Wednesday 16 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কাজ নেই, রাস্তায় বসে ত্রাণের অপেক্ষা


৭ এপ্রিল ২০২০ ২৩:০৬ | আপডেট: ৮ এপ্রিল ২০২০ ০৭:১০
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা: করোনাভাইরাসের প্রভাবে প্রায় ১৫ দিন ধরে কার্যত অচল ঢাকা। সব কিছু বন্ধ রেখে সামাজিক বিচ্ছিন্নতার এই সময়ে কাজ হারিয়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষেরা। এ দলে রয়েছেন রিকশাচালক ও গৃহকর্মীরা। ত্রাণের আশায় তাদেরই অনেককে শহরের মূল রাস্তায় অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। অনেকে ছিলেন ফুটপাথে বসে।

বুধবার (৭ এপ্রিল) বিকালে পুরনো বিমানবন্দরের উল্টোপাশের রাস্তায় এমন চিত্র দেখা গেছে। এসব গৃহকর্মী ও রিকশাচালকদের প্রায় সবাই তেজগাঁওয়ের শাহীনবাগ এলাকার বাসিন্দা।

পশ্চিম আকাশে তখনো সূর্যের আলো। মূল রাস্তা ধরে ছুটছে কিছু গাড়ি। পুরোনো বিমানবন্দরের উল্টোপাশের রাস্তায় কয়েকজন গৃহকর্মীকে বসে থাকতে দেখা গেল। তাদেরই একজন গৃহকর্মী রহিমা (৪০)। শাহীনবাগের ৬ নং গলিতে তার বসবাস। রাস্তায় কেন বসে আছেন জানতে চাইলে গাইবান্ধার এই বাসিন্দা সারাবাংলাকে বলেন, ‘বাসা-বাড়িতে কাজ করতাম। এখন কাজ নেই। ঘরে খাবারও নেই। অনেকেই ত্রাণ দিচ্ছে। তাই রাস্তায় এসে বসেছি। অলিগলিতে তো দেয় না। তাই মূল রাস্তায় এসেছি।’

বিজ্ঞাপন

কতক্ষণ ধরে বসে আছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দুপুর থেকে বসে আছি। এখনো কোনো ত্রাণ পাইনি। কেউ আসেওনি।’

পাশে বসে থাকা আরেক গৃহকর্মী আলেয়া বলেন, ‘আগে বাসাবাড়িতে কাজ করতাম। করোনাভাইরাস আসার পর থেকে কেউ কাজ দেয় না। কারও বাসায়ও যেতে দেয় না। দুদিন ধরে এখানে বসি। যদি কিছু চাল-ডাল পাওয়া যায়।’

ত্রাণের আশায় এখানেই বসে থাকা কিশোরগঞ্জের পরশ বেগম সারাবাংলাকে বলেন, ‘কিছু চাল-ডালের জন্য বসে আছি। সারাদিনে কিছু পাইনি। তবে ত্রাণ দিলে অনেকেই কাড়াকাড়ি করে নিয়ে যায়।‘ কিছু খাবার দাবার পেলে আমাদের জন্য ভালো হতো। একই রকম কথা জানান লিবাশের মা নামে আরেক গৃহকর্মী।

রিকশাচালক গিয়াসউদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘ঢাকা শহরে রিকশা চালাই বহুবছর। এক সপ্তাহ ধরে বসে আছি। এখানে দুই একদিন বসেছি। চাল পেয়েছি দুবার। দুজনে সাহায্য করছে। এইটুকুই। দুইবারে যে চাল পেয়েছি তা ছয় কেজি। কিন্তু ঘরে আমার সদস্য ছয় জন। এখানে দাঁড়িয়েছে দুপুর ২টার পর থেকে। এখনো কেউ আসেনি। ত্রাণও পাইনি।’

গ্যারেজ থেকে রিকশা দেয় না। এছাড়া রাস্তায় নামলেই পুলিশ পেটায় বলেও জানান তিনি।

গিয়াসউদ্দিন আরও বলেন, ‘শাহীনবাগ ইসলাম সাহেবের মসজিদের ওখানে বাচ্চু ভাইয়ের ক্লাবে (স্থানীয় আওয়ামী লীগ অফিস) দুবার ভোটার আইডি কার্ড দিয়েছি। কোন ত্রাণ পাইনি। পাশের বড় একটি ভবনেও কার্ড রেখেছিল। ত্রাণ দেয়নি। তাই বাধ্য হয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়েছি।’

এদিকে, তেজগাঁওয়ের শাহীনবাগ, আড়জতপাড়া ও নাখালপাড়ার অলিগলির প্রায় সব দোকানই বন্ধ থাকতে দেখা গেছে। তবে বুধবার বিকালে এসব এলাকার অলিগলির রাস্তায় নিম্ম আয়ের মানুষকেই বেশি দেখা গেছে। শাহীন কলেজের পাশের রাস্তায়ও কিছু মানুষকে ত্রাণের জন্য বসে থাকতে দেখা গেছে।

অপেক্ষা টপ নিউজ ত্রাণ রাস্তা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর