ঢাকা: শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতন পরিশোধে আরেক দফা সময় চেয়েছে তৈরি পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। সংগঠনটি বলছে, পূর্ব প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ১৬ এপ্রিলের মধ্যে বেতন পরিশোধের কথা ছিল কারখানাগুলোর। তবে ছুটি দীর্ঘায়িত হওয়ায় এই সময়ের মধ্যে অনেক কারখানার পক্ষেই বেতন পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক আশা করছেন, চলমান পরিস্থিতিতে আগামী ২০ এপ্রিলের মধ্যে বেশিরভাগ কারখানায় বেতন পরিশোধ করা সম্ভব হবে। ওই সময় হাতেগোনা কিছু কারখানায় বেতন দেওয়া বাকি থাকবে বলে ইঙ্গিত দেন তিনি।
বুধবার (১৫ এপ্রিল) এক অডিও বার্তায় বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক বলেন, ‘আমাদের সদস্যভুক্ত রফতানিকারক কারখানার ৭৮ শতাংশ শ্রমিক এরই মধ্যে বেতন পেয়েছেন। বাকিরাও আশা করছি ১৬ তারিখের মধ্যে দিতে পারবে। তবে কিছু কারখানার পক্ষে ১৬ তারিখ বেতন দেওয়া সম্ভব হবে না। তাদের তালিকা আমাদের কাছে আছে। তাদের সহায়তার বিজিএমইএ কাজ করছে। আশা করছি ২০ তারিখের মধ্যে ওইসব কারখানার বেতন পরিশোধ করা সম্ভব হবে। যেসব এলাকায় শ্রমিক অসন্তোষ হচ্ছে, সেখানেই আমরা যোগাযোগ করে সমাধানের চেষ্টা করছি। সব শ্রমিক মার্চের বেতন পাবেই। এই নিশ্চয়তা দিচ্ছি।’
রুবানা হক আরও বলেন, ২০ এপ্রিলের পর বেতন না দিতে পারা কারখানা থাকলেও তার সংখ্যা হবে অল্প। হাতেগোনা কয়েকটি কারখানায় সে সময় বেতন দেওয়া বাকি থাকতে পারে।
এর আগে আরেক অডিও বার্তায় রুবানা বলেছিলেন, ‘আমাদের ২৪ লাখ ৭২ হাজার শ্রমিকের মধ্যে ১৯ লাখ ১৯ হাজার ৬০০ শ্রমিকের বেতন দেওয়া হয়ে গেছেন, তা প্রায় শতকরা ৭৮ ভাগের কাছাকাছি। আমরা আশা করছি আগামীকালের মধ্যে ৮০ ভাগ শ্রমিক বেতন পেয়ে যাবেন। বাকি যে শ্রমিকরা থাকবেন, চেষ্টা করব ২০ তারিখের মধ্যে তাদের বেতন দেওয়ার প্রক্রিয়া শেষ করতে।’
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘আমরা আমাদের দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে সব ব্যাংকের কাছে আবেদন করেছি, কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বলে দিয়েছে, প্রত্যেকেই আমাদের রিকোয়েস্ট রাখার চেষ্টা করছেন। কিন্তু এমনও হয়েছে, আমাদের সদস্য নয়— এমন কারখানাতেও আন্দোলন হয়েছে। তাই সবার সুবিধার্থে তালিকা করে প্রতিটি ব্যাংকে বলার চেষ্টা করছি, আশা করি তারা আমাদের কথা রাখবেন। একটি শ্রমিকও মার্চ মাসের বেতন ছাড়া থাকবেন না। যেহেতু গণপরিবহনের এখন অসুবিধা এবং অনেক শ্রমিককেই ক্যাশে বেতন দিতে হয়, তাই ডিসবার্সমেন্টে কিছু সমস্যা হচ্ছে।
বিজিএমইএ জানিয়েছে, তাদের ২২৭৪টি সদস্য কারখানার মধ্যে ১১৮৬টি পোশাক কারখানায় মার্চ মাসের বেতন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার ২০১টি, গাজীপুরে ৪৩২টি, সাভার-আশুলিয়ায় ২৪৩টি, নারায়ণগঞ্জে ১১৮টি, চট্টগ্রামের ১৫৬টি ও অন্যান্য এলাকার ৩৬টি কারখানায় মার্চ মাসের বেতন হয়েছে। সে হিসাবে বিজিএমইএ’র সদস্যভুক্ত ৫২ শতাংশ কারখানায় মার্চ মাসের বেতন হয়েছে।
অন্যদিকে বিকেএমইএ’র চালু থাকা ৮৩৩টি কারখানার মধ্যে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত ৩১৮টিতে মার্চ মাসের বেতন হয়েছে। তবে বুধবার (১৫ এপ্রিল) সংগঠনটির পক্ষ এ সংক্রান্ত সর্বশেষ তথ্য জানাতে অপারগাত প্রকাশ করা হয়।
এদিকে, বুধবার ঢাকা ও গাজীপুরের অনেক জায়গাতেই মার্চ মাসের বেতনের দাবিতে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছে। টানা কয়েকদিন ধরেই বেশি কিছু স্থানে বিক্ষোভ চলছে।