পিপিই’র পূর্ণাঙ্গতা নিয়ে প্রশ্ন, হিসাবেও গরমিল
২ এপ্রিল ২০২০ ১৫:২৬
ঢাকা: নভেল করোনাভাইরাস তথা কোভিড-১৯ রোগের বিস্তার ঠেকাতে অন্যতম ভূমিকা রাখছেন চিকিৎসকরা। যারা সংক্রামক করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সুরক্ষা দিয়ে চলেছেন, তাদের সুরক্ষার কী হবে? চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে যুক্ত সবার সুরক্ষার প্রসঙ্গেই আলোচনায় এসেছে পারসোনাল প্রোটেক্টিভ ইক্যুইপমেন্ট (পিপিই)। পর্যাপ্ত ও মানসম্মত পিপিই ছাড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার অর্থ যে তাদের বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া— তা নিয়ে প্রশ্ন নেই কারও। বাংলাদেশের চিকিৎসকরা পর্যাপ্ত এবং মানসম্মত পিপিই পাচ্ছেন কি না, তা নিয়েই রয়েছে প্রশ্ন। আবার পিপিই’র সংখ্যা নিয়ে খোদ স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাবেই রয়েছে গরমিল। তাতে করে প্রকৃতপক্ষ কতগুলো পিপিই পৌঁছাচ্ছে চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছে, তা নিয়েও প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
যেকোনো ধরনের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা পেতে চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মী এবং সংশ্লিষ্টরা যেসব উপকরণ ব্যবহার করে থাকেন, তাকেই পিপিই বলা হয়। এসব উপকরণের মধ্যে রয়েছে মেডিকেল মাস্ক, গাউন, গগলস বা ফেস শিল্প, গ্লাভস থেকে শুরু করে জুতা পর্যন্ত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ থেকে পূর্ণ সুরক্ষা পেতে যে পিপিই প্রয়োজন তাতে হাসপাতালে কাজের কাপড় ও রাবার বুট পরার পরে পরতে হবে ডিস্পোজেবল সার্জিক্যাল ক্যাপ (ডাবল লেয়ার), প্রোটেক্টিভ মাস্কস (N95), ডিস্পোজেবল ইনার নাইট্রাইল/ল্যাটেক্স গ্লাভস, কাভার অল বা পা থেকে মাথা ডাকা গ্লাভস, কাভার অল ফুট কাভার (বিকল্প ওয়াটারপ্রুফ বুট কাভার) ও দ্বিতীয় ল্যাটেক্স রাবার গ্লাভস, যা কাভার অলের ওপর দিয়ে ফোরআর্ম মাঝ বরাবর ঢেকে রাখবে।
কাজের ধরনের দিক থেকে সবার জন্য এমন পিপিই প্রয়োজন হবে না। তবে যারা সরাসরি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় নিবিড়ভাবে জড়িয়ে থাকবেন, তাদের জন্য পূর্ণাঙ্গ পিপিই দেওয়ার কথাই বলে আসছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ অন্যরা। আর সেক্ষেত্রে এসব উপকরণের একটিও যদি বাদ পড়ে যায়, তাকে পূর্ণাঙ্গ পিপিই বলা যায় না।
বর্তমানে দেশের হাসপাতালগুলোতে যেসব পিপিই সরবরাহ করা হচ্ছে, তা কতটুকু পূর্ণাঙ্গ পিপিই, তা নিয়ে রয়েছে বড় প্রশ্ন। এর বাইরে কী পরিমাণ পিপিই বিতরণ করা হচ্ছে সারাদেশে, সে সংখ্যা নিয়ে গরমিল রয়েছে খোদ স্বাস্থ্য অধিদফতরেই।
