করোনায় তলানিতে নামবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি: বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস
১২ এপ্রিল ২০২০ ১৮:২৫
ঢাকা: করোনাভাইরাসের ধাক্কায় মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি তলানিতে গিয়ে ঠেকতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটির পূর্বাভাস, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের এই প্রবৃদ্ধি ২ থেকে ৩ শতাংশে গিয়ে ঠেকতে পারে। করোনা পরিস্থিতি কতদিন দীর্ঘায়িত হবে, তার ওপর জিডিপির পতন নির্ভর করছে বলে মন্তব্য বিশ্বব্যাংকের।
কেবল জিডিপি নয়, করোনাভাইরাস দারিদ্র্যের হারেও নেতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক। নগর দারিদ্র্য বাড়ার পাশাপাশি পল্লি এলাকাতেও গরিবের সংখ্যা বাড়বে বলে আভাস সংস্থাটির।
রোববার (১২ এপ্রিল) ‘সাউথ এশিয়া ইকোনমিক ফোকাস’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সম্পর্কে এসব পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি।
প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক বলছে, করোনার প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ব্যাপকভাবে পড়বে। উৎপাদন খাত, বিশেষ করে তৈরি পোশাকের চাহিদা বিশ্বব্যাপী কমে যাবে। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ খাতের উৎপাদন খাতের পণ্যের চাহিদাও কমবে, যা কর্মসংস্থানে ঝুঁকি তৈরি করবে। দারিদ্র্যকে আরও গভীর করবে।
বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি মিয়াং টেম্বন বলেন, করোনা মহামারি কতটা দীর্ঘায়িত হবে, এর ওপর নির্ভর করছে অর্থনীতিতে এর প্রভাবের বিষয়টি। বাংলাদেশ সরকার দ্রুত স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করার সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতা বাড়িয়েছে। সরকারকে করোনা প্রতিরোধের কাজে সহায়তা করার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে ১০ কোটি ডলার দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। করোনা নিয়ন্ত্রণে এবং অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশকে সহায়তা দিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত অর্থবছরে বাংলাদেশে ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। তবে আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি কমে ১ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ২ দশমিক ৯ শতাংশ হতে পারে। পরের ২০২১-২২ অর্থবছরে ২ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ হতে পারে প্রবৃদ্ধি।
বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ শেফার বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করে নিজ দেশের জনগণকে সুরক্ষা দেওয়াকে প্রাধান্য দিতে হবে। কেননা দরিদ্র মানুষেরাই সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক ঝুঁকিতে থাকেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার আটটি দেশের মধ্যে চলতি অর্থবছরে (নিজ নিজ দেশের) চারটি দেশের প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক হয়ে যাবে। দেশগুলো হলো— আফগানিস্তান (ঋণাত্মক ৫ দশমিক ৯ থেকে ঋণাত্মক ৩ দশমিক ৮ শতাংশ), মালদ্বীপ (ঋণাত্মক ১৩ শতাংশ থেকে ঋণাত্মক সাড়ে ৮ শতাংশ), পাকিস্তান (ঋণাত্মক ২ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ঋণাত্মক ১ দশমিক ৩ শতাংশ) এবং শ্রীলঙ্কা (ঋণাত্মক ৩ শতাংশ থেকে ঋণাত্মক দশমিক ৫ শতাংশ)।
প্রতিবেদনে বাকি দেশগুলো প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরে ভারতের প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ, নেপালে ১ দশমিক ৫ থেকে ২ দশমিক ৮ শতাংশ এবং ভুটানে ২ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ২ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে।
অর্থনীতিতে করোনার প্রভাব করোনাভাইরাস করোভাইরাসের প্রভাব জিডিপি বিশ্বব্যাংক বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস