Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

করোনা মোকাবিলায় সরকারকে ‘সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা’ দেবে বিএনপি


৪ এপ্রিল ২০২০ ০১:০০

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)

ঢাকা: করোনা সংকট মোকাবিলায় সরকারকে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা দিতে যাচ্ছে বিএনপি। দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে চলমান মহাদুর্যোগ থেকে জনগণকে রক্ষায় সব ভেদাভেদ-বিরোধিতা ভুলে এক সঙ্গে কাজ করার প্রস্তাব দেবে দলটি। সেক্ষেত্রে সর্বদলীয় বা জাতীয় কমিটি গঠনের আহ্বানও জানাবে তারা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ‘সরকারের নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়া ‘সাময়িক’ মুক্তি পাওয়ায় আপাতত সরকারবিরোধী কোনো ইস্যু বিএনপির হাতে নেই। অধিকন্ত বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস নিয়ে গোটা জাতি দিশেহারা।

বিজ্ঞাপন

এমন পরিস্থিতে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থগিত করতে হয়েছে বিএনপিকে। তারপরও দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির কাছে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা নেহায়াত কম নয়। সে কারণেই সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তবনা তুলে ধরে জনগণের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতার জায়গাটি তুলে ধরতে চায়।

এ লক্ষ্যেই দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করে বিএনপির মহাসচিব একটি প্রস্তবনা তৈরি করেছেন। যে প্রস্তবনা শনিবার (৪ এপ্রিল) সকাল ১১ টায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তুলে ধরবেন তিনি। গুলশান কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

দলীয় সূত্রমতে, বিএনপির সুনির্দিষ্ট প্রস্তবনার মধ্যে প্রাধান্য পেয়েছে সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়ানো। আগামী ৯ এপ্রিল সবে বরাত আর ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ। এই দুইটা বিশেষ দিনে জনগসমাগম শূন্যের কোটায় রাখতে না পারলে করোনাভাইরাসের ‘সোশ্যাল ট্রান্সমিশন’ ঠেকানো কঠিন হয়ে যাবে। সেই জন্য চলমান সাধারণ ছুটি অন্তত ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো প্রস্তাব করতে যাচ্ছে বিএনপি।

বিজ্ঞাপন

দলটি মনে করে, যে কোনো ধরনের বড় দুর্যোগ মোকাবিলা সরকারের একার পক্ষে সম্ভব না। এ জন্য প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য। তাই দলমত নির্বিশেষ সবাইকে নিয়ে একটি জাতীয় কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিতে যাচ্ছে বিএনপি। সম্প্রতি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জাতীয় কমিটি গঠনের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব। সেই বিষয়টিই লিখিত আকারে দিতে তুলে ধরবেন তিনি।

বিএনপি মনে করে সারাদেশে যে ঢিলেঢালা লকডাউন চলছে, সেটিকে আরও কঠোর করার মধ্য দিয়ে এই প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস বিস্তার রোধ করা যেতে পারে। এখনো রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে রাস্তা-ঘাট, অলিগলি, পাড়া-মহল্লা, হাট-বাজারে লোকজন জটলা পাকাচ্ছে। এগুলো কঠোর হাতে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ ব্যাপারেও বিএনপির পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট প্রস্তবনা রয়েছে।

তবে এ ব্যাপারে কঠোর হওয়ার আগে দেশের সর্বত্র নিম্ন আয়ের মানুষ, অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত শ্রমিক, দিন আনে দিন খাই’র মতো যারা জীবনযাপন করে তাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেবে বিএনপি।

যেমন—আগামী তিন মাস দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করা মানুষ এবং কম আয়ের মানুষদের চাল-ডাল দিতে দেওয়া, দরিদ্র লোকের এনজিও ঋণের কিস্তি জুন মাস পর্যন্ত মওকুফ করা, নির্দিষ্ট আয়ের মানুষকে আগামী তিন মাস গ্যাস-বিদ্যুতের বিল মওকুফ করা, নিম্ন আয়ের লোকদের বাড়ি ভাড়া সরকারের তরফ থেকে পরিশোধ করা ইত্যাদি।

চলমান করোনা সংকটে সব চেয়ে বেশি ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে ডাক্তার, নার্স, পুলিশ ও সংবাদকর্মীদের। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ কয় শ্রেণির মানুষদের জন্য পারসোনাল প্রটেক্টিভ ইক্যুপমেন্ট (পিপিই) প্রদান, হাসপাতালে প্রয়োজনীয় ইক্যুপমেন্ট, আইসোলেশন ইউনিট ও আইসিইউ বাড়ানোর ব্যাপারে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ারও পরামর্শ দেবে বিএনপি। সর্বপরি সারাদেশে ত্রাণ তৎপরতা বাড়ানো এবং এসব কাজ সমন্বয়ের জন্য একটি জাতীয় কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেবে দলটি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সারাবাংলাকে বলেন, ‘যে কোনো ধরনের জাতীয় দুর্যোগে দেশের বড় দল হিসেবে বিএনপি জনগণের পাশে থাকে। চলমান করোনা সংকটেও বিএনপি পাশে আছে। তবে এ ব্যাপারে সরকারে দায়িত্বটাই বেশি। রাষ্ট্রে সকল প্রকার লজিস্ট্রিক সাপোর্ট তাদের হাতে। সে কারণে, বিএনপির সুনির্দিষ্ট প্রস্তবনাগুলো তাদের সামনে তুলে ধরতে চাই।’

করোনা করোনা মোকাবিলা করোনাভাইরাস বিএনপি মির্জা ফখরুল সরকারা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর