বন্ধ রাইড শেয়ারিং, কবে খুলবে জানে না কেউ
২ এপ্রিল ২০২০ ১৮:১৫
ঢাকা: করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সারাদেশে চলছে সাধারণ ছুটি। বন্ধ অফিস-আদালত। ৪ এপ্রিল পর্যন্ত গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণা আছে আগে থেকেই। তার অংশ হিসেবে উবার-পাঠাওসহ অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিং সেবাগুলোও বন্ধ রয়েছে। সাধারণ ছুটি ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো ফলে গণপরিবহন লকডাউনের মেয়াদও বাড়তে পারে। ফলে এসব রাইড শেয়ারিং সেবা কবে নাগাদ খুলতে পারে, তা নিয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য দিতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা। এ অবস্থায় এসব অ্যাপের মাধ্যমে সেবাকে যারা উপার্জনের পথ হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন, তারা পড়েছেন সংকটে।
উবারে গাড়ি চালাতেন জাহাঙ্গীর। তিনি সারাবাংলাকে জানান, কোম্পানি থেকেই অ্যাপ বন্ধ রেখেছে। ফলে অ্যাপের মাধ্যমে কোনো ট্রিপ পাচ্ছি না। কিছু পরিচিত মানুষ আছেন। তারা ফোন দিলে রেন্ট-এ-কারের মতো সার্ভিস দিচ্ছি। কিন্তু এরকম ট্রিপ তো অনেকদিন দিনে একটাও আসে না। ফলে আমাদের সংসার চালাতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে।
উবার ও পাঠাওয়ের আরও কয়েকজন গাড়িচালকও একই অভিজ্ঞতার কথা জানালেন। তারা বলছেন, পরিচিত সূত্রে কিছু ট্রিপ পাচ্ছেন তারা। তবে তা পরিমাণে নগণ্য। সামান্য যা কিছু সঞ্চয় ছিল, তাই এখন ভেঙে খেতে হচ্ছে। এভাবে আর কিছুদিন চললে তাদের না খেয়ে থাকতে হবে। চালকদের দাবি, লকডাউন শেষে সেবা চালু হলেও অন্তত একমাস কোম্পানিগুলোকে কমিশন বন্ধ রাখা উচিত।
রাজধানী ঘুরে দেখা গেছে, ব্যক্তিগতভাবে কেউ কেউ মোটরসাইকেল নিয়ে রাস্তায় বেরিয়েছেন। জরুরি কাজে বের হওয়া মানুষজনকে চুক্তিভিত্তিতে আনা-নেওয়ার কাজ করছেন তারা। এমন কয়েকজন জানালেন, অ্যাপ বন্ধ ২৬ মার্চ থেকেই। কিন্তু পেটের দায়ে তারা রাস্তায় বের হয়েছেন। তবে এভাবে উপার্জন হচ্ছে খুব সামান্যই।
আর রাইড শেয়ারিং সূত্রগুলো জানাচ্ছে, মোটরসাইকেল রাইড শেয়ারিংয়ে চালক হিসেবে যারা কাজ করেন, তাদের বড় অংশই এসেছেন গ্রাম থেকে। সাধারণ ছুটি আর গণপরিবহন লকডাউন ঘোষণার পর তাদের বেশিরভাগই বাড়ি চলে গেছেন।
পাঠাও জানায়, তাদের রাইড শেয়ারিং সেবা বন্ধ রয়েছে। তবে তাদের কুরিয়ার সেবা চালু রয়েছে। সেটিও কেবল ঢাকার মধ্যে। একইসঙ্গে গ্রোসারি শপ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অর্ডার অ্যাপের মাধ্যমে গ্রহণ করে ডেলিভারি ম্যানের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
পাঠাওয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হোসেন মোহাম্মদ ইলিয়াস জানান, গণপরিবহন যতদিন বন্ধ থাকবে, ততদিন রাইড শেয়ারিং সেবাও বন্ধ রাখা হবে। তবে আমরা জরুরি সেবা হিসেবে পাঠাও অ্যাপে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার সুবিধা চালু রেখেছি। ঢাকার ভেতরে জরুরি পার্সেল সুবিধাও চালু আছে।
রাইড শেয়ারিং আরেক কোম্পানি সহজের একজন কর্মকর্তা জানান, ৪ এপ্রিল গণপরিবহন লকডাউন তুলে নেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে তারা এখনো নিশ্চিত নন। যেহেতু সাধারণ ছুটি বাড়ানো হয়েছে, তাতে গণপরিবহনের লকডাউনও বাড়তে পারে। সেক্ষেত্রে রাইড শেয়ারিং সেবা কবে চালু হবে, সে বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না।
বিআরটিএ রাইড শেয়ারিং সেল জানায়, গণপরিবহনের মধ্যে রাইড শেয়ারিং সেবা রয়েছে। এই দেশে রাইড শেয়ারিং সেবা বন্ধ রয়েছে। এমনকি রাইড শেয়ারিং অ্যাপে পরিবহন সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো সেবা দেওয়ারও অনুমোদন নেই। তবে অনুমোদন না থাকলেও পাঠাও তাদের কুরিয়ার ও ডেলিভারি সেবা চালিয়ে যাচ্ছে। অ্যাপ খুলে কোনো পণ্য আনা-নেওয়ার প্রয়োজন হলে তাদের ডেলিভারিম্যান পাওয়া যাচ্ছে।