ত্রাণের জন্য ভাড়া করা লোক দিয়ে বিক্ষোভ: তথ্যমন্ত্রী
১৭ এপ্রিল ২০২০ ১৯:৫৩
ঢাকা: রাজনৈতিক ইন্ধন দিয়ে লোক ভাড়া করে এনে বিভিন্ন জায়গায় সংগঠিত করে ত্রাণের জন্য বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়েছে অভিযোগ করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন এ ধরনের কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই উচিৎ নয়।
শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডে সরকারি বাসভবনে সমসাময়িক বিষয়ে দেওয়া বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, গত কয়েক দিনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ত্রাণের জন্য বিক্ষোভ, বিভিন্ন গণমাধ্যমে এটা আপনারা দেখতে পেয়েছেন। কিন্তু আজকেই গোয়েন্দা তথ্যের বরাত দিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, এই বিক্ষোভের অনেকগুলোর পেছনে রাজনৈতিক ইন্ধন ছিল।’
‘সরকার প্রতিটি দুস্থ মানুষের কাছে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য বদ্ধপরিকর। শুধুমাত্র সরকারের ত্রাণ মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় নয়; সরকারের পক্ষ থেকে পুলিশ বাহিনী, জেলা প্রশাসন এবং সিটি কর্পোরেশনগুলো মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছে’ জানিয়ে ড. হাছান বলেন, ‘এমনকি ত্রাণের জন্য হট লাইন ৩৩৩ খোলা হয়েছে। সেখানে কেউ ফোন করলে তাকেও ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এমন ব্যবস্থা আশেপাশের কোন দেশে করা হয়েছে, আমি অন্তত জানি না।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আক্ষেপ করে বলেন, ‘এই যখন ব্যবস্থা করা হয়েছে তখন প্রতিদিন বিএনপির পক্ষ থেকে সমালোচনা আর কয়েকটি ফটোসেশন করা হয়। আপনারা জানেন রাজশাহীতে একজন ফৌজদারি অপরাধে গ্রেফতার হয়েছে, তিনি নাকি ছাত্রদলের নেতা, তাকে ছেড়ে দিতে হবে দাবি বিএনপির। ফৌজদারি অপরাধে কাউকে গ্রেফতার কি সরকার বন্ধ রাখবে? এটা হচ্ছে আমার প্রশ্ন।’
‘আমি বিএনপিকে অনুরোধ জানাব, অহেতুক সমালোচনা, ফটোসেশন আর উস্কানি দেওয়ায় ব্যস্ত না থেকে মানুষের পাশে দাঁড়ান’ বলেন ড. হাছান মাহমুদ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১ লাখ কোটি টাকা বরাদ্দ করোনা পরিস্থিতিতে খেটে খাওয়া মানুষের জীবন-জীবিকাসহ সমগ্র দেশ ও অর্থনীতিকে বাঁচাবে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলারের এ বরাদ্দ দেশের মোট জিডিপির ৩ দশমিক ৩ শতাংশ।
এছাড়াও বহু সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি চলমান উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ৫০ লাখ নিম্নআয়ের পরিবারের জন্য মাসে পরিবারপ্রতি ৩০ কেজি চাল ১০ টাকা কেজি দরে বছরে ৭ মাস দিচ্ছে সরকার যা মূলত আড়াই কোটি মানুষের অন্নসংস্থান করছে। বছরপ্রতি সময় বাড়ানোরও চিন্তা রয়েছে।
ত্রাণ বিতরন প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ৭০ হাজারের বেশি স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি আছে, সেখানে কিছু লোক অনিয়ম ঘটাচ্ছে। কিন্তু অনিয়মের একটি ঘটনাও আমাদের কাম্য নয়। প্রধানমন্ত্রী তাদের কঠোর হস্তে দমন করার জন্য ইতিমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছেন।
যেখানে এ ধরনের অনিয়ম পাওয়া যাচ্ছে সেখানেই সরকারের প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘গত কয়েকদিনে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, এর সঙ্গে বিভিন্ন দলের সমর্থকরা যুক্ত। বিএনপির বেশ কয়েকজন এখানে আছেন। কে কোন দলের সেটি না দেখে সরকার যে ঘটনা ঘটাচ্ছে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। আরও কঠোরভাবে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘এখানে শুধু আওয়ামী লীগের গ্রাম পর্যায়ের যে কজন নেতৃবৃন্দের নাম এসেছে, তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে কয়েকজন চেয়ারম্যান মেম্বারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তাদেরকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।’