১ এপ্রিল অধিদফতর থেকে যে প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, তিন লাখ ৩৯ হাজার ৫৪০ পিস পিপিই এ পর্যন্ত বিতরণ করা হয়েছে। পিপিই’র বর্তমান মজুত ৫৩ হাজার ৯০ পিস। এর আগে, ৩০ মার্চ করোনাভাইরাস নিয়ে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে অধিদফতরের এমআইএস পরিচালক হাবিবুর রহমান জানান, তিন লাখ ২৫ হাজার ৭০টি পিপিই বিতরণ করা হয়েছে। হাতে আছে আরও প্রায় ৪২ হাজার পিপিই। এর আগে, ২৬ মার্চ রাত ১০টা পর্যন্ত বিভিন্ন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে তিন লাখ তিন হাজার পিস পিপিই সরবরাহের তথ্য জানায় কোভিড-১৯ মোকাবিলায় গঠিত কন্ট্রোল রুম। তবে এসব পিপিই আদৌ পূর্ণাঙ্গ পিপিই কি না, সে বিষয়টি কোথাও উল্লেখ করা হচ্ছে না।
তবে অধিদফতরেরই কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ার (সিবিএইচসি) থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, ৪২৩টি উপজেলায় ১০টি করে চার হাজার ২৩০টি ও জেলা পর্যায়ে তিন হাজার ২০০টি পূর্ণাঙ্গ পিপিই দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ মাঠ পর্যায়ে পূর্ণাঙ্গ পিপিই সরবরাহ করা হয়েছে মোট সাত হাজার ৪৩০টি।
পিপিই নিয়ে হিসাবে গরমিল দেখা যায় অধিদফতরের কোভিড-১৯ কন্ট্রোল রুমের প্রতিবেদনেও। ২২ মার্চ স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানার সই করা প্রতিবেদনে দেখা যায়, সিএমএসডি থেকে এক্সামিনেশন গ্লাভস বিতরণ করা হয়েছে ৯৫ হাজার ৫০০ পিস, বিতরণের পরে মজুত ১ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ পিস। নন-ওভেন ফেস মাস্ক বিতরণ করা হয়েছে ৬৬ হাজার ৭৪৩ পিস, বিতরণের পরে মজুত ৫৭ হাজার ৪৩৯ পিসি। পারসোনাল প্রটেকশন মাস্কের মোট মজুত ৪২ হাজার ৯০০ পিস, বিতরণ হয়নি। মপ (MOP) ক্যাপের মজুত ৫০ হাজার, বিতরণ ৪২ হাজার ১০০। পারসোনাল প্রটেকশন ক্যাপের মজুত ৫ হাজার, বিতরণ হয়নি। নন-ওভেন শু কাভার বিতরণ করা হয়েছিল ৪৩ হাজার ৬০০, বিতরণের পরে মজুত ছয় হাজার ৪০০। পারসোনাল প্রটেকশন শু কাভারের মজুত ছয় হাজার, বিতরণ হয়নি। প্রটেকটিভ কাভার অল ও সার্জিক্যাল ফেস মাস্ক বিতরণ করা হয় ১৪ হাজার ৯৪৩ পিস, বিতরণের পরে মজুত ছয় হাজার ১৩৯ পিস। কম্বো সার্জিক্যাল প্রটেকশন ড্রেস বিতরণ করা হয় দুই লাখ ৪০ হাজার পিস, বিতরণের পরে মজুত এক লাখ ৫১ হাজার ৮২ পিস। গাউন বিতরণ করা হয় পাঁচ হাজার ২৩০ পিস, বিতরণের পরে মজুত ১০ হাজার ৭৭০ পিস। আই প্রটেকটিভ সেফটি গগলস গ্লাস বিতরণ করা হয় সাত হাজার ৪৭০ পিস, বিতরণের পরে মজুত ১২ হাজার ৫৩০ পিস।
পরদিন ২৩ মার্চ একই কর্মকর্তার সই করা আরেক প্রতিবেদনে প্রায় একই ধরনের তথ্য দেখা যায়। সেদিনের রিপোর্টে মপ ক্যাপ ও পারসোনাল প্রটেকশন ক্যাপের সংখ্যাকে সম্মিলিতভাবে দেখানো হয়। একইসঙ্গে নন-ওভেন ফেস মাস্ক ও পারসোনাল প্রটেকশন মাস্কের সংখ্যা সম্মিলিতভাবে দেখানো হয় নন-ওভেন ফেস মাস্ক হিসেবে। নন-ওভেন শু কাভার ও পারসোনাল প্রটেকশন শু কাভারকে দেখানো হয় শু কাভার হিসেবে। এদিন কম্বো সার্জিক্যাল প্রটেকশন ড্রেসের মোট মজুত দেখানো হয় মাত্র ৮৪০ পিস, যা আগের দিনের বিতরণের পরেও মজুত দেখানো হয়েছিল এক লাখ ৫১ হাজার ৮২ পিস। অর্থাৎ প্রায় দেড় লাখ কম্বো ড্রেসের কোনো হিসাব এদিনের তালিকায় পাওয়া যায়নি।
