Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জানাজায় হাজার হাজার মানুষ, পুলিশ বলছে ‘কিছুই করার ছিল না’


১৮ এপ্রিল ২০২০ ১৩:৩৯

ঢাকা: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সিনিয়র সহ-সভাপতি আল্লামা জুবায়ের আহমদ আনসারীর জানাজায় হাজার হাজার লোকের সমাগম হয়েছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি থাকলেও স্থানীয়রা সামাজিক দূরত্বের নিয়ম লঙ্ঘন করে জানাজা করেছেন। এতে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়লেও পুলিশ বলছে, বিষয়টি নিয়ে তাদের কিছু করার ছিল না।

শনিবার (১৮ এপ্রিল) সকাল ১০টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় জুবায়ের আহমদ আনসারী প্রতিষ্ঠিত জামিয়া রহমানিয়া বেড়তলা মাদরাসা প্রাঙ্গণে নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শুরুর আগে থেকেই জেলা ও জেলার আশেপাশের এলাকা থেকে মুসল্লিরা জমায়েত শুরু করেন। তবে জানাজা মাদরাসা মাঠ ছাড়িয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুইপাশে ছড়িয়ে যায়। এ ছাড়া ওই এলাকার বিভিন্ন ভবনের ছাদেও মানুষের উপস্থিতি দেখা যায়।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাঈদ বলেন, ‘আমরা আলেমদের সঙ্গে আলোচনা করেছিলাম। বলেছিলাম লোক সমাগম যেন না হয়। তারপরও লোক সমাগম হয়েছে।’

আপনারা লোক সমাগম মোকাবিলায় শক্ত ব্যবস্থা নিতে পারতেন মন্তব্য করলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, ‘বিষয়টি সেনসেটিভ, তাই আমরা শক্ত ব্যবস্থা নিতে পারিনি।’

হাজার হাজার লোক জমায়েতের মাধ্যমে এই যে জানাজা এতে করোনার ঝুঁকি বাড়বে কি না জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, ‘অবশ্যই ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। কিন্তু আমাদের খুব বেশি কিছু করার ছিল না।’

তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দাবি করেন, পুলিশ আগে থেকেই উদ্যোগী হওয়ায় জানাজায় লোক সমাগম কমেছে। তা না হলে মুসল্লি সমাগত হয়ত আরও বাড়ত।

বিজ্ঞাপন

করোনা পরিস্থিতির মধ্যে জানাজায় এত লোক সমাগমের বিষয়ে সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ.এস.এম মোসা সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা জানাজার বিষয়টি অবগত ছিলাম। তবে এত মানুষ যে হবে আসলে ভাবিনি।’

‘এর বেশি আর কোনো মন্তব্য করতে চাই না’ বলেন ইউএনও।

এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. মো. একরাম উল্লাহ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা বিষয়টি শুনেছি। সরাইলে যোগাযোগ করছি। বর্তমানে বাংলাদেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ এড়ানোর জন্য সামাজিক বিচ্ছিন্নতা মেনে চলতে বলা হয়েছে। এ ধরনের জনসমাগম অবশ্যই করোনা পরিস্থিতির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।’

এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

আল্লামা জুবায়ের আহমদ আনসারী শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তার নিজ বাসভবনে মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর।

ইসলামি এই বক্তা সরাইলে জামিয়া রাহমানিয়া মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপালের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি প্রচুর মসজিদ-মাদরাসা প্রতিষ্ঠা ও সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

২০১৬ সাল থেকে তিনি ক্যানসারে ভুগছিলেন।

জানাজায় ইমামতি করেন মাওলানা আনসারীর ছেলে হাফেজ মাওলানা আসাদ উল্লাহ।

অন্যদের মধ্যে জানাজায় অংশ নেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের আমির মাওলানা ইসমাইল নূরপুরী, মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা জালাল উদ্দিন, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা মহসিনুল হাসান, জেলার শীর্ষ স্থানীয় আলেম মাওলানা সাজিদুর রহমান, মাওলানা মোবারক উল্লাহ, মাওলানা আ. রহিম কাসেমী, বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখা সভাপতি হাফেজ মাওলানা ইদ্রিস, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা বোরহান উদ্দিন কাসেমী, জেলা খেলাফত মজলিশের সভাপতি হাফেজ মাওলানা আবদুল আজিজ, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মাঈনুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ইউসূফ ভূইঁয়াসহ অন্যরা।

আনসারি আল্লামা জুবায়ের আহমদ আনসারী খেলাফত মজলিস

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর