ঢাকা: করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বর্তমান পরিস্থিতিতে রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য ঢাকা মেডিকেলের কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) বার্ন ইউনিট জরুরিভিত্তিতে খালি করার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বার্ন ইউনিটের সব রোগীকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়ারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (১০এপ্রিল) রাতে এ তথ্যটি নিশ্চিত করেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন।
ডা সামন্ত লাল সেন বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে শুক্রবার দুপুরে আমাদের কাছে এ সংক্রান্ত আদেশের একটি চিঠি এসেছে। এজন্য আমরা শনিবার সকাল থেকে সব রোগীকে নতুন বার্ন ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করবো। সরকারি অ্যাম্বুলেন্সেই রোগীদের স্থানান্তর করা হবে।
তিনি বলেন, বার্ন ইউনিটে এখন আড়াইশোর মত রোগী রয়েছেন। এদের সবাইকেই স্থানান্তর করা হবে। এজন্য শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউট প্রস্তুত করা হয়েছে। ইনস্টিটিইটের চিকিৎসক, নার্স, স্টাফ সবাইকেই প্রস্তুত রাখা হয়েছে। স্থানান্তর করা এই রোগীদের চিকিৎসার কোনো সমস্যা হবেনা সেখানে।
ঢাকা মেডিকেল বার্ন ইউনিটের প্রধান অধ্যাপক ডা. বিধান সরকার বলেন, শুক্রবার দুপুরে আমার কাছে চিঠি এসেছে। বর্তমানে করোনাভাইরাস বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তার করেছে সেজন্য বার্ন ইউনিট খালি করে সেখানে চিকিৎসা দেওয়া হবে। আগামীকাল থেকে বার্ন ইউনিটের রোগীদের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করতে বলা হয়েছে। সে অনুযায়ী আগামীকাল থেকে রোগীদের স্থানান্তরিত করবো।
এ বিষয়ে বার্ন ইউনিটের কয়েকজন চিকিৎসকের সঙ্গে কথা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন চিকিৎসক জানান, সরকার যেটা ভাল মনে করে সেটাই করবে। কিন্তু বার্ন ইউনিটে করোনা রোগীর চিকিৎসায় কতটুকু সফল হবে সেটাই ভাবার বিষয়। কারণ বার্ন ইউনিটের সামনে বৃহত্তর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ। সেখানে অন্যান্য শতশত রোগী আসে। বার্ন ইউনিটের পেছনে রয়েছে চিকিৎসকদের ডর্মিটরি। সেখানে পরিবার নিয়ে থাকেন বার্ন ইউনিট ও ঢামেক হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
তারা আরও বলেন, জানামতে করোনাভাইরাস হচ্ছে এমন একটি ভাইরাস কখন কার হবে বলা মুশকিল। তবে এসব রোগীর চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল একটু ফাঁকা জায়গায় হলে ভাল হয়। করোনা রোগীর জন্য দরকার হয় আলাদা ধরণের হাসপাতাল। কিন্তু বার্ন ইউনিট চারদিক দিয়ে ফাঁকা। আইসিইউ এর ভেন্টিলেশনের অবস্থাও ভাল নয়।
এ বিষয়ে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন বলেন, করোনাভাইরাস সন্দেহজনক রোগীদের প্রথমে ঢাকা মেডিকেল বার্ন ইউনিটে রাখা হবে। এবং তাদের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে পরীক্ষা করা হবে। কোন রোগীর পজিটিভ হলে সে অনুযায়ী রোগীর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগামীকাল থেকে রোগী স্থানান্তরের কাজ শুরু হবে।