দেশে ইউরিয়া সারের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে
১৩ এপ্রিল ২০২০ ১৮:০০
ঢাকা: দেশে বর্তমানে পর্যাপ্ত পরিমাণে ইউরিয়া সার মজুদ রয়েছে। এছাড়া বিসিআইসি’র নিয়ন্ত্রাধীন সার কারখানাগুলোতে স্বাস্থ্য বিধি অনুসরণ করে উৎপাদন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এরই মধ্যে ডিলারদের মাধ্যমে কৃষকদের কাছে সার পৌঁছে দিতে সহযোগিতার জন্য জেলা প্রশাসকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়।
সোমবার (১৩ এপ্রিল) শিল্প মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ শাখা সারাবাংলাকে এসব তথ্য জানিয়েছে।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) সর্বশেষ তথ্যানুসারে, করপোরেশনের সার কারখানা ও গোডাউনগুলোতে মোট ৯ লাখ ৩৫ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার মজুদ রয়েছে। গত বছর একই মজুদের পরিমাণ ছিল ৮ লাখ ১৫ হাজার ৭৩৫ মেট্রিক টন। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে ইউরিয়ার মোট চাহিদা ২৫ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন এবং এর প্রায় ২২ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন সার এরই মধ্য কৃষকদের কাছে সরবরাহ করা হয়েছে।
অন্যদিকে কাফকোসহ বিসিআইসি’র নিয়ন্ত্রাধীন কারখানাগুলোতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং রোগ তত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে উৎপাদন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এজন্য পর্যাপ্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ব্লিচিং, মাস্ক এবং প্রয়োজনীয় পিপিই প্রদান করা হয়েছে। বর্তমানে বিসিআইসি’র অধীন ৬টি সার কারখানার মধ্যে ৩টি কারখানা চলমান রয়েছে এবং অন্য ৩টি কারখানা নিয়মিত সংক্ষিপ্ত মেরামতি শেষে শিগগিরই উৎপাদন কার্যক্রম পুনরায় শুরু করবে বলে জানা গেছে। সার উৎপাদন ছাড়াও পরিকল্পনা অনুযায়ী সার আমদানি ও সরবরাহ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
এদিকে বিসিআইস’র চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান কার্যালয়ের বিভাগীয় প্রধান ও কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে কারখানার শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মকর্তাদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তাসহ সার ব্যবস্থাপনার সার্বিক বিষয়ে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দিচ্ছেন।
এছাড়া ইউরিয়া সার পরিবহন, ডিলারের অনুকূলে বরাদ্দকৃত ইউরিয়া সার যথাসময় উত্তোলন করে সারাদেশের কৃষকদের কাছে পোঁছানোর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের জন্য ১১ এপ্রিল এক পত্রের মাধ্যমে জেলা প্রশাসকদের অনুরোধ জানিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়।
বিসিআইসি’র সূত্রে জানা গেছে, এরই মধ্যে এ বছরের এপ্রিল মাসের ইউরিয়া সারের বরাদ্দ জেলা প্রশাসকদের অনুকূলে পাঠানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে মে ও জুন মাসের বরাদ্দও পাঠানো হবে। তবে যেসব ডিলার এখন পর্যন্ত এবছরের মার্চ মাসের বরাদ্দ মোতাবেক নির্ধারিত পরিমাণ ইউরিয়া সার উত্তোলন করেননি তাদের দ্রুত সার তোলার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ৯ এপ্রিল পরিবহন কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীদের জরুরি সেবার অন্তর্ভুক্ত করে আদেশ জারি করেছে। করোনাভাইরাসজনিত উদ্ভূত মহামারি পরিস্থিতি বা মহামারি পরবর্তী সময়ে খাদ্য উৎপাদন অব্যাহত রাখতে প্রাধনমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষক পর্যায়ে সার, বীজ সরবরাহ নিশ্চিতের নির্দেশ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, কৃষি উৎপাদনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ ইউরিয়া সার শিল্প মন্ত্রণালয়ের সরাসরি তত্ত্বাবধানে বিসিআইসি সারাদেশে ২৯টি (২৪টি বাফার গোডাউন এবং ৫টি কারখানা) বিক্রয় কেন্দ্র থেকে প্রায় ৫ হাজার ৬০০ ডিলারের মাধ্যমে (প্রতি ইউনিয়নে কমপক্ষে ০১ জন ডিলার) কৃষক পর্যায়ে সরবরাহ করা হয়।