১০ টাকা কেজির চাল কিনতে মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব
৬ এপ্রিল ২০২০ ২৩:৩১
ওমর ফারুক হিরু, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
কক্সবাজার: দশ টাকা কেজি চাল বিক্রিতে মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। ঘেঁষাঘেঁষি করে লাইনে দাঁড়িয়ে কার আগে কে চাল কিনবে সেই চেষ্টা করছেন ক্রেতারা। চাল বিক্রির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বার বার বলার পরেও ব্যর্থ হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে। করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্টি পরিস্থিতিতে এই দৃশ্যে আতঙ্কিত অনেকে।
সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সারাদেশের মতো কক্সবাজারেও অসহায় ও খেটে খাওয়া জনগোষ্ঠীর জন্য ১০ টাকা কেজিতে (ওএমএস) চাল বিক্রিয় শুরু হয়েছে।
শুরুতেই শহরের ১২টি ওয়ার্ডে ১২ পয়েন্টে এই চাল বিক্রি কার্যক্রম চলছে। সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের নাগরিকেরা তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেখিয়ে, নিজের মোবাইল ফোন নাম্বার ডিলারের খাতায় লিখে দিয়ে প্রতিজন পাঁচ কেজি করে চাল কিনতে পারছেন।
এদিকে দেশের করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ কার্যক্রম চলার কথা থাকলেও চাল নিতে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষগুলো তা মানছেন না।
বিভিন্ন ওয়ার্ডের বিভিন্ন পয়েন্টে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, একে অন্যের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে চাল কিনছে।
৮নং ওয়ার্ডের ডিলার মোহাম্মদ ইউছুফ বাবুল বলেন, ‘সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা খুব চেষ্টা করছি লোকজনকে দূরত্ব বজায় রেখে চাল দেওয়ার জন্য। কিন্তু তারা কোনোভাবেই মানছেন না। এই দূরত্ব বজায় রাখার পরিবেশ তৈরি করতে পুলিশ প্রশাসনের প্রয়োজন।’
বৈদ্যঘোনা এলাকায় তালিকায় লিখে চাল বিতরণের দায়িত্বে থাকা রানী বালা জানান, গা ঘেঁষে থাকলে বিপদ হতে পারে এই কথা বার বার বলার পরেও কোনো কাজ হচ্ছে না। তারা মনে করছে এই চাল শেষ হয়ে যাবে তাই কার আগে কে নেবে সেই প্রতিযোগিতা।
স্বাস্থ্য ঝুঁকি জেনেও আগে চাল পাওয়ার জন্য নিয়ম মানছেন না বলেও স্বীকার করেন চাল নিতে আসা অনেকে। চাল নিতে লাইনে দাঁড়ানো রশিদ আহম্মদ নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘করোনাভাইরাস সর্ম্পকে আমি জানি কিন্তু একজনে নিয়ম মানলে কি হবে, অন্যরা তো মানছে না। তাই আমিও বাধ্য হয়ে ঘেঁষাঘেঁষি করে লাইনে দাঁড়িয়েছি।’
রহিমা বেগম নামে লাইনে থাকা আরেক নারী জানান, দূরত্ব বজায় রাখলে মাঝখানে আরেকজন লাইনে ঢুকে যায়। তাই এভাবে দাঁড়ানো।
এ ব্যাপারে পরিদর্শন করতে আসা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অধিদফতরের কর্মকর্তা মো. আফিফ আল মাহমুদ ভূইয়া জানান, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলেও লোকজন কোনোভাবেই মানছে না। কিছু সময়ের জন্য একটু ফাঁকা হলেও আবার একজন আরেকজনের সঙ্গে লেগে যায়। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ছাড়া একা এই কাজ বাস্তবায়ন কঠিন হবে যাবে। তাই প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হয়েছে এবং আশা করছে একটি শৃংখলা চলে আসবে।
চাল নিতে আসা লোকজনের এমন ঘেঁষাঘেঁষি দৃশ্য দেখে আতংকিত সচেতন মহল। তারা বলছেন অসহায় মানুষের প্রতি সরকারের এই সহযোগিতামূলক কাজে সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি নিশ্চিত করা না হলে হয়ত বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
সারাবাংলা/এমআই