২৪ মার্চের রিপোর্টেও প্রায় একই রকমের তথ্য দেখানো হয় আলাদা আলাদাভাবে। তবে ২৫ ও ২৬ মার্চের রিপোর্টে জানানো হয় যথাক্রমে ২ লাখ ৯১ হাজার পিস পিপিই সরবরাহ করার কথা। আর স্বাস্থ্য অধিদফতরের কোভিড-১৯ মোকাবিলায় গঠিত কন্ট্রোল রুমের ২৭ মার্চের প্রতিবেদনে সিএমএসডি’র সূত্রে জানানো হয় ২৬ তারিখ রাত ১০টা পর্যন্ত তিন লাখ তিন হাজার পিপিই সরবরাহ করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাবে যে প্রায় সাড়ে তিন লাখ পিপিই বিতরণের কথা বলা হচ্ছে, তা কোভিড-১৯ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পূর্ণাঙ্গ পিপিই নাকি আলাদা আলাদা সুরক্ষা সরঞ্জামকে মিলিয়ে পিপিই বলা হচ্ছে— এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা সারাবাংলাকে বলেন, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় একেকজনের জন্য একেক রকমের পিপিই প্রয়োজন। কারও জন্য শুধু মাস্ক ও গাউনকে পিপিই বলা হয়ে থাকে। আবার কারও জন্য পূর্ণাঙ্গ সেটের পিপিই দরকার হয়ে থাকে। যারা সরাসরি সংক্রমিত বা আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা করবেন, তাদের জন্য পূর্ণাঙ্গ পিপিই লাগবে, যেখানে ৯টি উপকরণ থাকে। এই ৯ উপকরণের পিপিই সবার প্রয়োজন নেই। আর পিপিই’র যে হিসাবটা আমরা বলছি, এটি আমাদের কাছে সিএমএসডি থেকে আসে। আমরা শুধু প্রকাশ করে থাকি।
সেক্ষেত্রে আলাদা আলাদাভাবে যেসব উপকরণ দেওয়া হচ্ছে, তাকে পূর্ণাঙ্গ পিপিই বলা যায় কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. নাসিমা বলেন, সেটা বলা যায় না। কিন্তু আবার এটাও বুঝতে হবে, বিশ্বজুড়েই কিন্তু পিপিই’র সংকট আছে। তাই প্রায়োরিটি হিসাব করেই দেওয়া হচ্ছে সব কিছু।
স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে পূর্ণাঙ্গ পিপিই দেওয়া হচ্ছে কি না কিংবা এর মধ্যে সংখ্যাগত যে অসামঞ্জস্য রয়েছে, সে বিষয়ে যোগাযোগ করা হয় কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) পরিচালক ব্রি. জে. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ’র সঙ্গে। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘পিপিই মানেই তো কমপ্লিট।‘
প্রকাশিত তথ্যে আলাদা আলাদা করে উপকরণ বিতরণ এবং তার হিসাবেও অসামঞ্জস্যের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় তার। তিন লক্ষাধিক পিপিই পিপিই বিতরণের তথ্য তুলে ধরে জানতে চাওয়া হয়, এগুলো সবই পূর্ণাঙ্গ পিপিই কি না। জবাবে ব্রি. জে. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ সারাবাংলাকে বলেন, ‘পিপিই তো পিপিইই। এখানে ইনকমপ্লিট বলার কিছু নেই। এগুলো নিয়ে আমরা ব্যস্ত না। পিপিই দিচ্ছি সারাদেশে। আমরা এখন সরাসরি কাজ করছি জাতীয় ইমার্জেন্সি মোকাবিলার জন্য। এখন যদি কেউ বলে যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্ট্যান্ডার্ড মানা হচ্ছে কি না, সেগুলো আসলে তিন মাস আগে বললে ভালো হতো। আর যেখানে চারদিকে সব বন্ধ, সেখানে যে আমরা পিপিই দিচ্ছি সবাইকে, যা পরে সবাই রোগীর সামনে দাঁড়াতে পারছেন তারা— এটাই কি বেশি না?’
