কর্মহীন শ্রমজীবীরা, শুরু হয়নি সরকারি বরাদ্দের টাকা বিতরণ
২৭ মার্চ ২০২০ ১৯:২৫
কুড়িগ্রাম: সরকারি নির্দেশনায় কুড়িগ্রামে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ৩য় দিনের মত শহর ও গ্রামাঞ্চলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। গণ পরিবহন বন্ধ থাকায় রাস্তা-ঘাটও ফাঁকা। শহর ও গ্রামের রাস্তায় দু’একটি রিকশা, অটোরিকশা দেখা গেলেও ভাড়া পাচ্ছেন না চালকরা। এ অবস্থায় বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবীরা।
করোনা সতর্কতায় যানবাহনসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় জেলায় কর্মহীন হয়ে পড়া রিকশাচালক, ভ্যানচালক, ড্রাইভারসহ বিপুল সংখ্যক শ্রমজীবী মানুষের সহায়তার জন্য ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। তবে এখনও শ্রমজীবীদের মাঝে সরকারি বরাদ্দের বিতরণ শুরু হয়নি।
এর আগে, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন বিজ্ঞপ্তি ও মাইকিং করে দোকানপাট, যান চলাচল বন্ধ রাখাসহ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা অব্যাহত রেখেছে। আর এ নির্দেশনা কার্যকর করতে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি কাজ করছে পুলিশ প্রশাসন।
কুড়িগ্রাম শহরের রিকশাচালক আলম মিয়া জানান, একদিন রিকশা নিয়ে বের না হলে খাবার জোটে না। তাই রিকশা নিয়ে সকাল থেকে শহরে ঘুরছি। রাস্তায় লোকজন নাই তাই ভাড়াও নাই। আয় রোজগার করতে না পারলে খাবার জুটবে না।
শহরের আরেক অটোরিকশা চালক শফিকুল বলেন, ‘আমরা গরীব মানুষ প্রতিদিন অটো চালিয়ে চাল-ডাল কিনে খাই। গাড়ি চালানো নিষেধ থাকলেও উপায় নাই। অটো নিয়ে এসেছি কিন্তু কোনো প্যাসেঞ্জার নাই। সব ফাঁকা। এ অবস্থা চলতে থাকলে বউ-বাচ্চা নিয়ে অনাহারে থাকতে হবে।’
এদিকে করোনা সতর্কতায় যানবাহনসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় জেলায় কর্মহীন হয়ে পড়া রিকশাচালক, ভ্যানচালক, ড্রাইভারসহ বিপুল সংখ্যক শ্রমজীবী মানুষের সহায়তার জন্য ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। এই টাকা দিয়ে প্রতি উপজেলায় দুই শতাধিক কর্মহীন শ্রমজীবীর তালিকা করে প্রতি জনকে ১০ কেজি করে চাল, ৫ কেজি আলু, ২ কেজি ডাল, লবণ ও সাবান কিনে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে বরাদ্দের টাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নিকট পাঠিয়েছে জেলা প্রশাসক। শনিবারের মধ্যে তা বিতরণ করা হবে।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, বরাদ্দের টাকা জেলার ৯ উপজেলায় নির্দেশনা দিয়ে পাঠানো হয়েছে। কর্মহীন হয়ে পড়া শ্রমজীবী মানুষের তালিকা করে বিতরণ করতে বলা হয়েছে। যারা রিকশাচালক, অটোরিকশা বা ভ্যান চালকদের কথা বলা হয়েছে। আমাদের কাছে ত্রাণের যে চাল মজুদ আছে সেখান থেকে ১০ কেজি করে চাল এবং বরাদ্দ পাওয়া টাকায় আলু, ডাল, লবণ ও সাবান কিনতে বলা হয়েছে। শনিবারের মধ্যে তালিকা করে এসব পণ্য প্যাকেট করে বিতরণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া কাঁচাবাজার, ওষুধের দোকান ও নিত্যপণ্যের দোকান খোলা থাকলেও সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে সেগুলো বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। ফলে সন্ধ্যা ৭টার পর ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে হাট-বাজার। কাঁচাবাজারগুলোতে আসা পণ্যের গাড়ি ও অন্যান্য যানবাহনে জীবাণুনাশক স্প্রে করছে রেড ক্রিসেন্ট।