Monday 02 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সামনে ভিড় এড়াতে ‘বৃত্তবন্দি’ করা হচ্ছে ক্রেতাদের


২৬ মার্চ ২০২০ ২০:২৫ | আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২০ ২১:৫৫
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চট্টগ্রাম ব্যুরো: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে জরুরি পণ্যের দোকানের সামনে বৃত্ত এঁকে দিচ্ছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। চট্টগ্রামের তিনটি উপজেলায় একযোগে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষকে বৃত্তের ভেতরে দাঁড়িয়েই পণ্য কিনতে হবে।

চট্টগ্রামের জেলা মো. ইলিয়াস হোসেনের নির্দেশে নগরী এবং সব উপজেলায় এই কার্যক্রম শুরুর প্রস্তুতি নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) প্রথম দিনে রাউজান, পটিয়া ও সাতকানিয়া উপজেলায় কয়েকশ দোকানের সামনে বৃত্ত আঁকা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

রাউজানের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জোনায়েদ কবীর সোহাগ সারাবাংলাকে বলেন, ‘মানুষ যেন নিরাপদ দূরত্বে থেকে জরুরি পণ্য কিনতে পারে, একজন যেন আরেকজনের সংস্পর্শে আসতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করার জন্য জেলা প্রশাসক স্যার উদ্যোগ নিয়েছেন। আমরা সেটার বাস্তবায়ন শুরু করেছি। রাউজান পৌরসভার ফকিরহাট ও মুন্সীরঘাটা বাজার এবং বিনাজুরি ইউনিয়নের কাগতিয়া বাজারে মুদি ও ওষুধ মিলিয়ে ২৫টি দোকানের সামনে আমরা বৃত্ত এঁকে দিয়েছি। ঘর থেকে বের হয়ে ক্রেতারা দোকানে যখন আসবেন, তখন এই বৃত্তের মধ্যেই থাকতে হবে এবং সেখান থেকেই পণ্য সংগ্রহ করতে হবে।’

ইউএনও জোনায়েদ জানান, একটি বৃত্তের সঙ্গে আরেকটি দূরত্ব রাখা হচ্ছে কমপক্ষে এক মিটার কিংবা তারও বেশি। বৃত্ত আঁকার পর দোকানের মালিককে বলা হয়েছে, ক্রেতারা যেন সারিবদ্ধভাবে বৃত্তাকার স্থানে দাঁড়িয়ে পণ্য কেনেন সেটা নিশ্চিত করতে। ভিড় কিংবা জটলা যেন কোনোভাবেই না হয়, সেটা নিশ্চিত করার জন্য মালিককে বলা হয়েছে। একসঙ্গে বেশি ক্রেতা এলে বৃত্তাকার স্থানের নিয়ম মেনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়াবেন। নিরাপদ সামাজিক দূরত্বের আদেশ অমান্য করলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণাও দেন ইউএনও।

‘এটি একটি প্রতীকী বিষয়। মানুষের মধ্যে সামাজিক দূরত্বের বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে এটা করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আমরা পুরো রাউজান উপজেলায় জরুরি পণ্যের দোকান, যেগুলো সাধারণ ছুটি ঘোষণার মধ্যেও খোলা থাকবে, সেগুলোর সামনে বৃত্তাকার স্থান চিহ্নিত করে দেবো,’— বলেন ইউএনও জোনায়েদ কবীর।

এদিকে পটিয়া সদরের উপজেলা পরিষদ চত্বর, পোস্ট অফিস এলাকা, বাসস্টেশন, বৈলতলীর রোড়, শহীদ ছবুর রোডের বিভিন্ন সড়কে প্রায় শ’খানেক ওষুধ ও মুদি দোকানের সামনে লাল রঙ দিয়ে বৃত্ত আঁকা হয়েছে। পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারহানা জাহান উপমা জানিয়েছেন, প্রতিটি বৃত্তের মধ্যে তিন ফুট দূরত্ব রাখা হয়েছে। পুরো উপজেলায় পুলিশ ও সেনাসদস্যদের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের পাশাপাশি বৃত্ত আঁকার কাজেও তাদের সহায়তা নেওয়া হচ্ছে।

এছাড়া চট্টগ্রামের সাতকানিয়া পৌরসভা, কেরাণীহাট এলাকায় ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের দোকানের সামনে বৃত্ত আঁকা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘ডিসি স্যার নগরী ও চট্টগ্রামের সব উপজেলায় দোকানের সামনে বৃত্ত আঁকার কাজ শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন। কাল (শুক্রবার) আমরা মহানগরীতে জরুরি পণ্যের দোকানগুলোর সামনে বৃত্তাকার স্থান চিহ্নিত করার কাজ শুরু করব। তাহলে দোকানের সামনে অযথা ভিড় হবে না। একইভাবে দোকান মালিকদেরও আমরা ক্রেতাদের সারিবদ্ধভাবে নিরাপদ দূরত্বে রেখে পণ্য বিক্রি করার আহ্বান জানাচ্ছি।’

বিশ্বজুড়ে মহামারি ধারণ করা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় সরকার গত ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করে। এরপর ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ সময় জনগণের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য মাঠে নামানো হয়েছে সেনাবাহিনীকে।

সাধারণ ছুটির এই সময়ের মধ্যে মানুষকে ঘর থেকে বের না হওয়ার বা অহেতুক সমাগম পরিহারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে চলাচলেরও নির্দেশনা আছে। সাধারণ ছুটির মধ্যে ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দোকান ছাড়া সবই বন্ধ আছে।

টপ নিউজ দোকানের সামনে ক্রেতাদের দূরত্ব বৃত্তবন্দি ক্রেতা সামাজিক দূরত্ব সোস্যাল ডিসটেন্স