Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সাহায্যের সঙ্গে করোনা বিতরণ করছি না তো?— আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের


৪ এপ্রিল ২০২০ ১৭:২৬

ঢাকা: সকাল থেকে রাস্তার দু’পাশে গাদাগাদি করে বসে আছেন সফুরা, তাহেরা, লাবলী ও বশির মিয়াসহ অনেকেই। ত্রাণ বা খাদ্য সহায়তার জন্য গুলশান-বাড্ডা লিংক রোডে তাদের এ অপেক্ষা। সাহায্য নিয়ে কেউ এলেই তাতে হুমড়ি খেয়ে পড়বে সবাই। একে অপর থেকে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখাতো দূরের কথা তাদের অনেকের মুখে মাস্কও নেই।

করোনার মহামারিতে থমকে গেছে গোটা বিশ্ব। এই মহামারির সংক্রমণ ঠেকাতে মানুষে-মানুষে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ সরকার। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে সবধরনের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। বন্ধ হয়ে গেছে নিম্ন আয়ের মানুষের উপার্জনের পথ। এ অবস্থায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন অনেকেই। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও সাহায্য করা হচ্ছে। তবে এ সাহায্য বিতরণে জমায়েত হচ্ছে শত শত মানুষ। এভাবে লোক জমায়েত করে সাহায্য বিতরণে করোনা ঝুঁকি অনেকগুণ বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকার বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করলেও তা মানা হচ্ছে না। অনেক সময় প্রশাসনের লোকদেরও জমায়েত করে সাহায্য দিতে দেখা গেছে।

সম্প্রতি রাজধানীর সায়েন্সল্যাব ও নিউমার্কেট এলাকায় দরিদ্র মানুষের মাঝে নগদ টাকা বিতরণ করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মোহাম্মদ ইমদাদুল। বিতরণের সময় মানুষের ভিড়ে হিমশিম খেয়ে এক পর্যায়ে ১০০ টাকার অনেকগুলো নোট ছিটিয়ে দেন তিনি। তখন নোটগুলো কুড়িয়ে নিতে মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ে। একে অপরকে ধাক্কা দিয়ে নোট ধরতে পরস্পরের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হন এই মানুষগুলো।

একইরকম গণজমায়েত দেখা যায় ঢাক দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনের ত্রাণ বিতরনের সময়ও। এভাবে গণজমায়েতের মাধ্যমে সাহায্য বিতরণের সাথে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে কি-না সেটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

এছাড়া দুদিন আগে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনও ত্রাণ বিতরণ করেন। সেখান দেখা গেছে, অনেকেই পিপিই পরে ত্রাণ বিতরণে অংশ নিয়েছেন। কিন্তু যাদের ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে, সেই খেটে খাওয়া অসহায় মানুষদের লাইনে কোনো দূরত্বই মানা হয়নি। একজন আরেকজনের কাঁধের ওপর চেপে সেই ত্রাণ নিতে দেখা গেছে।

করোনা ঝুঁকিতে ভিড় এড়িয়ে ভিন্ন উপায়ে সাহায্য বিতরণ কর্মসুচি পালন করতে পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর খান আবুল কালাম আযাদ। সারাবাংলাকে বলেন তিনি, ‘এভাবে গণজমায়েত করে ত্রাণ বা সাহায্য বিতরণ করার খবরটি এখন ভয়ংকর ব্যাপার হয়ে দাড়িঁয়েছে। বার বার বলা হচ্ছে এ রোগের আপাতত একটাই সমাধান- সেটা হচ্ছে, সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা। এক জায়গায় পাঁচজনের বেশি জমায়েত হতে পারবে না। একজনের থেকে আরেকজনের কমপক্ষে তিন ফিট দুরত্ব বজায় রাখতে বলা হচ্ছে। এমনকি লিফটেও এক সঙ্গে তিনজন উঠতে পারবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটি শুধু আমরা বলছি না, আন্তর্জাতিকভাবেও বলা হচ্ছে। এ ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকতে আর কোনো প্র্যাকটিস না করলেও একে অপর থেকে কম করে হলেও তিন ফিট দূরে থাকতে হবে। এভাবে গণজমায়েত করে সাহায্য দিলে, এক সময় ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হবে।’

গণজমায়েত করে দেখানো দান না করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাহায্য পৌঁছে দেওয়া হবে উত্তম কাজ। অথবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে সহায়তার বিষয়টি দেখভাল করলে সেটি বেশি ভালো হবে বলেও জানান তিনি।

চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া মহামারি করোনায় এখন পর‌্যন্ত বিশ্বে ১১ লাখেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। আর মারা গেছে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ। আর সরকারি হিসেবে বাংলাদেশে আক্রান্ত হয়েছে ৭০জন। মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের।

করোনাভাইরাস ত্রাণ সহযোগিতা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

‘তুফান’ আসছে হিন্দি ভাষায়
৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৪৯

সম্পর্কিত খবর