তপ্ত দুপুরে স্তব্ধ ঢাকা
২৮ মার্চ ২০২০ ১৬:৪৫
ঢাকা: মধ্যদুপুর। রাজধানী ঢাকার সড়কে সুনসান নীরবতা। জনমানবের ভিড় নেই, নেই যানবাহন। নেই কোনো কোলাহল। নীরব নিস্তব্ধতায় দিন কাটছে ঢাকাবাসীর। তবে ফাঁকা রাজপথ যেন চৈত্রের গরমে আরও বেশি উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।
শনিবার (২৮ মার্চ) রাজধানীর ঢাকার বেশ কয়েকটি জায়গা ঘুরে একই দৃশ্য দেখে মেলে। রাস্তায় নেই গাড়ি, ফুটপাতে নেই হকারদের হাঁকডাক। বন্ধ রয়েছে শপিংমল, হোটেল রেস্টুরেন্ট, সরকারি-বেসরকারি সব অফিস আদালত।
সরেজমিনে গুলিস্তান, পল্টন, দোয়েল চত্বর, শাহবাগ, ফার্মগেট, হাতিরঝিল, রামপুরা, গুলশান, বাড্ডা এলাকা ঘুরে দেখা যায় গণপরিবহন সম্পূর্ণ বন্ধ। অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি কাজে নিয়োজিত কিছু গাড়ি ছাড়া রাস্তাঘাটে। অন্য কোনো যানবাহন নেই বললেই চলে। রাস্তার মোড়ে নেই ট্রাফিক পুলিশ।
অতি জরুরি প্রয়োজনে কেউ বের হলেও দ্রুত কাজ শেষে ফিরছেন ঘরে। এমনিতেই করোনা আতঙ্ক তার ওপর চৈত্রের প্রখর রোদ। তবে জীবিকার তাগিদে বের হয়েছেন রিকশাচালকসহ কিছু শ্রমজীবী মানুষ। তরিতরকারি ও শাকসবজি বিক্রেতারা ভ্যানে করে ঘুরছেন এলাকার অলিগলি।
এ সময় কথা হয় তরকারি বিক্রেতা নুরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, সংসার চালাতে কিছু আয় রোজগার তো করতে হবে। ঘরে বসে থাকলে সংসার চলবে কেমনে।
তিনি জানান, ভোরে কারওয়ান বাজার থেকে তরকারি কিনে এনে ভ্যানে করে বের হয়েছেন। তরকারি বিক্রি করে যা আয় হবে তা দিয়ে কোনোরকম চলতে পারলেই হলো। তবে অন্যান্য স্বাভাবিক দিনের থেকে বেচাকেনা অনেক কম বলেও তিনি জানান।
রিকশাচালক জসিম হাওলাদার জানান, বাস গাড়ি তো বন্ধ, তারপরেও অনেকেই জরুরি প্রয়োজনে বের হন। আমরাও বের হয়েছি। মালিকের জমা দিয়ে যদি কিছু থাকে তা দিয়ে পকেট খরচ তো হবে। তবে কাজ ছাড়াও কিছু মানুষকে রাস্তার পাশে বসে থাকতে দেখা যায়। জানতে চাইলে তারা জানান, অনেকে সাহায্য নিয়ে আসে। রাস্তায় থাকলে কিছু সাহায্য পাওয়া যায়। ঘরে বসে থাকলে তো না খেয়ে মরতে হবে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সরকার আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি ছুটির ঘোষণা করেছে। গণপরিবহনসহ সব ধরনের পরিবহন চলাচল বন্ধ রেখেছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাজধানীসহ দেশের মানুষকে নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করার নির্দেশ দিয়েছে।
এ অবস্থায় রাজধানীবাসী ঘরে বসেই নিজেদেরকে কোয়ারেনটাইনে রেখেছেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে কেউ করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হননি। ফলে দেশে এই ভাইরাসে আক্রান্ত মোট ব্যক্তির সংখ্যা ৪৮ থেকে আর বাড়েনি। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত আরও চার জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। ফলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মোট ৪৮ জনের মধ্যে ১৫ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।
চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া মহামারি করোনা কোভিড ১৯ আক্রান্ত হয়ে হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে। এর থেকে বাঁচতে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশই লকডাউন ঘোষণা করেছে