‘ধূমপায়ীদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ১৪ গুণ বেশি’
২৭ মার্চ ২০২০ ২১:০৯
চট্টগ্রাম ব্যুরো: প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় বিড়ি-সিগারেটসহ তামাকপণ্যের বিক্রি সীমিত করার দাবি জানিয়েছে বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশন (ইপসা)। বিশ্বখ্যাত এক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের বরাতে সংগঠনটি জানিয়েছে, অধূমপায়ীদের চেয়ে ধূমপায়ীদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ১৪ গুণ বেশি।
ইপসার উপ-পরিচালক নাছিম বাণু এক সংবাদ বিবৃতিতে বলেছেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ধূমপায়ীদের আক্রান্ত হবার ঝুঁকির বিষয়টি সামনে এসেছে। ধূমপান করলে এমনিতেই শ্বাসনালী ও ফুসফুসের কার্যক্ষমতা কমে যায়। এছাড়া দীর্ঘদিন ধূমপানের ফলে উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগের সমস্যা তৈরি হয়। যেহেতু এই ভাইরাসের আক্রমণে অন্যদের তুলনায় বয়স্ক এবং রোগাক্রান্তরা বেশি ঝুঁকিতে পড়েন, তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অন্যদের তুলনায় ধূমপায়ীরা করোনা ভাইরাসের মারাত্মক ঝুঁকিতে আছেন।
‘স্যান ফ্র্যানসিসকোর ইউভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকরা জানিয়েছেন, অধূমপায়ীদের তুলনায় করোনা ভাইরাসের ধূমপায়ীদের আক্রান্ত হওয়ার ও মৃত্যুঝুঁকি ১৪ গুণ বেশি। গত ১৬ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রকাশিত ‘করোনা ভাইরাস সম্পর্কিত প্রশ্নোত্তর’ নামক প্রকাশনায় করোনার ঝুঁকি কমাতে ধূমপান ত্যাগ করার জন্য সুস্পষ্টভাবে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। করোনা ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে যাওয়ার মাধ্যমে ছড়ায়। আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির মাধ্যমে অন্যের শরীরে ভাইরাসটি প্রবেশ করে। এসব কারণে অন্যের সঙ্গে এই সময়ে হাত মেলাতেও নিষেধ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই অন্য কারো সঙ্গে সিগারেট শেয়ার না করার কথাও বলা হয়েছে।’
বিবৃতিতে বলা হয় বাস্তব পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, শুধুমাত্র ধূমপানের কারণেই দেশে অনেকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে এবং বাড়তে পারে মৃত্যুঝুঁকিও। বর্তমানে সরকারের নির্দেশে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস, গণপরিবহণ, শপিংমল বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে এবং সকলকে নিজ নিজ বাসায় থাকতে বলা হয়েছে। যারা ধূমপান করেন, তারা যদি বাসায় পরিবারের অন্য সদস্যদের সামনে ধূমপান করেন তবে পরিবারের অন্য সদস্যদেরও তিনি ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেবেন।
এতে আরও বলা হয়, বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশে এক শলাকা সিগারেট বিক্রয় নিষিদ্ধ হলেও আমাদের দেশে বিভিন্ন জনাসমাগম স্থলে, গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মোড়ে এমনকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশেপাশেও ছোট ছোট দোকানে বিক্রি করা হয় খোলা সিগারেট। খোলা এক শলাকা সিগারেট কিনে পান করার সময় সরাসরি আক্রান্ত হতে পারেন ধূমপায়ীরা। বর্তমানে সরকারের কঠোর পদক্ষেপের কারণে সড়কে মানুষের আনাগোনা কমানো হলেও বন্ধ হয়নি এসব তামাকপন্যের দোকান। এছাড়া শহরের বিভিন্ন এলাকায় অলিগলিতে তামাকপন্য বিক্রয়ও তেমন পরিবর্তিত হয়নি।
এই পরিপ্রেক্ষিতে দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুঝুঁকি প্রতিরোধে সকল ধূমপায়ীদের ধূমপান ত্যাগের অনুরোধ জানিয়েছে ইপসা। একইসঙ্গে বিড়ি-সিগারেট, সাদা পাতা, জর্দা, গুল, ই-সিগারেট বিক্রয় সীমিত করারও দাবি জানিয়েছে।