Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘চালচোরে’র পক্ষ নেওয়ায় এমপি টুকুর ভাইকে আ.লীগ থেকে অব্যাহতি


১৫ এপ্রিল ২০২০ ০৩:২৫

ঢাকা: চাল চুরির দায়ে গ্রেফতার ও দল থেকে বহিষ্কৃত এক ইউনিয়ন নেতার পক্ষ নেওয়ায় পাবনা জেলার বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বেড়ার পৌর মেয়র আব্দুল বাতেনকে দলের সব পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামালের নির্দেশে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল রহিম লাল ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্সের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

বিজ্ঞাপন

অব্যাহতি পাওয়া আব্দুল বাতেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও বর্তমান সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকুর ছোট ভাই। তিনি মেয়র অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ম্যাবস) নির্বাচিত সভাপতি।

জানা যায়, ১৩ এপ্রিল রাতে ভিজিডি ত্রাণের ২২৯ বস্তা চাল বিক্রির সময় র‌্যাবের অভিযানে আটক জন বেড়া উপজেলার ঢালারচরের ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কোরবান আলী সরদার। জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় আমিনপুর থানায় মামলা দায়েরের পর মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়ে।

এ ঘটনার পর চাল চুরির দায়ে অভিযুক্ত কোরবান আলীকে মুক্ত করার প্রয়াস চালান বেড়ার পৌর মেয়র আব্দুল বাতেন। অভিযানে কোরবান আলীর গ্রেফতার হওয়ার ঘটনাকে প্রশাসনের ষড়যন্ত্র বলে আখ্যা দেন তিনি। অপরাধীকে বাঁচানোর চেষ্টা করায় আওয়ামী লীগের দলীয় সব পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

এ সংক্রান্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ত্রাণের চাল বিক্রির সময় র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়া কোরবান আলী সরদারকে কেন্দ্রের নির্দেশে জেলা আওয়ামী লীগ দলীয় সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। এ ঘটনাকে প্রশাসনের ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়ে তাকে নিঃশর্ত মুক্ত করতে বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুর ভাই আব্দুল বাতেন তদবির শুরু করেন। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতারা বিষয়টি জানতে পারলে প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে জানান। প্রধানমন্ত্রী ক্ষুব্ধ হয়ে আবদুল বাতেনকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পদ থেকে অব্যহতি দেওয়ার নির্দেশ দেন।

বিজ্ঞাপন

আওয়ামী লীগের রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামালের নির্দেশে জেলা আওয়ামী লীগ আবদুল বাতেনকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ১৪ এপ্রিল থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে উল্লেখ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

জানতে চাইলে পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল রহিম লাল সারাবাংলাকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে, কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে আব্দুল বাতেন বিভিন্ন বিতর্কিত কাজ করে আসছিলেন বলে অভিযোগ ছিল। এছাড়াও সরকারি নীতিমালা না মেনে অবৈধ নৌবন্দর পরিচালনার অভিযোগও ছিল তার বিরুদ্ধে। জামায়াত-বিএনপির লোকজনকে প্রশ্রয় দেওয়া ও ক্ষমতার অপব্যবহারসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে।

রেজাউল রহিম লাল আরও বলেন, আবদুল বাতেনের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগের কারণে সবাইকে বিব্রত হতে হয়েছে বারবার। এবার ত্রাণের চাল চুরি করে গ্রেফতার হওয়া চেয়ারম্যানের পক্ষে তদবির করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে দল থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, ত্রাণের চাল চুরির ঘটনায় কোরবান আলী সরদারকে সব পদ থেকে বহিষ্কার করার পর বেড়ার পৌর মেয়র আব্দুল বাতেন ছাড়াও তার পক্ষ নেন পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ ফিরোজ কবীর। পুরো বিষয়টিকে প্রশাসনের ষড়যন্ত্র দাবি করে কোরবান আলী সরদারের পক্ষে জামিনের জন্য নেতাকর্মীদের নিয়ে পাবনা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতেও যান এমপি।

আদালত চত্বরে ফিরোজ কবীর গণমাধ্যমকে বলেন, ঢালারচর একটি সন্ত্রাসী ও চরমপন্থি অধ্যুষিত এলাকা। নিরাপত্তার স্বার্থে চেয়ারম্যান কোরবান আলী সরদার চালের বস্তা ইউনিয়ন পরিষদে না রেখে নিজ গুদামে মজুত করছিলেন। তার আত্মসাতের কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। কোনো একটি মহল তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।

ইউপি চেয়ারম্যান এমপি টুকুর ভাই চালচোর চালচোরকে সমর্থন দল থেকে অব্যাহতি পৌর মেয়র আব্দুল বাতেন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর