‘গণস্বাস্থ্যের পদ্ধতিতে’ আগামী এক মাসে ১ লাখ লোকের করোনা টেস্ট!
২৬ মার্চ ২০২০ ১৮:২৮
ঢাকা: করোনাভাইরাস সংক্রমণে সৃষ্ট ‘কেভিড-১৯’ নামক মরণঘাতী রোগ নিয়ে গোটাবিশ্ব যখন দিশেহারা, ঠিক তখন আরেকটি ‘ভালো খবর’ দিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি জানিয়েছেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে আগামী এক মাসের মধ্যে এক লাখ লোকের করোনা টেস্ট করা যাবে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারবেন তারা।
বৃহস্পতিবার ( ২৬ মার্চ) বিকেলে মোবাইলে ফোনে সারাবাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের আবিষ্কৃত কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্তকরণ পদ্ধতির সর্বশেষ খবর জানান ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। পরে এ পদ্ধতি উদ্ভাবন দলের প্রধান ড. বিজন কুমার শীলের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের।
ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘কোভিড-১৯ শনাক্তে আমরা যে পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছি, সেটি নিয়ে ল্যাবরেটরিতে পুরোদমে কাজ চলছে। ড. বিজন কুমার শীলের নেতৃত্বে একদল গবেষক রাত-দিন কাজ করছেন। এখন পর্যন্ত সবকিছু ঠিক আছে। আশা করছি, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে আমার কোভিড-১৯ শনাক্তের কাজ শুরু করতে পারব।’
বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) নাগাদ ইংল্যান্ড থেকে রিএজেন্টগুলো ঢাকায় পৌঁছানোর কথা ছিল, সেগুলো কি এসেছে?— এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘ওগুলো এখনো আসেনি। বৈশ্বিক ঝামেলার কারণে আসতে দেরি হচ্ছে। আশা করি, আগামী সোমবার নাগাদ ওগুলো হাতে এসে পৌঁছাবে। আর আগামী একমাসের মধ্যে আমরা ১ লাখ লোককে এ পদ্ধতিতে কোভিড-১৯ টেস্ট করাতে পারব। সাধারণ মানুষকে এ পদ্ধতিতে সেবা দিতে পারব।’
কেউ এটিকে পদ্ধতি বলছে, কেউ বলছে কিট। কোনটা ঠিক?— এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘অবশ্যই এটা পদ্ধতি। কয়েকটা ম্যাটেরিয়াল (রিএজেন্ট) ব্যাবহার করে এ পদ্ধতিতে কোভিড-১৯ শনাক্ত করব। দেশবাসীর কাছে এ বার্তাটাই পৌঁছে দাও। দেশের মানুষ আতঙ্কে আছে। সহজ এবং সুলভ এ পদ্ধতি ব্যবহার করে আমরা মানুষকে দুঃচিন্তা থেকে মুক্তি দিতে চাই।’
‘সবার শরীরে তো আর করোনাভাইরাস নেই। কিন্তু পরীক্ষার অভাবে সবাই আতঙ্কে আছে। সহজে এবং সুলব মূল্যে যদি পরীক্ষা করা যেত, তাহলে মানুষের আতঙ্ক অনেকটা কমে যেত। আমরা মানুষকে এ আতঙ্ক থেকে মুক্তি দিতে চায়। শুধু বাংলাদেশ নয়, আমাদের এই পদ্ধতি ব্যবহার করে সারা পৃথিবীর মানুষ যাতে সুফল পায়, আমরা সেই চেষ্টা করছি। আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। ইংল্যান্ড থেকে রিএজেন্টগুলো এসে পড়লে আমরা কাজ শুরু করব’— বলেন ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
পরে এ পদ্ধতি উদ্ভাবক দলের প্রধান ড. বিজন কুমার শীলের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের কাজ পুরোদমে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। এই বৈশ্বিক সংকটের মধ্যে আমরা চেষ্টা করছি পদ্ধতিটা দ্রুত লন্স করতে। রিএজেন্টগুলো হাতে পেলেই আমরা প্রোডাকশনে যাব। আমরা চাই, আপনারা (সাংবাদিক) প্রোডাক্টিব এবং পজেটিভ নিউজ করেন। কারণ, আপনাদের ওপর জাতির আস্থা অপরিসীম। আপনারা যা বলেন, মানুষ সেটাই বিশ্বাস করে, গ্রহণ করে।’
যে কিটের মাধ্যমে কোভিড-১৯ শনাক্ত করছে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) সেটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও চীনের সরবরাহ করা কিট। এটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং তা দিয়ে পরীক্ষার জন্যও প্রয়োজন উন্নত ল্যাবরেটরি। কিন্তু গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত পদ্ধতি অত্যন্ত সূলভ ও সহজলভ্য।
এ পদ্ধতিতে দেশের যে কোনো হাসপাতালে কোভিড-১৯ শনাক্ত করা যাবে। সবমিলে খরচ পড়বে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা।