‘সড়কে চাঁদার টাকা কর্মহীন ৯০ লাখ শ্রমিককে দিন’
৭ এপ্রিল ২০২০ ২১:২৪
ঢাকা: করোনাভাইরাসের কারণে লকডাউন গোটা বাংলাদেশ। দেশের পুরো যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ। এতে কর্মহীন হয়ে পড়েছে সড়ক ও নৌ-পরিবহনের প্রায় ৯০ লাখ শ্রমিক। এবার তাদের পাশে দাঁড়াতে সড়ক ও নৌ-পরিবহনের মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলার নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আপদকালীন তহবিলে জমার নামে সড়ক ও নৌ পরিবহন থেকে দৈনিক যে ৩ কোটি টাকা করে চাঁদা তোলা হতো সেই টাকা ৯০ লাখ কর্মহীন শ্রমিকদের দিন।
মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, ৭০ লাখ সড়ক পরিবহনের চালক-শ্রমিক ও ২০ লা নৌ-পরিবহন শ্রমিক গত ২৬ মার্চ দেশে পরিবহন বন্ধ হওয়ার পর থেকে মানবেতর জীবনযাপন করছে। আমাদের দেশের সড়ক ও নৌ যোগাযোগ সেক্টরে সঠিক বেতন কাঠামো কার্যকর না থাকায় প্রায় ৯৮ শতাংশ পরিবহন শ্রমিক দৈনিক মজুরি বা ট্রিপভিত্তিক চাকুরি করে থাকে। তারা দৈনিক শ্রমিকের মতো দিনে আনে দিনে খায় ভিত্তিতে এই সেক্টরে কাজ করে। গত ২৬ মার্চ থেকে দীর্ঘদিন ধরে পরিবহন বন্ধ থাকায় তাদের আয় রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে তারা স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
এ অবস্থায় মানবিক সাহায্য নিয়ে এসব শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে স্ব-স্ব পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনসগুলোর নেতাদের কাছে জোর দাবি জানান সংগঠন মহাসচিব।
বিবৃতি তিনি উল্লেখ করেন, দেশে সড়ক ও নৌ যোগাযোগ সেক্টরে দৈনিক গড়ে প্রায় ৩ কোটি টাকার বেশি বৈধ-অবৈধ চাঁদা আদায় হয়। এ চাঁদা যেসব খাতে আদায় করা হয় তার মধ্যে আপদকালীন তহবিলে জমার নামেও শ্রমিকদের কাছ থেকে কিছু চাঁদার টাকা নেওয়া হয়। দীর্ঘদিন যাবত আদায়কৃত এসব চাঁদার টাকা দেশের সবচেয়ে বড় বৈশ্বিক মহামারি করোনায় লকডাউনে কর্মহীন শ্রমিকদের পরিবারের সাহায্যে এগিয়ে আসতে দেখা যাচ্ছে না। অথচ এই দুটি সেক্টরে মালিক ও শ্রমিক নেতাদের অনেকে অঢেল সম্পদের মালিক হওয়ার পাশাপাশি অনেকেই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অংশীদার হয়েছে। অনেকেই একটি বাস বা লঞ্চ থেকে আজ শত শত বাস-লঞ্চের মালিক। অনেক শ্রমিক নেতারা অসংখ্য পরিবহনের মালিক হলেও শ্রমিকদের এই ভয়াবহ দুর্দিনে কাউকে অসহায় পরিবহন শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে দেখা যাচ্ছে না।
বিবৃতিতে মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরও দাবি করেন, দেশের অর্থনীতির লাইফ লাইন সচল রাখতে এসব পরিবহন শ্রমিকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এই দুর্যোগে শ্রমিকদের পাশে না দাঁড়ালে তারা কর্মহীন বা পেশা পরিবর্তনের সম্ভবনা রয়েছে। এতে এই সেক্টর আগামী দিনে সচল করতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হবে।