করোনায় অচল বাঘাবাড়ি নৌবন্দর, সার নিয়ে শঙ্কায় কৃষক
২৭ মার্চ ২০২০ ১০:৫৮
সিরাজগঞ্জ: করোনাভাইরাসের প্রভাবে জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় গত একসপ্তাহ ধরে সারবাহী কোনো জাহাজ ভেড়েনি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ি নৌবন্দরে। এতে কর্মহীন হয়ে পড়েছে বন্দরটি, কার্যত হয়ে পড়েছে অচল। হাতে কাজ না থাকায় এ বন্দরের প্রায় সাতশ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে। বন্দরে কোনো কাজ না থাকায় লেবার ইজারাদারের গুণতে হচ্ছে লোকসান। সরকারও হারাচ্ছে মোটা অঙ্কের রাজস্ব।
এদিকে, সার সরবরাহ বন্ধ থাকায় চলতি সেচ মৌসুমে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় সারের কৃত্রিম সংকটের আশঙ্কায় কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়েছে। বন্দর লেবার এজেন্ট ও শ্রমিকরা এ বিষয়ে করণীয় ও এই অচলাবস্থা নিরসনে সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বাঘাবাড়ি নৌবন্দরের লেবার এজেন্ট আব্দুস সালাম ব্যাপারী সারাবাংলাকে বলেন, করোনাভাইরাসের প্রভাবে গত একমাস ধরে নৌপথে চট্টাগ্রাম থেকে বাঘাবাড়ি নৌবন্দরে জাহাজ চলাচল কমে গেছে। এর মধ্যে গত একসপ্তাহ ধরে সার বহনকারী কার্গো জাহাজের যাতায়াত একেবারে বন্ধ। ফলে বাঘাবাড়ি নৌবন্দর কর্মহীন হয়ে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। এতে এ বন্দরে কর্মরত প্রায় সাতশ শ্রমিক বেকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। এছাড়া তাদের প্রতিমাসে প্রায় ২৫ লাখ টাকা করে লোকসান হচ্ছে।
বাঘাবাড়ি নৌবন্দরের শ্রমিক আজিবর খান, মো. আলাউদ্দিন, আল মাহমুদ জানান, করোনার প্রভাবে সপ্তাহখানেক ধরে বাঘাবাড়ি নৌবন্দরে সার বহনকারী কার্গো জাহাজ আসছে না। ফলে তারা প্রায় সাতশ শ্রমিক বেকার হয়েছেন। বাইরেও কাজ পাচ্ছেন না। ফলে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাদের।
এদিকে, স্থানীয় কৃষকদের আশঙ্কা, সার বহনকারী কার্গো না আসায় সারের সংকট দেখা দিতে পারে। যদিও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, সারের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। কৃষকদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
শাহজাদপুর উপজেলার চরাচিথুলিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল আলীম, সোহেল রানা, ইউসুফ আলী, রওশন সরকার বলেন, বাঘাবাড়ি নৌবন্দরে সারবাহী জাহাজ আসছে না, এ খবর শুনেছি। সার না এলে শুধু আমাদের এখানকার না উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় ইরি-বোরো আবাদে সংকট দেখা দেবে। আবার সারের জাহাজ না এলে সার থাকলেও ডিলার-বিক্রেতারা সংকট দেখিয়ে বেশি দামে বিক্রি করতে পারে। তাতে আবাদের খরচ বাড়বে, আবার আবাদ কম হওয়ারও আশঙ্কা আছে।
তবে বাঘাবাড়ি নৌবন্দরের উপপরিচালক সাজ্জাদ আলম সারাবাংলাকে বলেন, করোনার প্রভাবে বাঘাবাড়ি নৌবন্দরে জাহাজ চলাচল সীমিত রয়েছে, এ তথ্য সত্য। তবে উত্তরাঞ্চলের জন্য সারের পর্যাপ্ত মজুত আছে। ফলে সারের সংকট দেখা দেওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। তিনি কৃষকদের এ বিষয়ে শঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
বাঘবাড়ি নৌবন্দরের বাফার গুদামের ইনচার্জ সোলায়মান হোসেনও জানান, বাঘাবাড়িসহ উত্তরাঞ্চলের ১৪টি বাফার গুদামে পর্যাপ্ত সার মজুত রয়েছে। ফলে উত্তরাঞ্চলে সার সংকট হবে বলে আমি মনে করি না। তিনিও কৃষকদের এ বিষয়ে শঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
করোনাভাইরাস করোনার প্রভাব নৌবন্দর অচল বাঘাবাড়ি নৌবন্দর সার সংকট সার সংকটের আশঙ্কা