খালেদার মুক্তি: করোনা ঝুঁকি উপেক্ষা করে হাসপাতালে নেতাকর্মীর ভিড়
২৪ মার্চ ২০২০ ১৭:৫৯
ঢাকা: কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা নির্বাহী আদেশে স্থগিত রেখে তাকে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক এ সিদ্ধান্তের ঘোষণা দিলে তা গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ার পরপরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ভিড় জমিয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মী-সমর্থকরা। করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে জনসমাগম এড়ানোর নির্দেশনা থাকলেও সেটি আমলেই আনছেন না তারা।
মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালের সামনে গিয়ে দেখা যায়, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এইচ এম জাহিদ হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে খায়রুল কবির খোকন, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল এবং যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত রয়েছেন হাসাপাতালের সামনে। তারা বলছেন, বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতির মধ্যে দলের চেয়ারপারসন মুক্তিতে তারা খুব আনন্দিত।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, টেলিভিশনে দেখতে পেলাম, ম্যাডামকে আজ মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। সেটা দেখে ছুটে এসেছি। আমি মনে করি সারাদেশে আমাদের নেতাকর্মীদের মধ্যে যে উদ্বেগ, সেটার কিছুটা হলেও অবসান হবে। বিশ্বজুড়ে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে আমাদের নেত্রী মুক্তি পাচ্ছেন, সেটা আমাদের কিছু হলেও স্বস্তি দিচ্ছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এইচ এম জাহিদ হোসেন বলেন, চেয়ারপারসন মুক্তি সংক্রান্ত সুপারিশ ফাইল আইন মন্ত্রণালয় থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আশা করি আজই ম্যাডাম মুক্তি পাবেন।
তিনি বলেন, ম্যাডামকে এখান থেকে বিশেষায়িত হাসপাতাল নাকি বাসায় নেবে, এ বিষয়ে এখনো দল বা পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।
সরেজমিনে দেখা যায়, নেতাকর্মীরা ভিড় করলেও হাসপাতালের কর্মীরা বারবার তাদের স্থান ত্যাগ করতে বলছেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকির কথা মনে করিয়ে দিয়ে তাদের সরে যেতে বলছেন। তবে নেতাকর্মীরা বলছেন, কোনো ঝুঁকিই এখন তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ না।
হাসপাতালে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিএনপি চেয়ারপারসনের মুক্তির বিষয়ে তারা এখনো কিছু জানেন না।
এর আগে, মঙ্গলবার বিকেলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তার বাসায় সংবাদ সম্মেলন জানান, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত রেখে তাকে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। তবে শর্ত থাকছে, এই সময় তাকে নিজ বাসায় থাকতে হবে, দেশের বাইরে যেতে পারবেন না।
আইনমন্ত্রী জানান, এ বিষয়ক মতামত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে আজ খালেদা জিয়াকে ছেড়ে দিলে তিনি ২ বছর এক মাস ১৭ দিন পর কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন।