Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘সমালোচনাকারীদের বলবো ত্রাণ নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ান’


১৫ এপ্রিল ২০২০ ১৩:৩১

ফাইল ছবি

ঢাকা: যারা সরকারের সমালোচনায় ব্যস্ত তাদের ত্রাণ নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার (১৫ এপ্রিল) গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে অনুদানের চেক গ্রহণের সময় ভিডিও কনফারেন্সে এই কথা বলেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্ভাগ্য অনেকে শুধু সমালোচনাই করে যাচ্ছেন, তারা মানুষকে কোনো সাহায্য করছে না। তাদের বলবো, কথা না বলে মানুষের পাশে দাঁড়ান। সরকার তার দায়িত্ব সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন।

প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে আর্থিক অনুদান গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বিত্তবানদের প্রতি অনুরোধ করেন, তারা যেন ভিড় এড়িয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে ত্রাণ বিতরণ করেন।

যে দলেরই হোক, ত্রাণ নিয়ে কোনো ধরনের দুর্নীতি হলে তাদের বিরুদ্ধে আবারও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী জানান, প্রত্যেক পরিবারের জন্য কার্ড চালু করা হবে যেন সবার ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়া যায়। করোনাভাইরাসের এই দুঃসময় পার করে সকলেই যেন স্বাভাবিকভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারে সেজন্য তিন বছর মেয়াদী পরিকল্পনার কথাও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ।

বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়বে; সেজন্য আগাম ব্যবস্থা হিসেবে প্রণোদনা প্যাকেজ প্রবর্তন করেছে সরকার। ত্রাণের সুবিধা যাতে প্রত্যেকেই পায়; সেই সুবিধা নিশ্চিতে সরকার কাজ করছে বলেও জানান শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘৬৮ হাজার জায়গায় আমরা ঠিকমতো দিয়ে যাচ্ছি, সেখানে পাঁচ-সাতটা জায়গায় একটু সমস্যা হয়, আমার তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থাও নিয়েছি। এটা নিয়ে তারা চিৎকার করে যাচ্ছেন তারা কিন্তু একটা মানুষকেও একটি পয়সা দিয়ে সাহায্য করছে না। মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে না। কিন্তু তাদের কথাটা বিক্রি করেই যাচ্ছেন। এ ধরনের লোক থাকবেই, সব সমাজেই থাকে। তারা কথা বেচেই যাবে এটাই তাদের প্রফেশন। এটাই তারা করে যাচ্ছেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এত কথা না বলে কয়েকটা মানুষকে সাহায্য করেন। এই দুঃখের সময়ে মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়ান। মানুষকে নিজে কতটুকু দিলেন সে হিসেবটা করুন।‘

দায়িত্বের বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন আছেন জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘আমরা আমাদের দায়িত্ববোধ সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন এবং সেটা আমরা কার্যকর করে যাচ্ছি। চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিটি সদস্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। সমগ্র বাংলাদেশব্যাপী আমাদের যে নেতা-কর্মী তাদেরকেও আমরা নির্দেশ দিয়েছি। তারাও মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। সরকারিভাবে যা দেওয়া হচ্ছে পাশাপাশি বেসরকারিভাবে যে যতটুকু পারছেন সাহায্য করে যাচ্ছেন।’

তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষকে যেমন বিনামূল্যে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছি তেমনি ১০ টাকা কেজি মূল্যে ওএমএস-এর মাধ্যমে চাল সরবরাহের ব্যবস্থা করেছি। যারা তালিকার বাইরে রয়েছে তাদের জন্য আমরা কার্ড তৈরির উদ্যোগ নিয়েছি। প্রতিটি মানুষ যেন সহায়তাটা পায় সেটা আমরা নিশ্চিত করতে চাই। যাতে প্রত্যেকের ঘরে এই ত্রাণ সহযোগিতাটা পৌঁছে যায়।’

‘রাত্রে রাত্রে বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। যাতে করে কেউ ভিড় না করে। একসঙ্গে জমা না হয়। নতুন করে কেউ যাতে সংক্রমিত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’

ত্রাণ সহযোগিতায় এগিয়ে আসা ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানকে আন্তরিক ধন্যবাদও জানান প্রধানমন্ত্রী।

এছাড়া বিচ্ছিন্নভাবে জনসমাগম করে ত্রাণ বিতরণ না করে প্রশাসনের মাধ্যমে সমন্বিতভাবে ত্রাণ বিতরণ করার পরামর্শ দিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘এক জায়গায় জড়ো হওয়া বা ভিড় করে ত্রাণ বিতরণ করবেন না। ফলে করোনাভাইরাস সংক্রমিত হতে পারে। যারা সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন তারা সরকার, প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় ত্রাণটা বিতরণ করেন যাতে লোক সমাগম না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন।’

‘প্রত্যেকটি এলাকায় কমিটি করে দিয়েছি। স্বেচ্ছাসেবকরা রয়েছে। তাদের মাধ্যমে ত্রাণটা বিতরণ করলে সকলেই পাবে। কেউ বাদ যাবে না।’

তিনি বলেন, আজকের যে দুঃসময় সেটা একদিন কেটে যাবে এবং বাংলাদেশ আবারও এগিয়ে যাবে এবং এই বাংলাদেশ জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ হিসেবেই ইনশাল্লাহ আমরা গড়ে তুলবো।

করোনা পরিস্থিতিতে ক্ষতির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই করোনা ভাইরাস আসার পর অর্থনৈতিক গতিধারা কিছুটা শ্লথ হয়ে গেছে। শুধু বাংলাদেশ না, সারা বিশ্বব্যাপীই এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। করোনাভাইরাসে সমগ্র বিশ্ব বলতে গেলে স্থবির হয়ে আছে।’

সবাইকে সচেতন থাকা, জনসমাগম এড়িয়ে চলা এবং স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশের মানুষকে বাঁচাতে হবে, মানুষকে সুরক্ষিত করতে হবে, পরিবারকে সুরক্ষিত করতে হবে। সে কারণে আহ্বান জানিয়েছি পরিবার নিয়ে একসঙ্গে থাকুন সেটা ঠিক আছে কিন্তু বাইরের লোকের সঙ্গে না মেশা।’

‘যেখানে লোক সমাগম সেখানে না যাওয়া, নিজেকে সুরক্ষিত করা এবং নিজেকে সুরক্ষিত করার সঙ্গে সঙ্গে অপরকেও সুরক্ষিত করা। সেই দায়িত্ব সকলকে পালন করতে হবে। আমি জানি এটা অনেকের কষ্ট হচ্ছে।’

৩৩টি ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে অনুদান হিসেবে নগদ অর্থ ও পিপিই প্রদান করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তার মূখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এসব অনুদান গ্রহণ করেন। এ সময় ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী সংযুক্ত ছিলেন।

টপ নিউজ প্রধানমন্ত্রী


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর