Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হজ-ওমরাহ না হলে বাংলাদেশি এজেন্টদের ক্ষতি ‘৫ হাজার কোটি টাকা’


১১ এপ্রিল ২০২০ ১২:৫৬

ঢাকা: করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে এ বছর হজ ও ওমরাহ পালনের উদ্যোগ বাস্তবায়ন না হলে বাংলাদেশি হজ এজেন্সিগুলো প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যা কাটিয়ে ওঠার কোনো সম্ভাবনা নেই। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সরকারের কাছে আর্থিক প্রণোদনা চেয়েছে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-হাব।

তারা জানিয়েছেন এরই মধ্যে তাদের ১৭৫ কোটি টাকার লোকসান গুনতে হচ্ছে। কর্মহীন হয়ে পড়েছে এ খাতের ২০ হাজার কর্মচারী।

বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামালের কাছে আর্থিক প্রণোদনা চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে হাব।

চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় আড়াই লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান হজ ও ওমরাহ পালন করে থাকেন। এবারও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ২০ হাজার হজযাত্রী হজে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এরই মধ্যে ১০ হাজার যাত্রীর ভিসা, এয়ার টিকেট, মক্কায় হোটেল ভাড়াসহ পূর্ণ প্যাকেজে মূল্য পরিশোধ করা হয়েছে। যার পরিমাণ ১শ কোটি টাকা। আসছে রমজান মাসে ওমরাহ হজে গমনকারীদের জন্য আরো ৫ হাজার এয়ার টিকেট অগ্রিম করা হয়েছিল। যার মূল্য ২৫ কোটি টাকা। কিন্তু বিশ্বজুড়ে মহামারী আকার ধারণ করা করোনাভাইরাসের কারণে এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

এদিকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মার্চ মাসের বেতন ও অন্যান্য অফিস খরচ মিলিয়ে ৫০ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে করোনাভাইরাসের কারনে হজ, ওমরাহ, ট্রাভেল ও টুরিজম খাতে সাময়িক ক্ষতির পরিমাণ ১৭৫ কোটি টাকা।

অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে হাব আরও লিখেছে, আগামী পবিত্র রমজান পর্যন্ত আরও ১ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান ওমরাহ পালনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেনের পরিমাণ হতো ১ হাজার কোটি টাকা।

যদি এ বছর হজে যেতে না পারেন তাহলে ব্যবসায়িক ক্ষতি হবে ৪ হাজার ৮শ কোটি টাকা। যা কাটিয়ে ওঠার কোনো সম্ভাবনা থাকবে না। এদিকে চলতি অর্থ বছরের শেষে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত হজ এজেন্সিগুলোর অফিস ভাড়াসহ কমকর্তা-কর্মচারীদের খরচ পূরণ করতে ৫০ কোটি টাকা খরচ হবে। পরিস্থিতি এভাবে চলতে থাকলে এ খাতের ১০ হাজার কর্মচারী এবং সৌদি আরবের প্রবাসী বাংলাদেশীসহ পরোক্ষভাবে জড়িত সংশ্লিষ্ট ৫০ হাজার শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়বে।

এ পরিস্থিতিতে তারা ৪ টি প্রস্তাব অর্থমন্ত্রীর কাছে চিঠিতে তুলে ধরেছেন।এরমধ্যে হজ ও ওমরাহ এজেন্সিগুলোর ক্ষতি পূরনে নগদ আর্থিক প্রণোদনা, হজ ও ওমরাহ এজেন্সিগুলোর জন্য ১৫০০ কোটি টাকা সুদ মুক্ত ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল ঋণের ব্যবস্থা করা, ট্রাভেল এজেন্ট ও ট্যুর অপারেটরদের জন্য প্রয়োজনীয় নগদ প্রণোদনার ব্যবস্থা করা, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ-১ এর আওতায় ট্রাভেল এজেন্ট ও ট্যুর অপারেটরদের জন্য আর্থিক ক্যাপিটাল ঋণের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে হাবের সভাপতি এম শাহাদাত হোসেইন তসলিম বলেন, ‘হজের পরিকল্পনা থাকে পুরো বছর জুড়ে। এরই মধ্যে অগ্রিম এয়ার টিকেটসহ বিভিন্ন সেবার জন্য অগ্রিম ব্যয় করতে হয়েছে। যা ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। সেসব ক্ষতি মিলিয়ে এই বিশাল অংকের লোকসান সরকারি অনুদান ছাড়া কোনোভাবে পূরণ করা সম্ভব নয়।’

উল্লেখ্য, হাবের সদস্যভুক্ত ১ হাজার ২৩৮টি এজেন্সি প্রতিবছর হজে ধর্মপ্রান মুসলমানদের পাঠিয়ে থাকে।

দেশের মোট ৯৬ ভাগ হজযাত্রী বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এসব এসেন্সির মাধ্যমে হজ ও ওমরাহ পালন করে থাকেন। এজেন্সিগুলো হজে যাওয়ার সকল প্রস্তুতি যেমন, প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, ভিসাকরণ, এয়ার টিকেট, সৌদিতে অবস্থানকালে খাওয়া, থাকা, যাতায়াত ব্যবস্থা, চিকিৎসাসহ দেশে ফিরে আসার ব্যবস্থা করে থাকে।

আর্থিক ক্ষতি করোনাভাইরাস সৌদি আরব হজ হজ এজেন্সি


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর