Tuesday 19 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পোল্ট্রি খাতের ক্ষতি দেড় হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা


৩১ মার্চ ২০২০ ২০:১৫

ঢাকা: করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশীয় পোল্ট্রি শিল্পে ২০ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ১৬ দিনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১১৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে জানিয়েছে পোল্ট্রি শিল্পের কেন্দ্রীয় সংগঠন ‘বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি)। ৪ এপ্রিলের পর আরও এক সপ্তাহ বর্তমান পরিস্থিতি চলতে থাকলে ক্ষতির পরিমাণ দেড় হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংগঠনটির নেতারা।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিপিআইসিসি এ তথ্য জানিয়েছে। সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাজারে পোল্ট্রি পণ্যের দরপতন এবং উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে না পারার কারণে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ছেন সাধারণ খামারি থেকে শুরু করে শিল্প উদ্যোক্তারা। এছাড়া চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত দেশের একমাত্র পিআরটিসি ল্যাব বন্ধ থাকায় বন্দর থেকে ছাড় করানো যাচ্ছে না পোল্ট্রি শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামাল। এ অবস্থা চলতে থাকলে থমকে যেতে পারে দেশীয় পোল্ট্রি শিল্প।

বিজ্ঞাপন

বিপিআইসিসি’র সভাপতি মসিউর রহমান বলেন, করোনা সতর্কতায় জনসমাগম ঠেকাতে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কারণে পাইকারি বাজার থেকে শুরু করে খুচরা বাজার-হাটে ক্রেতাদের উপস্থিতি ব্যাপক হারে কমেছে। ব্রয়লার মুরগি, একদিন বয়সী বাচ্চা ও ডিমের দাম ব্যাপক পরিমাণে কমেছে। পোল্ট্রি ও ফিশ ফিডের উৎপাদন প্রায় ৭০-৭৫ শতাংশ কমেছে। একদিন বয়সী মুরগির বাচ্চার উৎপাদন খরচ ৩৫ টাকা হলেও দাম নেমে এসেছে মাত্র ১ টাকায়। এছাড়া পোল্ট্রি প্রসেসড পণ্যের বিক্রি ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত কমেছি।

মসিউর বলেন, প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১১৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। আরও এক সপ্তাহ এ অবস্থা চললে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছাড়াবে ১৬৫০ কোটি টাকা। এরপরও অবস্থার উন্নতি না হলে প্রতিদিন একশ কোটি টাকার ক্ষতি হবে আমাদের। আর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও বাজার স্বাভাবিক হতে অন্তত এক মাস লাগবে।

এদিকে, ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (বিএবি) সভাপতি রকিবুর রহমান টুটুল জানান, করোনার প্রভাবে ব্রিডার্স ও হ্যাচারি ইন্ডাস্ট্রিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অন্তত ৪৫৮ কোটি টাকা। ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ফিআব) সভাপতি এহতেশাম বি. শাহজাহান জানিয়েছেন, এ শিল্পে ক্ষতির পরিমাণ ৭৫ কোটি টাকারও বেশি।

এ পরিস্থিতিতে পোল্ট্রি শিল্পকে ফের স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসার জন্য সরকারের কাছ থেকে ছয়টি সহায়তা চাওয়া হয়েছে— পোল্ট্রি শিল্পের প্রতিটি শাখার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য আগামী ছয় মাসের ব্যাংক সুদ মওকুফ; বন্দরে আটকে পড়া কাঁচামালের কারণে জমা হওয়া পোর্ট ডেমারেজ মওকুফ; সাধারণ মানুষের জন্য সরকার ঘোষিত খাদ্য সহায়তার অংশ হিসেবে ডিম ও মুরগির মাংস বিতরণ; পোল্ট্রি’র সবগুলো খাতের জন্য ৩০ শতাংশ আর্থিক প্রণোদনা প্রদান; এবং ‘কোভিড-১৯’ বিষয়ক সচেতনতার অংশ হিসেবে সরকারি ও বেসরকারি গণমাধ্যমে ডিম, দুধ, মাছ, মাংসের পক্ষে ইতিবাচক প্রচারণা চালানো।

সংগঠনটির পক্ষ থেকে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের বলিষ্ঠ পদক্ষেপের প্রশংসা করা হয়। সমন্বিত পদক্ষেপের মাধ্যমে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে দেশকে জীবাণুমুক্ত করা সম্ভব হবে বলেও আশাবাদ জানানো হয়।

করোনার প্রভাব ক্ষয়ক্ষতি পোল্ট্রি পোল্ট্রি খাত

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর