করোনার চিকিৎসা ৮ হাসপাতালে, ৫ ল্যাবে চলছে পরীক্ষা
৩০ মার্চ ২০২০ ২৩:১৫
ঢাকা: নভেল করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য এখন পর্যন্ত ঢাকায় আটটি হাসপাতাল প্রস্তুত করেছে সরকার। এছাড়াও করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্তের জন্য পরীক্ষার ল্যাবের পরিমাণও বাড়ানো হয়েছে। পাঁচটি ল্যাবে চলছে এই ভাইরাস শনাক্তের পরীক্ষা।
স্বাস্থ্য অধিদফতর এবং রোগতত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
৫ কেন্দ্রে পরীক্ষা
নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে থাকার সঙ্গেই এই ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত করার পরীক্ষা নিয়েও ওঠে জোর আলোচনা। পরীক্ষার জন্য পর্যাপ্ত কিট এবং ল্যাব রয়েছে কি না, তা নিয়ে ওঠে প্রশ্ন। এই পরীক্ষা কেবল আইইডিসিআরে সীমাবদ্ধ রাখায় সে প্রশ্ন আরও জোরালো হয়ে উঠেছে। তবে এই ল্যাবের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। সোমবার (৩০ মার্চ) পর্যন্ত পাওয়া তথ্য বলছে, এখন অন্তত পাঁচটি ল্যাবে চলছে করোনার পরীক্ষা। এর বাইরেও দেশের অন্তত আরও ছয়টি স্থানে খুব শিগগিরই করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
করোনা: লাইভ আপডেট
আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি দেব্রিনা ফ্লোরা সারাবাংলাকে বলেন, বাংলাদেশের সবখানেই খুব দ্রুত পিসিআর টেস্ট শুরু হবে। তবে আপাতত পাঁচটি স্থানে এই পরীক্ষা চলছে। এর মধ্যে ঢাকার চারটি প্রতিষ্ঠান হলো — আইইডিসিআর, আইসিডিডিআরবি, জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও শিশু হাসপাতাল। আর ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজ (বিআইটিআইডি) সেন্টারেও করোনাভাইরাস শনাক্তের পরীক্ষা করা হচ্ছে।
ডা. ফ্লোরা আরও বলেন, আমরা পর্যায়ক্রমে দেশের আরও বিভিন্ন স্থানে করোনাভাইরাস শনাক্তের পরীক্ষার ব্যবস্থা করব। সারাদেশের টেকনোলজিস্টদের প্রশিক্ষণও দিচ্ছি। তারা যথাযথভাবে নমুনা সংগ্রহ করবে। তারপর এলাকাগুলোতেই পরীক্ষা হবে।
সোমবার নভেল করোনাভাইরাস নিয়ে আয়োজিত স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য এমআইএস পরিচালক ডা. মোহাম্মাদ হাবিবুর রহমানও ঢাকার বাইরে পিসিআর টেস্ট ছড়িয়ে দেওয়ার তথ্য জানান। তিনি বলেন, ময়মনসিংহ ও রংপুর মেডিকেল কলেজে সম্ভবত আজকেই পিসিআর টেস্ট শুরু করতে পারব। রাজশাহীতে দুয়েকদিনের মধ্যেই শুরু করব। খুলনা, বরিশাল ও সিলেটে আশা করছি সপ্তাহখানেকের মধ্যেই পিসিআর টেস্ট শুরু করা যাবে।
আরও পড়ুন- আরও ১ জন করোনা রোগী শনাক্ত, মোট আক্রান্ত ৪৯
ডা. হাবিবুর আরও বলেন, আমাদের সারাদেশের মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে স্যাম্পল সংগ্রহের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তারা যথাযথভাবে নমুনা সংগ্রহ করে সেন্টারগুলোতে পাঠাবেন।
এর বাইরে অবশ্য কক্সবাজারেও করোনা শনাক্তের জন্য একটি পরীক্ষাকেন্দ্রও প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
৮ হাসপাতালে চিকিৎসা
করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য এরই মধ্যে ঢাকার আটটি হাসপাতালকে প্রস্তুত করা হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. আমিনুল হাসান সারাবাংলাকে বলেন, আমরা আটটি হাসপাতালকে এরই মধ্যে প্রস্তুত করে ফেলেছি। শিগগিরই আরও বেশকিছু হাসপাতালকে আমরা প্রস্তুত করছি। সেগুলো প্রস্তুত হলে আমরা জানিয়ে দেবো।
যে আটটি হাসপাতল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে, এর মধ্যে সরকারি হাসপাতাল পাঁচটি। সেগুলো হলো— উত্তরার বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল (২০০ শয্যা), শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল (২৫০ শয্যা), কমলাপুর রেলওয়ে হাসপাতাল (১০০ শয্যা), বাবুবাজারের মহানগর জেনারেল হাসপাতাল (১৫০ শয্যা), মিরপুর লালকুটি হাসপাতাল (২০০ শয্যা)। সরকারি এই পাঁচ হাসপাতালে মোট শয্যা সংখ্যা ৯শ।
আরও পড়ুন- করোনায় ডেঙ্গুর কথা যেন ভুলে না যাই: সেব্রিনা ফ্লোরা
এর বাইরে যে তিনটি বেসরকারি হাসপাতাল কোভিড-১৯ রোগীদের সেবায় প্রস্তুত সেগুলো হলো— উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতাল, মিরপুরের রিজেন্ট হাসপাতাল ও যাত্রাবাড়ীর সাজিদা ফাউন্ডেশন। প্রতিটি হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা ৫০। অর্থাৎ বেসরকারি তিন হাসপাতালে আরও ১৫০ শয্যা প্রস্তুত রয়েছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, আপাতত এক হাজার ৫০ বেডের প্রস্তুতি থাকলেও এই সংখ্যা আরও বাড়ানোর সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা তাদের রয়েছে।
আইইডিসিআর করোনয় আক্রান্তদের চিকিৎসা করোনাভাইরাস করোনায় আক্রান্ত কোভিড-১৯ কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল মহানগর জেনারেল হাসপাতাল রিজেন্ট হাসপাতাল রেলওয়ে হাসপাতাল লালকুটি হাসপাতাল শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল সাজিদা ফাউন্ডেশন