Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভাষণে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী [পূর্ণাঙ্গ ভাষণ]


২৫ মার্চ ২০২০ ২১:৪৫

ঢাকা: মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের প্রাক্কালে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের বাস্তবতায় তার ভাষণটি আবর্তিতই হয়েছ এই ভাইরাস ঘিরে। তিনি এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকার পরামর্শ যেমন দিয়েছেন, তেমনি ভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ ও প্রস্তুতির কথাও তুলে ধরেছেন।

বুধবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার ভাষণটি সরাসরি সম্প্রচার করে।

প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের চুম্বক অংশগুলো দেখে নিই একনজরে—

– প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে গোটা বিশ্ব বিপর্যস্ত। প্রাণপ্রিয় বাংলাদেশও এ সংক্রমণ থেকে মুক্ত নয়।

– করোনাভাইরাস বিস্তারের প্রেক্ষাপটে মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান টিভিতে সম্প্রচার করেছি। স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসেও জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনসহ সমাবেশ স্থগিত করা হয়েছে। জনসমাগম হয়— এমন সব অনুষ্ঠান আয়োজন থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানাই।

– এই মুহূর্তে আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার মানুষকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করা।

– সবার মানসিক অবস্থা বুঝতে পারছি। ধৈর্য ও সাহসিকতার সঙ্গে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের উপদেশ আমাদের মেনে চলতে হবে।

– বিদেশ ফেরতরা হোম কোয়ারেনটাইন অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলুন। ১৪ দিন আলাদা থাকুন।

– ঘন ঘন সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়া, হাঁচি-কাশি দিলে নাক-মুখ ঢেকে রাখা, কফ-থুতু যেখানে সেখানে না ফেলা, কোলাকুলি-করমর্দনের মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।

– অতি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যাবেন না।

– ঘরে নামাজ আদায় করুন। অন্য ধর্মের ভাইবোনরাও ঘরে বসে প্রার্থনা করুন।

– আগে থেকেই নানা রোগে আক্রান্ত ও বয়স্কদের জন্য এই ভাইরাস প্রাণ-সংহারী হয়ে উঠেছে। তাই পরিবারের সবচেয়ে সংবেদনশীল মানুষটির প্রতি বেশি নজর দিন।

– আতঙ্ক মানুষের যৌক্তিক চিন্তাভাবনার বিলোপ ঘটায়। তাই আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থাকুন।

– ঢাকায় ১০ হাজার ৫০টিসহ সারাদেশে ১৪ হাজার ৫৬৫টি আইসোলেশন শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

– প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেনটাইনের জন্য ২৯০টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত। ১৬ হাজার ৭৪১ জনকে সেবা দেওয়া যাবে।

– সারাদেশে ৩৭ হাজার ৩৮ জনকে কোয়ারেনটাইনে রাখা হয়েছে। ৯ হাজার ৮৮৫ জনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে (মঙ্গলবার পর্যন্ত)।

– স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষায় পর্যাপ্ত পরিমাণ সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়েছে এবং যথেষ্ট পরিমাণ সরঞ্জাম মজুত আছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।

– মঙ্গলবার পর্যন্ত ১৩ হাজার পরীক্ষা কিট মজুত। আরও ৩০ হাজার কিট শিগগিরই দেশে পৌঁছাবে।

– স্বাস্থ্যকর্মীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী ও প্রশাসনের সদস্যদের একযোগে কাজ করার জন্য ধন্যবাদ।

– কেউ গুজব ছড়াবেন না। গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা।

– কেউ সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করবেন না। বাজারে কোনো পণ্যের ঘাটতি নেই।

– অযৌক্তিকভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়াবেন না, জনগণের দুর্ভোগ বাড়াবেন না।

– গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য বিনামূল্যে ঘর, ৬ মাসের খাদ্য ও নগদ অর্থ দেওয়া হবে।

– বিনামূল্যে ভিজিডি, ভিজিএফ ও ১০ টাকা কেজি দরে চাল সরবরাহ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

– নিম্নআয়ের মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্য বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

– রফতানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করছি।

– আমি নিজে সারাক্ষণ পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি।

– আমাদের এখন কৃচ্ছতা সাধানের সময়। যতটুকু না হলে নয়, তার অতিরিক্ত কোনো ভোগ্যপণ্য কিনবেন না। সীমিত আয়ের মানুষকে কেনার সুযোগ দিন।

– কৃষক ভাইদের প্রতি অনুরোধ, কোনো জমি ফেলে রাখবেন না। আরও বেশি বেশি ফসল ফলান।

– সময় পরস্পরকে সহায়তা করার, মানবতা প্রর্দশনের।

– করোনাভাইরাস মোকাবিলাও যুদ্ধ। এ যুদ্ধে আপনার দায়িত্ব ঘরে থাকা। সকলের প্রচেষ্টায় এ যুদ্ধে জয়ী হব, ইনশাআল্লাহ।

– স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। যার যার ঘরে থাকুন, ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, নিরাপদ থাকুন।

প্রধানমন্ত্রীর পূর্ণাঙ্গ ভাষণ প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ভাষণে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর