ঢাকা: দুই বাসের রেষারেষিতে হাত হারিয়ে তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীব হাসানের মৃত্যুর দুই বছর পার হলেও ক্ষতিপূরণের এক টাকাও পায়নি তার পরিবার। এক মাসের মধ্যে রাজীবের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা দিতে স্বজন পরিবহনকে আপিল বিভাগের নির্দেশের ছয় মাস পার হলেও তার কিছুই পায়নি পরিবার।
শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) এমনটিই জানিয়েছেন রাজীবের মেঝোখালা খাদিজা বেগম লিপি। গতকাল রাজীবের মৃত্যুর দুই বছর পূর্ণ হয়েছে। এই দুই বছরে রাজীবের ছোট দুই ভাই আদালতের নির্দেশে ক্ষতিপূরণ পায়নি। রাজীবের মৃত্যুর পর অনেকে সাহায্যের আশ্বাস দিলেও কেউই এখন আর খবরও রাখে না।
করোনায় কারণে রাজীবের দুই ভাইসহ স্বজনেরা এখন গ্রামে অবস্থান করছেন। রাজীবের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঘরে বসেই দোয়া-ক্বিরাত করছেন তার পরিবারের সদস্যরা।
রাজীবের মেঝো খালা খাদিজা বেগম লিপি সারাবাংলাকে জানান, ‘রাজীবের মৃত্যুর দ্বিতীয় বার্ষিকী গেল। আদালতের নির্দেশের পরও স্বজন পরিবহন একটাকাও দেয়নি। করোনার কারণে রাজীবের ছোট দুই ভাইসহ আমরা গ্রামে আছি। কিছুটা ক্ষতিপূরণ পেলেও রাজীবের ছোট ভাই দুটি কিছু করে চলতে পারতো।’
তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীব হাসানের পরিবারকে এক মাসের মধ্যে ১০ লাখ টাকা দিতে স্বজন পরিবহনকে গত বছরের ১৩ অক্টোবর নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।
হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী ২৫ লাখ করে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার রায় স্থগিত চেয়ে স্বজন পরিবহন আবেদন করলে ওই বছরের ১৭ জুলাই চেম্বার বিচারপতি বিষয়টি আপিল বিভাগের পূর্নাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। পরে ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
আদালতে স্বজন পরিবহনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম বাবুল। রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। গত বছরের ২৩ জুন রাজীবের দুই ভাইকে ২৫ লাখ করে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিলে আবেদন করে স্বজন পরিবহন।
এর আগে, ২০১৮ সালের ৩ এপ্রিল রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকায় দুই বাসের রেষারেষিতে হাত কাটা পড়ে কলেজ ছাত্র রাজীবের। এ ঘটনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর ৪ এপ্রিল রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
হাইকোর্ট এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের রুল জারিসহ রাজীবের চিকিৎসার খরচ দুই বাস মালিক বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনকে নির্দেশ দেন। এরপর আবেদনটি আপিল বিভাগের নির্দেশ মোতাবেক হাইকোর্টে রুল শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে দুই পরিবহনকে ২৫ লাখ করে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।