Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নিজেদের অবরুদ্ধ করল দীঘিনালার ৪ গ্রামের মানুষ


৬ এপ্রিল ২০২০ ১৫:৫২

চলন্ত চাকমা, চবি করেসপন্ডেন্ট

খাগড়াছড়ি থেকে: করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় পার্বত্য খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলায় চার গ্রামের মানুষ স্বেচ্ছায় বাঁশের বেড়া দিয়ে লক ডাউনের ঘোষণা করেছে। এছাড়া পুরো উপজেলাতেই করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারিভাবে যে নির্দেশনা রয়েছে সেগুলো ভালোভাবে পালনের কথা জানিয়েছে দীঘিনালা উপজেলা প্রশাসন।

লক ডাউনের গ্রামগুলো হলো, রাঙ্গাপানি ছড়া, বলপিয়ে আদাম, কলেজ পাড়া, কাটালতলী। যার ফলে গ্রামের লোকজন অন্য কোথাও যেতে পারছেন না। গ্রামের লোকজন ছাড়া বাইরের অপরিচিত লোকজনও এসব গ্রামে প্রবেশ করতে পারছেন না। এছাড়া উপজেলায় অধিকাংশ গ্রামগুলোতে স্থানীয় এলাকাবাসী ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে এলাকাবাসীদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে।

ফলে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না এলাকাবাসীরা। রাস্তায় টহল দিচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পুলিশ। করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে ইতোমধ্যেই সাপ্তাহিক হাট-বাজারও বন্ধ করা হয়েছে। রাস্তাঘাটে মানুষ কম থাকায় থমথমে বিরাজ করছে পুরো দীঘিনালা জুড়ে।

এলাকাবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনাভাইরাস বিশ্বে মহামারি আকারে রূপ নিয়েছে। দেশেও করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী বেড়েই চলেছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে নিজেদের সতর্কতা অবলম্বনে এই লক ডাউন ঘোষণা। এছাড়াও কমপক্ষে ২০ গ্রামের যুব সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কঠোর অবস্তানে আছেন তারা।

বাইরে লোকজন গ্রামে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না। কয়েক গ্রামে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় চাকরিজীবীদের গ্রামে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছে। প্রবেশ করলেও ১৪ দিন আলাদা করে হোম কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্তাও করা হয়েছে। পরবর্তীতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে লক ডাউন ঘোষণা করা হবে বলেও জানান তারা।

বিজ্ঞাপন

বলপিয়ে আদামের বাসিন্দা সুভূতি চাকমা বলেন, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আমরা লক ডাউন ঘোষণা করেছি। গ্রামের সবাই একসঙ্গে আলোচনায় বসে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের গ্রামে অপরিচিত কেউ প্রবেশ করতে পারছেন না। আর গ্রামের লোকজনও কোনো জরুরি কাজ ছাড়া বাইরে যেতে পারছেন না।

যুব সমাজের উদ্যোগে লক ডাউন করা হয়েছে রাঙাপানিছড়া গ্রামে। রাঙ্গাপানি ছড়ার ধীষণ প্রদীপ চাকমা বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের ভয়াবহতার অগ্রিম সতর্কতা হিসেবে আমরা রাঙ্গাপানিছড়া গ্রামবাসীরা মিলে গ্রাম লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আগে প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বরে মনে করি। তাই গ্রামের ভিতরে অন্য গ্রামের লোক প্রবেশ ও গ্রামের লোক বাইরে যাওয়া সীমিতকরণের মাধ্যমে লকডাউন কার্যকর করা হচ্ছে। এলাকার যুবসমাজ এই লকডাউন কার্যকরে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। তবে লকডাউন চলাকালীন গ্রামের অভ্যন্তরে সকল মুদির দোকান, ওষুধের দোকান ও কাঁচাবাজারের দোকানও খোলা থাকবে।

বটতলী গ্রামের বাসিন্দা ও দুই বোয়ালখালী ইউপি সাবেক মেম্বার সানন্ত বিকাশ চাকমা বলেন, আমরা এখনো গ্রামে লক ডাউন ঘোষণা করিনি। তবে অপিরিচিত লোকজন গ্রামে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তীতে লক ডাউন ঘোষণা করা হবে।

এই বিষয়ে জানতে দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ উল্লাহ্ সারাবাংলাকে বলেন, যেসব গ্রামে নিজেরাই লক ডাউন ঘোষণা করেছে যদি তারা মনে করে ভালো। তাহলে খুব ভালো। আমরা সরকারিভাবে যে নির্দেশনা রয়েছে সেগুলো যথাযথভাবে পালন করছি। সবসময় সেনাবাহিনী ও পুলিশ টহল দিচ্ছে। এবং জনসচেতনতা স্বার্থে মাইকিং করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/সিসি/এমআই

করোনা চবি লক ডাউন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর