চট্টগ্রামে জলকামান থেকে জীবাণুনাশক ছিটাচ্ছে পুলিশ
২৪ মার্চ ২০২০ ২১:৪৯
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে জীবাণুনাশক ছিটানো শুরু করেছে পুলিশ। আর এ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে পুলিশের দাঙ্গা দমনের কাজে ব্যবহৃত জলকামানগুলো। নগরীকে পরিচ্ছন্ন করতে পুলিশের এই উদ্যোগে স্বস্ত্বি মিলেছে নগরবাসীর মধ্যে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সিএমপির এই উদ্যোগ প্রশংসা কুড়িয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) দুপুরে নগরীর দামপাড়ায় ব্লিচিং পাউডারসহ জীবাণুনাশক নানান উপকরণ মেশানো পানি ছিটানো কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার মো. মাহাবুবুর রহমান।
এসময় সিএমপি কমিশনার বলেন, ‘পুলিশ হিসেবে আমাদের কাজ মানুষকে সেবা দেওয়া। এই সেবার মানসিকতা থেকেই আমরা নগরীকে জীবাণুমুক্ত করার কাজে নেমেছি। আমরা সকলের সম্মিলিত প্রয়াসে করোনাভাইরাসকে মোকাবিলা করব। নগরবাসীর প্রতি আমার আহ্বান, আপনারা আতঙ্কিত হবেন না। সচেতন থাকুন। আর হোম কোয়ারেনটাইনে যারা আছেন তাদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবার অনুরোধ করছি। ঘর ছেড়ে বাইরে আসবেন না। আপনাদের সুস্থতার জন্য, আপনার আশপাশের মানুষকে সুস্থ রাখার জন্য যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সেটা পালন করুন।’
এসময় অন্যান্যের মধ্যে সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন) আমেনা বেগম, অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) শ্যামল কুমার নাথসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সিএমপি কমিশনারের উদ্বোধনের পর নগরীর দামপাড়া থেকে শুরু হওয়া জীবাণুনাশক ছিটানো কার্যক্রম জিইসি মোড় পর্যন্ত চলে। আর এই কাজে ব্যবহার করা হয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা, সংঘাত, দাঙ্গা দমনে ব্যবহৃত কয়েকটি জলকামান। এসময় উৎসুক জনতাকেও পানি ছিটিয়ে সরিয়ে দিতে হয়েছে পুলিশকে। জীবাণুনাশক পানি ছিটানোর এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) আবু বক্কর সিদ্দিক।
একইসঙ্গে নগরীর ১৬টি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানেও শুরু হয়েছে নিজ নিজ এলাকায় জীবাণুনাশক ছিটানোসহ পরিচ্ছন্নতার কার্যক্রম।
নগরীর ডবলমুরিং থানার ওসি সদীপ কুমার দাশ সারাবাংলাকে বলেন, ‘ব্লিচিং পাউডার মেশানো পানি প্রথমে পুরো থানার আশেপাশে স্প্রে করা হয়েছে। থানার ভেতরে নালা-নর্দমায় স্প্রে করা হয়েছে। কমিশনার স্যারের নির্দেশে আমরা ডবলমুরিং থানা এলাকায় বিশেষ পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি শুরু করেছি।’
এদিকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে আশঙ্কায় নগরীতে হোম কোয়ারেনটাইনে থাকা বিদেশফেরত ব্যক্তিদের বাসায় ও ভবনের গেইটে সচেতনতামূলক স্টিকার লাগাচ্ছে পুলিশ। সিএমপি কমিশনারের নির্দেশে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে এবং হোম কোয়ারেনটাইনে থাকা ব্যক্তিদের ঘরে থাকতে বাধ্য করতে নগরজুড়ে পুলিশের এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন সারাবাংলাকে বলেন, ‘কমিশনার স্যারের নির্দেশে বিদেশফেরত ব্যক্তি যারা হোম কোয়ারেনটাইনের আদেশ মানছেন, তাদের বাসায় বাসায় ফল দেওয়ার কার্যক্রম অব্যাহত আছে। আমরা ফল দেওয়ার সময় হোম কোয়ারেনটাইনে থাকা ব্যক্তির নাম-ঠিকানাসহ আনুষাঙ্গিক তথ্য যেমন সংগ্রহ করছি, তেমনি তার বাসায় ও ভবনের গেইটে স্টিকার লাগিয়ে দিচ্ছি।’