরিকল্পনা সুপারিশ করেছে। আমরা বিশিষ্ট নাগরিকের প্রদত্ত গঠনমূলক ও সুবিবেচনাপূর্ণ সুপারিশগুলোকে সমর্থন করি। ভাইরাসটির ঝুঁকি মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত ব্যবস্থার সঙ্গে চীন, সিংগাপুর ও দক্ষিণ কোরিয়ার গৃহীত ব্যবস্থার বিস্তর ফারাক রয়েছে। কিছু কিছু দেশ জানুয়ারি মাস থেকেই করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ব্যবস্থা নিয়েছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে বিশ্বের বহু দেশ তাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ড প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে। জননিরাপত্তার স্বার্থে বিভিন্ন শহর এবং কিছু দেশ সম্পূর্ণ লকডাউন বলবৎ করেছে। অর্থনৈতিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে যাদের কোনো সঞ্চয় নেই এবং দৈনিক/সাপ্তাহিক আয়ের উপর নির্ভরশীল, তাদের সহায়তা করতে অনেক দেশ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশে সহায়-সম্পদহীন এরূপ কয়েক কোটি মানুষের অবস্থা আরও বেশি সঙ্গীন। এই মানুষগুলোকে অনাহার, অপুষ্টি (বিশেষ করে শিশুদের) ও ক্ষুধা থেকে বাঁচাতে অন্তত কয়েক মাস খাওয়ানোর বন্দোবস্ত করতে হবে। এছাড়া উদ্ভূত বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা বিগত এক শতকের যেকোনো মন্দার চেয়ে ভয়াবহ ও দীর্ঘমেয়াদী হতে পারে। দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে এই মন্দার পরোক্ষ নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং কর্মসংস্থান উল্লেখযোগ্য হারে কমে যেতে পারে।
আমাদের একটি লম্বা সময় ধরে জনজীবনে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বিঘ্নিত হওয়ার মতো পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকার আহ্বান জানিয়ে তারা আরও বলেন, ‘এ পরিস্থিতি থেকে পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া হবে দীর্ঘ এবং কষ্টসাধ্য। আসন্ন মাস ও বছরগুলোতে আমাদের জনগণের উপর এই বিপুল ক্ষয়ক্ষতি ও দুর্ভোগের প্রভাব কমিয়ে আনতে সরকারের পক্ষ থেকে সতর্ক পরিকল্পনা এবং সুস্পষ্ট নীতি-প্রণয়ন আবশ্যক।’