হোটেল খাতে ক্ষতির শঙ্কা ৩ হাজার কোটি টাকা
১০ এপ্রিল ২০২০ ০৮:৪০
ঢাকা: পর্যটন মৌসুমে এ সময় পাঁচ তারকা হোটেলগুলো গিজগিজ থাকত অতিথিদের পদচারণায়। কিন্তু বর্তমানে হোটেলগুলোর কক্ষ ফাঁকা পড়ে আছে। যে কারণে অধিকাংশ হোটেলের কর্মীদেরও দেওয়া হয়েছে ছুটি। সব মিলিয়ে জুন পর্যন্ত এভাবে চলতে থাকলে এই শিল্পে ক্ষতি হবে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা।
সারাবাংলাকে এ আশঙ্কার কথা জানাচ্ছিলেন তারকা হোটেলগুলোর মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল হোটেল অ্যাসোসিয়েশন (বিহা)-এর সচিব মোহসিন হক হিমেল।
তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশে পাঁচ তারকা হোটেল আছে ৪৪টি। ফেব্রুয়ারি থেকে আমাদের ব্যবসায়ে ভাটা পড়তে শুরু করেছে। বিশেষ করে ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ তারকা হোটেল আর মার্চ থেকে ট্যুরিজম হোটেলগুলোতে ভিড় থাকে। ধরুন একটি ৫ তারকা হোটেলে দুই শতাধিক রুম রয়েছে। কিন্তু সেখানে এখন মাত্র ৪-৫টি রুমে অতিথি রয়েছে। যারা আছেন বেশ আগেই তারা বুকিং করে রেখেছিল। তাই আমাদের ধারণা ফেব্রুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত এভাবে চলতে থাকলে আমাদের প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হবে। যা থেকে উত্তরণ করা এই বছর আর সম্ভব নয়। একইসঙ্গে সরকারের প্রণোদনা ছাড়া কখনও এ খাত আর মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না।’
মোহসিন হক হিমেল আরও বলেন, ‘বর্তমানে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক সবকিছু বন্ধ রয়েছে। যে কারণে আমাদের অনেক কর্মীকে ছুটি দিয়ে দিয়েছি। এ ছাড়া সমগ্র বিশ্ব এখন লক ডাউন। যে কারণে বিদেশি অতিথিরা তাদের বুকিং বাতিল করছেন। সামনে এ অবস্থা ভালো হলেও অতিথি পাওয়া যাবে না। কারণ একটি ভয় মানুষের মধ্যে কাজ করবে। কাজেই আমাদের এই সেক্টরে কাজ করা প্রায় ১ লাখ লোক চাকরি হারাবেন এতে কোনো সন্দেহ নেই। একইসঙ্গে হোটেলগুলোর রেস্টুরেন্ট বিভাগ যেমন বন্ধ তেমনিভাবে বারও বন্ধ রয়েছে। ফলে রাজস্ব আহরণের সবখাতই আমাদের বন্ধ। ফলে আমরা এখন যেসব কর্মী আছে তাদের বেতনভাতা দেওয়া নিয়েও সমস্যায় আছি।’
এদিকে ট্যুর অপারেটররা বলছেন তারাও বড় ধসের মুখোমুখি হবেন। কারণ বিদেশি অতিথিরা ঘুরতে আসেন বাংলাদেশে। যার অধিকাংশ বয়োজ্যেষ্ঠ। কিন্তু এই করোনাভাইরাসের কারণে বয়োজ্যেষ্ঠরা ঘর থেকে বেরই হবেন না সামনে। অবস্থা মে বা জুন মাসে ভালো হলেও অতিথি থাকবে না।
এ বিষয়ে ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) সভাপতি রাফিউজ্জামান সারাবাংলাকে বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশ লক ডাউন। যেসব দেশ থেকে অতিথি আসে সেইসব দেশও লকডাউন। বিশেষ করে ইউরোপ থেকে সব থেকে বেশি পর্যটক বাংলাদেশে আসে। তারা বাংলাদেশে সামনে আসবেন কি না সেটি নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। কারণ করোনা ভালো হলেই সবাই যার যার কাজে ঝাঁপিয়ে পড়বেন। একইসঙ্গে একটু বয়স্করাও ঘুরতে আসেন বিদেশ থেকে তারা আসবেন না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি, পর্যটনখাত এ বছর ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না। এই ক্ষতি দ্রুত কাটিয়ে ওঠা খুবই কঠিন। কারণ সারাবিশ্ব যে ক্রান্তিকাল পার করছে সেখান থেকে বিশ্বকে বেগ পেতে হবে।’