কোভিড-১৯ মোকাবিলায় চীন পাশে থাকবে, রাষ্ট্রদূতের চিঠি
৩১ মার্চ ২০২০ ০৩:২০
ঢাকা: নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মোকাবিলায় বাংলাদেশের পাশে থাকবে চীন। একইসঙ্গে এই ভাইরাসের সংক্রমণের ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে জনস্বাস্থ্যের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সব ধরনের সাহায্যও দেবে দেশটি। এছাড়াও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও সরবরাহ ব্যবস্থা চালু এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নেও তারা বাংলাদেশের পাশে থাকবে।
সোমবার (৩০ মার্চ) ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিংয়ের সেই করা এক খোলা চিঠিতে এ কথা জানানো হয়।
চিঠিতে বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস কী পরিস্থিতি তৈরি করেছে, সেটি তুলে ধরে চীনের প্রতি বিভিন্ন দেশের সহযোগিতার প্রসঙ্গটি উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।
বাংলাদেশের সহযোগিতার বিষয় উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে চীনের জনগণের প্রতি বাংলাদেশের জনগণের জোরালো সমর্থন আমাদের মুগ্ধ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহমর্মিতা ও সমর্থন জানিয়ে চীনের প্রেসিডেন্টের শি জিনপিংকে চিঠি লিখেছেন। বাংলাদেশের সরকার ও নাগরিক সমাজ চীনের জনগণের জন্য নানা ধরনের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসামগ্রী পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশের ধর্মীয় উপাসনালয়ে চীনের জন্য বিশেষ প্রার্থনা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রমাণ করেছে, তারা আমাদের কত বড় বন্ধু। কারণ বিপদের বন্ধুই চিরদিনের বন্ধু।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্রান্তিলগ্নে চীনের দূতাবাসের বাংলাদেশের সামর্থ্যের ব্যাপারে পূর্ণ আস্থা রয়েছে এবং এখানে অবস্থানরত চীনের জনগণ বাংলাদেশের জনগণের প্রতি সহমর্মিতা জানাচ্ছে। অভিন্ন এই শত্রুর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের পাশে থাকবে চীন।
লি জিমিং বলেন, আমরা জানাতে চাই, এই মহামারির সময় এবং মহামারি শেষেও বাংলাদেশের সব প্রকল্প বাস্তবায়ন নিশ্চিত করব। করোনা প্রতিরোধে বাংলাদেশের যেকোনো ধরনের সিদ্ধান্তে চীন দূতাবাস পাশে থাকবে।
চিঠিতে বলা হয়, বর্তমানে সারাবিশ্বের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশেও করোনাভাইরাস বিস্তৃত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত সংবাদে বাংলাদেশে ৪৯ জন এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আমরা গভীরভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পৃক্ত। করোনাভাইরাস সারাবিশ্বের মানুষের নিরাপত্তার জন্যই হুমকি। ২৯ মার্চ পর্যন্ত এ ভাইরাস বিশ্বের ১৯৯টি দেশে বিস্তৃত হয়েছে। প্রতিটি দেশই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছে।
রাষ্ট্রদূত চিঠিতে বৈশ্বিক পরিস্থিতি উল্লেখ করে বলেন, মহামারিটি এখনো বিভিন্ন দেশের সীমানা ছাড়িয়ে যাওয়া অব্যাহত রেখেছে। আর সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে ভয়াবহ চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে পৃথিবী। জি-২০ দেশের নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এ ধরনের ব্যাপক একটি সংক্রামক ব্যাধির বিরুদ্ধে লড়াইতে মানবতার জয়ের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের অপরিহার্যতার কথা উল্লেখ করেছেন।
চিঠিতে জানানো হয়, শুধু বাংলাদেশ নয়, করোনার এই ক্রান্তিকালে চীন এরই মাঝে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে (ডাব্লিউএইচও) ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়েছে। এছাড়া বিশ্বের ৮৯টি দেশে মেডিক্যাল সরঞ্জাম দিয়ে তারা সহায়তা করছে।
বাংলাদেশে করোনা মোকাবিলায় চীন ৪০ হাজার ৫০০ টেস্ট কিট, ১৫ হাজার সার্জিক্যল মাস্ক, তিন লাখ মেডিক্যাল মাস্ক, ১০ হাজার গাউন ও এক হাজার থার্মোমিটার সহায়তা দিয়েছে বলে রাষ্ট্রদূত চিঠিতে উল্লেখ করেন।
চিঠিতে আরও জানানো হয়, চীন দূতাবাস ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চীনের মেডিক্যাল এক্সপার্টদের সঙ্গে বাংলাদেশের মেডিক্যাল এক্সপার্টদের মতবিনিময়েরও ব্যবস্থা করেছে।
করোনা মোকাবিলা করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ চীনা রাষ্ট্রদূত পাশে থাকবে চীন লি জিমিং