Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শিওরক্যাশ থেকে শতাধিক কর্মী ছাঁটাই


১৬ এপ্রিল ২০২০ ১৩:২৩

ঢাকা: শতাধিক কর্মী ছাঁটাই করেছে ব্যাংকিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ‘শিওরক্যাশ’। শ্রমিকদের অভিযোগ করোনা পরিস্থিতির মধ্যে নিয়ম না মেনে তাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির হেড অব মার্কেটিং কমিউনিকেশন কর্মকর্তা মাশরুর হাসান মীম সারাবাংলাকে বলেন, ‘কর্মী ছাঁটায়ের খবরটি অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য। এটি করোনার সংকটকালে ঘটেছে বলে খুব খারাপ লাগছে। কিন্তু গত ছয়-সাত মাস ধরে আমরা শিওরক্যাশের সামগ্রিক কার্যক্রমের দক্ষতা বাড়াতে কাজ করছি। এরই অংশ হিসেবে কোম্পানীর নেতৃত্ব পর্যায়সহ বিভিন্ন বিভাগে লোকবল বাড়ানো হয়েছে।’

মাশরুর হাসান মীম বলেন, ‘সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা আমাদের প্রায় দুই কোটি গ্রাহকের সেবার মান বাড়াতে এবং প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকার জন্য আমাদের বিক্রয় বিভাগটির অবকাঠামোগত কিছু পরিবর্তন এনেছি। ফলে কিছু পদ বিলোপ করতে হয়েছে। এটি দুর্ভাগ্যজনক যে এই দুঃসময়ে এটি ঘটেছে।’

তবে কর্মীদেরকে নিয়মানুযায়ী প্রাপ্য অর্থ পরিশোধ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

তবে একাধিক চাকুরিচ্যুত কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে দাবি করা ছয়-সাত মাস ধরে এ প্রক্রিয়া চালানোর কথা বলা হলেও, তাদের অভিযোগ কোম্পানির এমন কথা ভিত্তিহীন। কর্মীরা অভিযোগ করে বলছেন, ছাঁটাই করার বিষয়টি গত ৯ তারিখের আগে কখনও তাদের সঙ্গে আলাপও করা হয়নি। আগে থেকে ছাঁটাই প্রক্রিয়া শুরু তো দূরের কথা। তাই কর্মীরা বলছেন, কোম্পানি যদি এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করে করোনা পরিস্থিতি উন্নতি হলে তারা আইনগত ব্যবস্থাসহ আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেবেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চাকুরিচ্যুত একজন কর্মী সারাবাংলাকে বলেন, ‘গত ৩ এপ্রিল এইচআর বিভাগ থেকে একটা মেইল পাঠিয়ে জানানো হয় করোনার কারণে সবাই বাসায় এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করে কাজ করতে হবে। এরপর আমরা বাসায় এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করে বাহিরে কাজ করেছি। কিন্তু এর মধ্যেই ৯ এপ্রিল অপর একটা মেইলে জানানো হয় আমাদের ১০৭ জনকে চাকুরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে করোনা মহামারিতে আর্থিক সংকটের কারণে। এ মেইল পাওয়ার পর থেকে রীতিমত আমিসহ সকলেই যেন মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি।’

অপর একজন চাকুরিচ্যুতকর্মী সারাবাংলাকে বলেন, ‘কোম্পানির দাবি অনুযায়ী যদি আগে থেকেই চাকুরিচ্যুত করার পরিকল্পনা থাকত তাহলে সেটি অন্তত এক মাস আগেও বলতে পারত। তাহলে আমরা অন্য জায়গায় চাকরি খুঁজতাম। কিন্তু এমন সময় চাকুরিচ্যুত করল যখন সমগ্র দেশ স্থবির হয়ে আছে। এ মুহূর্তে কোথায় যাব চাকরি খুঁজতে?’

নিজের অসহায় অবস্থার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘দুই ছেলে-মেয়ে, স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় ভাড়া বাসায় থাকি। বেতনের টাকা দিয়ে বাসা ভাড়া দিই, নিজের সংসার খরচ এবং বাড়িতে বাবা-মা ও ভাই-বোনদের জন্য টাকা পাঠাই। হঠাৎ করে এমন সিদ্ধান্তের খবর শুনে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছি। কী করব বুঝতে পারছি না।’

প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ড. শাহাদাৎ খানের ব্যবহৃত নাম্বারে কল দিলে তিনি রিসিভ না করে কল কেটে দেন। এ সময় তিনি ‘প্লিজ টেক্স মি’ লেখা একটি মেসেজ পাঠান। এরপর প্রতিবেদকের পক্ষ থেকে বিষয় উল্লেখ করে মেসেজ পাঠালেও তাতে তিনি কোনো সাড়া দেননি।

উল্লেখ্য, ব্যাংকিং পদ্ধতিতে সেবাদানকারী ‘শিওরক্যাশ’ প্রতিষ্ঠানটি বাণিজ্যিকভাবে যাত্রা শুরু করে ২০১৫ সালে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির ২ কোটির মতো গ্রাহক রয়েছে। শিওরক্যাশের মাধ্যমে গ্রাহক টাকা জমা ও উত্তোলন, ইউটিলিটি সেবার বিল পরিশোধ, রেমিটেন্স পাঠানো, স্কুল-কলেজের ফি পরিশোধসহ বিভিন্ন ধরনের আর্থিক লেনদেন করে থাকেন।

এরইমধ্যে প্রতিষ্ঠানটি মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি প্রদানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় চুক্তি সই করেছে। এর মাধ্যমে ১ কোটি ৩০ লাখ প্রাথমিক শিক্ষার্থীর মধ্যে উপবৃত্তির টাকা বিতরণ করছে সরকার।

করোনা মোকাবিলা করোনাভাইরাস মোবাইল ব্যাংকিং শিওরক্যাশ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর