করোনা মোকাবিলায় সদস্য দেশগুলোর পাশে থাকবে বিশ্বব্যাংক
১৮ এপ্রিল ২০২০ ১২:০৪
ঢাকা: বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস বলেছেন করোনার কারণে উৎপাদন, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান এবং বাণিজ্য হ্রাসের কারণে মহামন্দা থেকে বিশ্ব একটি গভীর মন্দার দিকে যেতে পারে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং করোনার প্রভাব ঠেকাতে সদস্য দেশগুলোর যে কোনো প্রয়োজনে পাশে থাকবে বিশ্বব্যাংক।
শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাত ৮ টায় বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ’র বসন্তকালীন ভার্সুয়াল বৈঠক উপলক্ষে ওয়াশিংটনে অবস্থিত সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে খাদ্য নিরাপত্তা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। এ ক্ষেত্রে একটি টিমওয়ার্কের মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে। অর্থাৎ আন্তর্জাতিকভাবে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার উদ্যোগ নেওয়া হবে। একক কোনো দেশের পক্ষে এটি সম্ভব হবে না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে একত্রিত করে খাদ্য উৎপাদনসহ এক্ষেত্রে সব ধরনের উদ্যোগে ব্যবহার করা হবে। সেই সুফল সব দেশের মানুষই ভোগ করবে। এদিকে বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যেও স্থবির হয়ে পড়েছে। চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ চেইন নষ্ট হয়েছে। এ অবস্থায় চিকিৎসা সামগ্রী যদি এক দেশ থেকে আরেক দেশ নিতে হয় সেক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংক সহায়তা দেবে। পাশাপাশি যখন কোন সদস্য দেশ বড় ধরনের সমস্যায় পড়বে এবং তারা যদি সহায়তা চায় তাহলে পাশে দাঁড়াবে বিশ্বব্যাংক। এক্ষেত্রে কারিগরি, আর্থিক, মেডিকেল এবং আইডিয়া দিয়ে সহায়তা করা হবে।
বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস জানান, কোভিড-১৯ বা করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সহায়তার ক্ষেত্রে প্রধানত তিনটি বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। এগুলো হচ্ছে-স্বাস্থ্য, কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা। অন্যান্য অনেক বিষয়ের সঙ্গে এই তিনটি বিষয়কে আলাদা গুরুত্ব দেওয়ার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, আগে প্রয়োজন মানুষের জীবন বাঁচানো। তারপরই আসবে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়টি। এ ছাড়া বিশ্বব্যাপী উৎপাদন ব্যবস্থা ঠিক রাখতে কৃষির দিকে নজর দিতে হবে।
সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট আরও বলেন কোভিড-১৯ এর প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্বব্যাংক এরইমধ্যে ১৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এটিকে ফাস্ট্রট্র্যাক সহায়তা প্যাকেজ বলা হচ্ছে। এই প্যাকেজের আওতায় ১০০টি দেশকে সহায়তা দেওয়া হবে। এরই মধ্যে ৬৪টি দেশে সহায়তা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে যেসব দেশ বিশ্বব্যাংকের সহজ শর্তের ঋণ গ্রহণ করছেন অর্থাৎ উন্নয়নশীল দেশ, সেগুলোতে সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কারণ বিশ্বে যত হত দরিদ্র্য মানুষ রয়েছে তার দুই তৃতীয়াংশই রয়েছে এসব দেশে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যারা বেকার হয়ে যাবেন তাদের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। যে সদস্য রাষ্ট্র সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা যত বাড়াতে চাইবে তাদের সহায়তা দেওয়া হবে।’
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) অতিরিক্ত সচিব ও বিশ্বব্যাংক উইং এর প্রধান শাহাবুদ্দিন পাটোয়ারি শুক্রবার সারাবাংলাকে জানান, এরইমধ্যে বিশ্বব্যাংকের কাছে ৮৫ কোটি ডলার সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কোভিড-১৯ মোকাবিলার জন্য ১০ কোটি ডলার, চলতি অর্থবছর বাজেট সহায়তা হিসেবে ২৫ কোটি ডলার এবং আগামী অর্থবছরের বাজেট সহায়তা হিসেবে ৫০ কোটি ডলার ঋণ চাওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি ইআরডি থেকে চিঠি দিয়ে এই সহায়তার চাওয়ার পর বিশ্বব্যাংক ঘোষিত ফাস্ট্র ট্র্যাক সহায়তা প্যাকেজ থেকে ১০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করা হয়েছে।