গণমাধ্যমের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজের দাবি এডিটরস গিল্ডের
২৯ মার্চ ২০২০ ২৩:৪৩
ঢাকা: করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গণমাধ্যমগুলোর জন্য জরুরিভিত্তিতে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে গণমাধ্যম সম্পাদকদের সংগঠন এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশ। একইসঙ্গে টিভি চ্যানেলগুলোর স্যাটেলাইট ফি তিন মাসের জন্য স্থগিত রাখা, গণমাধ্যমে বেসরকারি খাতের বকেয়া বিল আদায়ে সহায়তাসহ ছয়টি দাবি জানানো হয়েছে সংগঠনের পক্ষ থেকে।
রোববার (২৯ মার্চ) এডিটরস গিল্ডের সভাপতি মোজাম্মেল বাবুর সই এক বিবৃতিতে এসব দাবি-দাওয়া তুলে ধরা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ নামের এক বিপর্যয়ে বাংলাদেশের মানুষ আজ বিপর্যস্ত। উদ্ভূত বাস্তবতায় ঝুঁকি এড়াতে সরকার নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। আমরা একে স্বাগত জানাই। এর পাশাপাশি অর্থনৈতিক ঝুঁকি এড়াতে সরকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, যা অর্থনীতিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে আশা করি। কিন্তু আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি, করোনাভাইরাসের প্রভাবে এক নজিরবিহীন সংকটের মুখোমুখি গণমাধ্যম। টানা ১০ দিনের ছুটিতে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় পত্রিকার বিলি ও বিতরণ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অনলাইন ও সম্প্রচারমাধ্যম ঝুঁকি নিয়ে অফিস খোলা রেখে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু বিজ্ঞাপন কমছে দ্রুতগতিতে। টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে বিজ্ঞাপন বিলে কালেকশন একদম বন্ধ হয়ে গেছে। কোনা কোনো সংবাদপত্র পৃষ্ঠা সংখ্যা কমিয়ে, কেউ বা প্রকাশনা বন্ধ করে অনলাইনে সংবাদ প্রকাশ করে টিকে থাকার চেষ্টা করছে। মূলধারার গণমাধ্যম তথা সংবাদপত্র, টেলিভিশন ও বেতার এবং প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এগিয়ে চলা অনলাইনগুলো শুধু মানুষকে তথ্যসেবাই দিচ্ছে না, অনেক সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত গুজব ও অসত্য তথ্য প্রচারকেও মোকাবিলা করে চলেছে। আমরা মনে করি, মহামারি সংকটে প্রকৃত স্বাস্থ্যসেবা যেমন জরুরি, তেমনি সত্যনিষ্ঠ তথ্যসেবাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বিবৃতিতে গণমাধ্যম সম্পাদকরা বলেন, গণমাধ্যম উদ্যোক্তাদের ভাবতে হচ্ছে, চলমান সংকট দীর্ঘ হলে তারা তাদের সাংবাদিক ও কর্মচারীদের বেতন দেবেন কোথা থেকে? সংকটের সময় নিজস্ব সঞ্চয় থেকে সাংবাদিক, কর্মচারীদের মজুরি প্রদানসহ তথ্য সংগ্রহ ও পরিবেশন এবং প্রাতিষ্ঠানিক ব্যয় নির্বাহ কঠিন হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের গণমাধ্যম অতীতে অনেক বড় বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে। তবে এবারের মতো বৈরী পরিস্থিতি সাম্প্রতিককালে আর আসেনি। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে ছয়টি প্রত্যাশার কথা বিবৃতিতে তুলে ধরেছে সম্পাদকদের এই সংগঠন।
এগুলো হলো— গণমাধ্যমের জন্য জরুরিভিত্তিতে একটি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা; বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে পাওনা সংবাদপত্র, টেলিভিশন, রেডিওসহ সব ধরনের গণমাধ্যমের বিজ্ঞাপনের বকেয়া বিল পরিশোধ করার ব্যবস্থা করা; সংবাদপত্র, টেলিভিশন, অনলাইন, রেডিওসহ সব গণমাধ্যমে বেসরকারি খাতের বকেয়া বিল আদায়ে সহায়তা প্রদান; টেলিভিশনের জন্য স্যাটেলাইট ফি তিন মাসের জন্য স্থগিত রাখা; বিজ্ঞাপনের আয়ের ওপর থেকে সব ধরনের ভ্যাট মওকুফ করা; এবং করোনা ঝুঁকিতে থাকা গণমাধ্যমকর্মীদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা।
এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশ এডিটরস গিল্প করোনাভাইরাস প্রণোদনা প্যাকেজ প্রণোদনা প্যাকেজের দাবি