খোলা মাঠে হাট চালুর নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রীর
১২ এপ্রিল ২০২০ ১২:৩০
ঢাকা: করোনা পরিস্থিতির মধ্যে হাট-বাজার সম্পূর্ণ বন্ধ না রেখে বড় মাঠ দেখে সপ্তাহে একদিন অন্তত হাঁট চালু রাখতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে মানুষের অন্তত স্বাভাবিক জীবনযাত্রা পরিচালনা করা সহজ হবে বলে জানান তিনি।
রোববার (১২ এপ্রিল) সকালে গণভবন থেকে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বরিশাল ও খুলনা বিভাগের জেলাগুলোর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার সরাসরি সম্প্রচার করে। এর আগে দুই দফায় ২১টি জেলার সাথে ভিডিও কনফারেন্স করেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: ধান কাটা-মাড়াইয়ে বরাদ্দ ১০০ কোটি টাকা, বীজ-চারায় ১৫০ কোটি
করোনাভাইরাস সংকট চলাকালীন কৃষি খাতে বিভিন্ন উদ্যোগ ও করণীয় গ্রহণের নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এরইমধ্যে প্রশাসন এবং পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা তাদেরকে যথাযথ জায়গায় যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেবেন। অর্থ্যাৎ কাজ একেবারে বন্ধ থাকবে না, কারণ একটা দেশ স্থবির হতে পারে না। কাজেই সেখানে তারা যদি যেতে পারেন, কাজ করতে পারেন।’
খাবারের দোকান পাঠ, ওষুধের দোকানপাঠ নেহাত প্রয়োজনীয় জিনিস সেগুলো সুনির্দিষ্ট সময় খোলা রাখতে হবে যেন মানুষকে জিনিসগুলো সরবরাহ করা যায়। সেদিকে খেয়াল রাখতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন- কৃষিতে ৫ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আর আজকাল তো ডিজিটাল বাংলাদেশ, টেলিফোন সকলের আছে, মোবাইল ফোন আছে। আর এটার কিছু কিছু উদ্যোগও নিতে পারেন। যেটা নির্দেশনা তার বাড়িতে বাড়িতে জিনিসগুলি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা তাতে কিছু লোকের কর্মসংস্থানও হবে। ভ্যান রিকশা কোনকিছু করে পৌঁছে দিলে। অর্থ্যাৎ মানুষের সঙ্গে মানুষের সংস্পর্শ যত কমানো যায় সেটিই ভালো। এটা কমিয়ে রেখে আপনি আপনার অনেক কাজ যেতে পারেন। কাজেই আমাদের ফসল নষ্ট হওয়া বা তরিতরকারি ফলমূল যেগুলি হচ্ছে, সেগুলি নষ্ট হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সেটা পাঠানোর জন্য আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে শুরু করে সবাইকে আমরা অনুরোধ করছি যেন পণ্যগুলো যথাযথ জায়গায় পৌঁছে বাজারজাত করার ব্যবস্থা করে দিতে পারে।’
‘তবে বাজারে যাওয়ার সময়ও এই দূরত্বটা বজায় রাখতে হবে। এমননি যেখানে হাঁট হয়। হাট বাজারও সম্পূর্ণ বন্ধ না রেখে ঠিক হাটের জায়গায় খুব বেশি লোক সমাগম হবে তাই বড় মাঠ দেখে সুর্নিদিষ্ট জায়গা চিহ্নিত করে দুরত্ব বজায় রেখে রেখে কেউ হাটে পণ্য বিক্রি করার একটা ব্যবস্থা সপ্তাহে একদিন অন্তত করা যায়। আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা আছে, আমাদের যারা প্রশাসনের সঙ্গে আছেন তারা এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা আছেন, সবাই মিলে ওইভাবে যদি একটা প্ল্যান করে আপনারা করেন, তাহলে কিন্তু মানুষের অন্তত স্বাভাবিক জীবনযাত্রাগুলো পরিচালনা করার সহজ হবে। সে ব্যবস্থাটা আপনারা নিতে পারেন।’
আরও পড়ুন- নববর্ষে কোনোভাবেই লোক সমাগম করবেন না: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটা খোলা জায়গা, মাঠ যেখানে দূরত্বটা বজায় রেখে রেখে যার যার পণ্য নিয়ে বসবে এবং সবাই সেটা সেখান থেকে কিনে নিয়ে চলে যাবে। মানুষের মাঝে অনেক মানুষের যেন ভিড় না হয়, সেই বিষয়টা আপনারা বিশেষভাবে দৃষ্টি দেবেন। সেটিই আমি অনুরোধ জানাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আর আমি জানি এখন অনেক কাজ বন্ধ। যেহেতু ধান কাটা শুরু হয়ে গেছে, সেখানে অনেকেই ধান কাটতে যেতে পারে। বিশেষ করে আমাদের দিনমজুর, তাতে তারা নিজেরা কিছু আর্থিকভাবে অর্থ উপার্জনের সুযোগ পাবে। আর সেখানে যাওয়ার জন্য ব্যবস্থাটা আমরা করে দেব।’
গণভবন প্রান্তে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস। এছাড়াও মন্ত্রীপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
করোনা করোনাভাইরাস খোলা হাট প্রধানমন্ত্রী বাজার শেখ হাসিনা সাপ্তাহিক হাট