Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কর্মহীনদের মাঝে ১০ টাকায় চাল বিক্রি শুরু


৫ এপ্রিল ২০২০ ১৮:২৮

ফাইল ছবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে করোনাভাইরাসের প্রভাব থেকে দূরে রাখতে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি (বিশেষ ওএমএস) শুরু করেছে সরকার। বিভাগ, জেলা ও পৌরসভায় সপ্তাহে তিনদিন এই চাল বিক্রি হবে। পরিচয়পত্র দেখিয়ে একজন ভোক্তা সর্বোচ্চ পাঁচ কেজি চাল কিনতে পারবেন।

রোববার (৫ এপ্রিল) থেকে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।

জানতে চাইলে খাদ্য সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আজ থেকে ১০ টাকা কেজিতে চাল বিক্রি শুরু হয়েছে। ডিলারদের মাধ্যমে চাল বিক্রির পুরো দায়িত্ব জেলা প্রশাসকরদের।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা গাইডলাইন তৈরি করে দিয়েছি। সে অনুযায়ী চাল বিক্রির কার্যক্রম চলবে।’

এ প্রসঙ্গে খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক সারোয়ার আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘১০ টাকায় চাল বিক্রির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আগে শুধু গ্রামে দেওয়া হতো। এখন পৌর শহরেও দেওয়া হবে। গ্রামে ১০ টাকায় চাল বিক্রির কার্যক্রম খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি নামে পরিচিত ছিল। শহরে বিক্রি হবে ওএমএসে।’ তবে কখন কোথায় চাল বিক্রি হবে তা জানাতে পারেননি তিনি। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘ঢাকার কোথায় কোথায় চাল বিক্রি হবে তা আমি বলতে পারছি না। আমরা পলিসির সঙ্গে সর্ম্পৃক্ত। বিভাগীয় কমিশনারের অধীনে কমিটি করে দেওয়া আছে। চাল বিক্রির কার্যক্রম তাদের দায়িত্বে।’

করোনাভাইরাসের প্রভাব মোকাবিলায় বিশেষ ওএমএসের নীতিমালায় বলা হয়েছে, ‘করোনাভাইরাসের ফলে নিদমজুর, রিকশাচালক, ভ্যান চালক, পরিবহন শ্রমিক, ফেরিওয়ালা, চায়ের দোকানদার, ভিক্ষুক, ভবঘুর, তৃতীয় লিঙ্গ (হিজড়া) সম্প্রদায়সহ অন্যান্য সকল কর্মহীন মানুষকে এর আওতায় এনে বিশেষ ওএমএস কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে।

কর্মসূচিটি বাস্তবায়নে ক্ষেত্রে ভোক্তার বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহে রাখতে হবে। একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তিকে ভোক্তা হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না।

এছাড়া ওই পরিবারের কেউ যদি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি বা ভিজিডি কর্মসূচির অন্তর্ভূক্ত হয়ে থাকেন, তাহলে তিনি এর ভোক্তা হতে পারবেননা।

ভোক্তা প্রতি ৫ কেজি চাল বিক্রয় করতে হবে এবং একজন ভোক্তা জাতীয় পরিচয় পত্র প্রদর্শন করে সপ্তাহে একবার ৫ কেজি চাল ক্রয় করতে পারবেন। জেলা শহর বহির্ভূত প্রথম শ্রেণীর পৌরসভায় সপ্তাহে তিনদিন ২ জন ডিলারকে ১ টন করে এবং খ ও গ শ্রেণীর পৌরসভায় সপ্তাহে তিনদিন ১ জন ডিলারকে ১ টন করে চাল বিক্রির জন্য নির্বাচন করা হবে। নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠী, শ্রমজীবীদের বসবাসের নিকটবর্তী বস্তি অথবা পর্যাপ্ত খালি জায়গা আছে এমন স্থানকে বিক্রয়কেন্দ্র হিসেবে নির্বাচন করতে হবে।

রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার এই তিনদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত বিক্রয় কার্যক্রম চালাতে হবে। বিক্রয় কার্যক্রমে করোনাবিধি মেনে চলতে হবে।’

এছাড়াও ৫ এপ্রিল জারি করা খদ্য মন্ত্রণালয়ের এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও খুলনা মহানগরীতে সর্বোচ্চ ১০ জন ডিলারের মাধ্যমে প্রতিকেজি চাল ১০ টাকা দরে বিক্রি করতে হবে। রংপুর, সিলেট, বরিশাল, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা ও ময়মনসিংহ মহানগরীতে সর্বোচ্চ ৭ জন ডিলারের মাধ্যমে ১০ টাকা দরে চাল বিক্রি করতে হবে।’

প্রসঙ্গত, করোনা ভাইরাস পরিস্থতিতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছিলেন- ‘বিনামূল্যে ভিজিডি, ভিজিএফ ও ১০ টাকা কেজি দরে চাল সরবরাহ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’ এর প্রেক্ষিতে সরকার নতুন করে ১০ টাকা করে চাল বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়, বিক্রির এই কার্যক্রম রোববার শুরু হয়েছে বলে খাদ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

এদিকে, স্বল্পমূল্যের এই চাল নিয়ে মাঠে নামবেন ওএমএস ডিলাররা। বর্তমানে ওএমএসে ৩০ টাকা কেজি দরে চাল ও ১৮ টাকা কেজি দরে আটা বিক্রি হচ্ছে। তবে আটার বিক্রিই সবচেয়ে বেশি। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, অর্থবছরটিতে ওএমএসের জন্য চালের বরাদ্দ ৫৫ হাজার টন। আর গমের বরাদ্দ ৩ লাখ টন। এর মধ্যে ২ লাখ টনের ওপরে গম বিক্রি হয়ে গেছে। তবে বাজারে চালের দাম কম থাকায় এর বিক্রি এখনও ১ হাজার টনের নিচে রয়েছে। তবে ১০ টাকায় চাল বিক্রি শুরু হওয়ায় চাহিদা বেড়ে যাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সারাবাংলা/ইএইচটি/এমআই


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর