সাধারণ ছুটিতে ঢাকার ৬০ স্থানে টিসিবির পণ্য বিক্রি
২৭ মার্চ ২০২০ ২০:২৩
ঢাকা: করোনাভাইরাসের কারণে দেশ কার্যত লক ডাউনে। সাধারণ ছুটি চলছে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। ছুটির মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানপাট খোলা রয়েছে। এ সময়ে চালু থাকছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)’র ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রির কার্যক্রমও।
অন্য সময়ের মতো শনিবার (২৮ মার্চ) থেকে ঢাকায় ৬০টি ট্রাকে টিসিবির পণ্য বিক্রি চলবে। অব্যাহত থাকবে সারাদেশের ৩৫০টি ট্রাক সেলের কার্যক্রমও। ফলে ভোক্তারা এ সময় টিসিবির ট্রাক থেকে ন্যায্যমূল্যে বিভিন্ন পণ্য কিনতে পারবেন।
জানতে চাইলে শুক্রবার (২৭ মার্চ) দুপুরে টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ুর কবির সারাবাংলাকে বলেন, ‘বর্তমানে সারাদেশে ৩৫০টি ট্রাক সেলের কার্যক্রম চলমান। এরমধ্যে ঢাকায় ৬০টি ট্রাকে পণ্য বিক্রি হচ্ছে।’
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার ও সাপ্তাহিক ছুটির কারণে শুক্রবার টিসিবির কার্যক্রম বন্ধ ছিল। আগামীকাল থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত পণ্য বিক্রির কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। মূলত রমজান পর্যন্তই এ কার্যক্রম চলবে।
এদিকে তেল, চিনি ও ডালসহ পাঁচটি নিত্য পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এ। ভোক্তাদের এসব পণ্য নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ুন কবির সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে তেল-চিনি-মসুর ডালের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। এ বিষয়ে ভোক্তার চিন্তিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। ক্রেতারা টিসিবির ট্রাক থেকে থেকে তা কিনতে পারবেন।’
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘যে পাঁচটি পণ্য ন্যায্যমূল্যে বিক্রি হয়; সবগুলোরই পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। এখন পর্যন্ত যে পণ্য আছে তা দিয়ে রমজান পর্যন্ত তো স্বাভাবিক কার্যক্রম চলবেই, বরং আরও বেশি সময় চলার মতো আমাদের মজুদ রয়েছে।’
টিসিবিতে এখন চিনি, মশুর ডাল, সয়াবিন তেল ও পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। চিনি ৫০ টাকা কেজি (গ্রাহক প্রতি সর্বোচ্চ ৪ কেজি), মশুর ডাল ৫০ টাকা কেজি (গ্রাহক প্রতি সর্বোচ্চ ২ কেজি), সয়াবিন তেল ৮০ টাকা লিটার (গ্রাহক প্রতি সর্বোচ্চ ৫ লিটার) ও পেঁয়াজ ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
করোনাভাইরাসের প্রভাবে বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়া সম্প্রতি টিসিবির ট্রাকগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে প্রায় সবসময়।
টিসিবি জানিয়েছে, সকাল সাড়ে ৮টার পরই গুদাম থেকে একে একে ট্রাক বেরিয়ে যেতে শুরু করে। নির্দিষ্ট স্থানে যেতে ট্রাকগুলোর যে সময় লাগে মূলত তারপর থেকেই বিক্রির কার্যক্রম শুরু হয়। সেই অর্থে সকাল ৯টার পর থেকেই মূলত ট্রাক সেল শুরু হয়। ট্রাকে যতক্ষণ পর্যন্ত পণ্য থাকে ততক্ষণই বিক্রি কার্যক্রম চলে। তবে দুপুর ২টা থেকে ৩টার মধ্যে বেশিরভাগ ট্রাকের পণ্য বিক্রি শেষ হয়ে যায়।
সম্প্রতি টিসিবির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, ‘জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সারাদেশে ৩৫০ টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে (ঢাকায়-৫০, চট্টগ্রামে-১৬, অন্যান্য বিভাগীয় শহরে ১০ টি, ও জেলা শহরে ৪ টি করে) টিসিবির পণ্য ১৭ মার্চ থেকে বিক্রয় কার্যক্রম শুরু হয়ে (শুক্র ও শনিবার ব্যতীত) ৩১ মার্চ পর্যন্ত চলার কথা রয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে টিসিবি শুক্রবার (২৭ মার্চ) জানিয়েছে, ৫০ টি নয়- ঢাকায় এখন ৬০টি ট্রাকে পণ্য বিক্রি হচ্ছে। আর শনিবারও এখন পণ্য বিক্রি কার্যক্রম চলছে। আর ৩১ মার্চের পরেও টিসিবির পণ্য বিক্রি কার্যক্রম দীর্ঘায়িত হবে।
নগরীর যেসব স্থানে টিসিবির পণ্য বিক্রির কথা রয়েছে সেগুলো হলো সচিবালয় গেট, যাত্রাবাড়ী, ইত্তেফাক মোড়, শান্তিনগর বাজার, শাহজাহানপুর বাজার, খামারবাড়ী ফার্মগেট, মিরপুর ১৪ কচুক্ষেত, মিরপুর-১ মাজার রোড, শ্যামলী মোড়/ন্যাম গার্ডেন, উত্তরা আব্দুল্লাপুর, ভিকারুননিসা ১০ নং গেইট/ইস্টার্ন হাউজিং গেইট, বেগুনবাড়ী, মতিঝিল সরকারি কলোনি, ভাষানটেক বাজার, মধ্য বাড্ডা, পলাশী/ছাপড়া মসজিদ, জিগাতলা/ধানমন্ডি সরকারি কলোনী, রামপুরা বাজার, মাদারটেক/নন্দীপাড়া/কৃষি ব্যাংকের সামনে, আদাবর/মনসুরাবাদ, বাংলা কলেজ, শাহ সাহেব মাঠ আজিমপুর বটতলা, আশকোনা হাজী ক্যাম্প, বাসাবো বাজার, আজমপুর, ডিসি অফিস, সাতারকুল, বাংলাদেশ ব্যাংক, মিরপুর-২/১২, মাতুয়াল/সিদ্ধিরগঞ্জ, ইসিবি/কালশী, গাবতলী/টেকনিক্যাল, কাপ্তান বাজার, সোয়ারীঘাট/নবাবগঞ্জ সেকশন, বনশ্রী বাজার, কলমিলতা বাজার, কারওয়ানবাজার, দিলকুশা, মেরাদিয়া বাজার, নিপ্পন বটতলা, খিলগাঁও তালতলা, মুগদা, নিউমার্কেট, টঙ্গীবাজার, শনির আখড়া, বছিলা, কামরাঙ্গীর চর লোহার পুল, সারুলিয়া বাজার, গঙ্গী বাজার, ৬০ ফিট ভাঙ্গা মসজিদ, গুলিবাগ খোকন কমিউনিটি সেন্টার, গুলশান ভাটারা বাজার, সাভার বাজার, আনন্দ সিনেমা হল, মগবাজার ফরচুন মার্কেট, হাতিরপুল বাজার, মালিবাগ বাজার, উত্তর বাড্ডা বাজার ও খিলক্ষেত বাজার।