সেক্ষত্রে চিকিৎসকদের নিরাপত্তার বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তাহলে তো কারও পিপিই পরার দরকারই নেই। সবাই নিরাপদে দাঁড়িয়ে থাক দূরে। এ বিষয়ে এত প্রশ্নের কিছু নেই।’
তথ্য বিভ্রাট বা সংখ্যাগত গরমিলের বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, আমি তো তথ্য সঠিক করতে পারব না। আমি জিনিস সরবরাহ করছি। তথ্য যেখানে গড়মিল দেখাচ্ছে, তাদের জিজ্ঞাসা করুন। সন্দেহ থাকলে সেটা উনারাই জানাবেন। আমার এখানে সেই জাতীয় ড্যাশবোর্ড দেখার ব্যবস্থা নেই, সময়ও নেই। আমার প্রতিটা সময় গুরুত্বপূর্ণ।’
তবে স্বাস্থ্য অধিদফতরে কন্ট্রোল রুমের লজিস্টিক বিভাগের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, সিএমএসডি থেকে যে হিসাব দেওয়া হয়, সেটিই প্রকাশ করা হয় কোভিড-১৯ সংক্রান্ত ওয়েবসাইটে।
এখন পর্যন্ত কী পরিমাণ পূর্ণাঙ্গ পিপিই দেওয়া হয়েছে— এ বিষয়ে জানার জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. আমিনুল হাসান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ ও স্বাস্থ্য সচিব আসাদুল ইসলামের সঙ্গে বারবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে তারা কেউই ফোন ধরেননি।
তবে অধিদফতরের কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ারের (সিবিএইচসি) লাইন ডাইরেক্টর ডা. সহদেব চন্দ্র রাজবংশীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলা পর্যায়ে ১০টি করে পূর্ণাঙ্গ পিপিই দেওয়া হচ্ছে। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, উপজেলা পর্যায়ে ১০টি করে পিপিই দেওয়া হয়েছে। সিভিল সার্জন অফিসে রিজার্ভ থাকবে আরও ৫০ পিস। আপাতত এর বেশি দেওয়ার মতো অবস্থা নেই। তাছাড়া উপজেলা পর্যায়ে তেমন রোগী থাকার তথ্যও নেই। আমাদের সরবরাহ চেইন ভালো আছে। আশা করি সমস্যা হবে না।
১০টি পিপিই দিয়ে উপজেলা পর্যায়ে সবাই নিরাপদে স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারবেন কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. সহদেব বলেন, রিস্ক তো সবারই আছে। তাও আশা করছি সমস্যা বেশি হবে না। উপজেলা পর্যায়ে বলতে পারি কোনো ঘাটতি নেই। হয়তো আরও বেশি দেওয়া দরকার ছিল, কিন্তু তা নিয়েও সমস্যা হবে না।
কমপ্লিট পিপিই ছাড়া চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা নিরাপদ কি না— এমন প্রশ্নের উত্তরে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি ডা. ইকবাল আরসালান সারাবাংলাকে বলেন, পিপিই নিয়ে কিছু বিভ্রান্তি আছে। এখানে প্রোপার ডিস্ট্রিবিউশন গুরুত্বপূর্ণ। আমরা দেখতে পাচ্ছি, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা ছাড়াও অন্যান্য শ্রেণিপেশার মানুষেরাও পিপিই পরে ছবি তুলছেন, বাইরে ঘুরছেন। এটা দুঃখজনক। এক্ষেত্রে চিকিৎসকদের যদি পিপিই না দেওয়া হয়, তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবেন— এটাই স্বাভাবিক। জাতীয় কমিটির সদস্য হিসেবে আমরা সবসময়েই চিকিৎসকদের নিরাপত্তার এই যৌক্তিক দাবিগুলো নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, তিন লাখ ৩৯ হাজার পিস পিপিই সরবরাহ করা হয়েছে। এগুলোকে কমপ্লিট পিপিই বলা যায় কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাচিপের এই নেতা বলেন, ভিন্ন ভিন্ন পর্যায়ে ভিন্ন রকমের পিপিই আছে। প্রথম গ্রেডের আক্রান্তের জন্য এক ধরনের পিপিই দরকার। আবার পরের লেভেলের রোগীর জন্য অন্য রকম। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও একটি নির্দিষ্টসংখ্যক পিপিই দেওয়ার পরে বলেছে বাকিগুলো নিজেদের মতো করে জোগাড় করে নিতে হবে। এটা কেমন হিসাব, তা আমার বোধগম্য হয় নি। যদিও সেই সিদ্ধান্তগুলো পরিবর্তন হচ্ছে।
সিএমএসডির পরিসংখ্যান নিয়ে ডা. ইকবাল আরসালান বলেন, এখানে তাদের বোঝার ভুল আছে। তাদের কেউ কেউ দেখা যাচ্ছে মাস্ককে পিপিই, আবার কেউ কেউ ক্যাপকে পিপিই বলছে। আবার গাউনকেও পিপিই বলছে। আলাদা আলাদাভাবে যদি মাস্ক, গাউন, শু কাভার দিয়ে কেউ তিন লাখ পিপিই দেওয়া হয়েছে বলে, সেটি সঠিক তথ্য নয়। সেটা হতাশাজনকও। তিন মাস ধরে কী প্রস্তুতি নিয়েছেন উনারা, এর মাধ্যমে সেটিও প্রশ্নবিদ্ধ হয়। চিকিৎসকদের পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না গেলে কোভিড-১৯ মোকাবিলা আমাদের জন্য কষ্টকর হয়ে যেতে পারে।