Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভাগ্য গণনাকারীরাও জানতেন না পথে বসতে হবে


৩০ মার্চ ২০২০ ০৭:৫৯

ঢাকা: রাজধানী ঢাকায় জ্যোতিষীরাও আঁচ করতে করতে পারেননি, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে তাদেরও চেম্বার বন্ধ করে দিয়ে বাড়িতে বসে থাকতে হবে। যারা কি না মানুষের ভাগ্য গণনা করেন, তারা নিজেরাই বোঝেননি তাদের ভাগ্যে সামনে কী আছে!

সারাবাংলার সঙ্গে আলাপকালে একাধিক জ্যোতিষী জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে তারাও পথে বসে গিয়েছেন। অথচ এ বিষয়টি সেভাবে বুঝতেই পারেননি। কেউ কেউ বলছেন, গোটা বিশ্বের সামনেই একটি ‘বড়’ সমস্যা আসবে বলে অনুমান করতে পেরেছিলেন তারা। তবে সেটি যে এভাবে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বেই ছড়িয়ে পড়বে, তা তাদের ধারণার বাইরে ছিল।

জ্যোতিষী ডা. এন কে হালদার সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি এখন গ্রামের বাড়িতে। গত এক সপ্তাহ ধরে আমার চেম্বার বন্ধ।’

করোনাভাইরাস বিষয়ে ওই জ্যোতিষী বলেন, ‘আমরা আগে থেকেই জানি, একটি বিপদ আসবে। তবে সেটি যে করোনাভাইরাস, তা বুঝতে পারিনি। চারদিকে দুর্নীতি, রাহাজানি। এটি তারই একটি প্রতিফলন।’

জ্যোতিষী রামপ্রসাদ ভট্টাচার্য সারাবাংলাকে জানান, বিশ্বে একটি সমস্যা আসবে, সেটি জানতেন। তবে সেটি যে করোনাভাইরাস, তা জানতেন না। তিনি বলেন, ‘এ করোনা আরও প্রায় ২-৩ মাস বাংলাদেশে রাজত্ব করবে। ঢাকা শহরে মানুষ নেই। আমাদের চেম্বারও বন্ধ। আমরা এখন বাড়িতে। বলা যায়, এভাবে চলতে থাকলে আমরাও পথে বসে যাব। ফলে করোনায় বাংলাদেশের অবস্থা খারাপ যাবে।’

জ্যোতিষী শাস্ত্রী নরেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘করোনা নতুন এক রোগ, যার ওষুধ এখনও আবিষ্কার হয়নি। এটি আসবে কারও ধারণা ছিল না। আমাদেরও না। আমাদের চেম্বারে এখন মানুষের সেইভাবে আনাগোনা নেই। আমাদেরও ধাক্কা লেগেছে। বিষয়টি নিয়ে আমরাও চিন্তিত। শুধু আমরা না, পুরো বিশ্ব চিন্তিত।’

নিজে সমস্যায় পড়লেও করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্য দেশগুলোর মতো করোনাভাইরাস বড় ক্ষতির কারণ হবে না বলে মনে করেন আরেক জ্যোতিষী ড. কে সি পাল। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস বিশ্বে মহামারি আকার ধারণ করেছে। তবে বাংলাদেশে মহামারি আকার ধারণ করবে না। প্রাণহানি কম হবে। আতঙ্ক বেশি দেখা দেবে।’

ওই জ্যোতিষী বলেন, ‘আমাদের চেম্বার এখন ফাঁকা যাচ্ছে। কোনো মানুষ আসছে না। কারণ ঢাকা শহরে লোকই তো নেই। তাই আমরাও সমস্যাই পড়ব।’

বাংলাদেশ জ্যোতিষী সোসাইটির মহাপরিচালক জ্যোতিষী ইকবাল মাহমুদ বলেন, করোনার কারণে আমাদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতক ক্ষতি হবে। করোনার প্রভাব কমবে জুনে। বড় কোনো ক্ষতি না হলেও অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের চেম্বার তো ফাঁকা। আমরাও তো ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছিই।’

যে প্রাণঘাতী ভাইরাসের কারণে খোদ জ্যোতিষীদেরও এই পরিস্থিতি, সেই ভাইরাসে এ পর্যন্ত দেশে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৮ জন। এর মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচ জন। ১৫ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। বাকি ২৮ জন এখনো চিকিৎসাধীন। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) তথ্য অনুযায়ী, সবশেষ দুই দিনে এই ভাইরাসে নতুন করে কেউ আক্রান্ত হননি।

এদিকে, এই ভাইরাসের কারণে এরই মধ্যে আকাশপথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। কেবল আন্তর্জাতিক ফ্লাইটই নয়, দেশের অভ্যন্তরীণ সব ফ্লাইটও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দেশের ভেতরে সড়ক ও নৌপথেও গণপরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত চলছে সাধারণ ছুটি।

গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৩৩ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে। আক্রান্ত হয়েছেন সাত লাখেরও বেশি মানুষ।

করোনাভাইরাস জ্যোতিষী ভাগ্য গণনা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর