‘ভোটার আইডির জটিলতায় হতদরিদ্ররা যেন ত্রাণ বঞ্চিত না হয়’
১৮ এপ্রিল ২০২০ ১৮:৩৯
ঢাকা: ঢাকা মহানগরের বস্তিগুলোসহ বিভিন্ন এলাকার দরিদ্র, শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষদের ঢাকার ভোটার না হওয়ায় সরকারি খাদ্য সহায়তা না পাওয়ায় গভীর ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট।
সংগঠনটির ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি রতন মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান শনিবার (১৮ এপ্রিল) এক যুক্ত বিবৃতিতে এই ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত লকডাউনের কারণে ঢাকা মহানগরে কর্মরত লাখ লাখ পরিবহন, রিকশা-ভ্যান-ঠেলাগাড়ি ও গৃহ শ্রমিকসহ হকার, ক্ষুদ্র চা বিক্রেতা, দিনমজুর এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকেরা বর্তমানে বেকার হয়ে চরম অমানবিক দিন যাপন করছে। তারা দিন এনে দিন খাওয়া শ্রমিক। কিন্তু সরকার বলছে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুত আছে এবং তা বিতরণ করা হচ্ছে সর্বত্র। কিন্তু বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন।
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, ঢাকা শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে মাত্র ৫০০ জনকে ত্রাণ দেওয়া হয়েছে যা প্রয়োজনের তুলনায় অতি সামান্য। সেই সহায়তা নিয়েও চরম অনিয়ম ও দুর্নীতি চলছে। তার ওপরে মরার ওপর খড়ার ঘা হিসেবে কাউন্সিলররা ঘোষণা করেছেন স্থানীয় ভোটার ছাড়া কেউ এই সহায়তা পাবেন না। আমরা জানি ঢাকা মহানগরীতে প্রায় ২ কোটি লোকের বসবাস এর মধ্যে উত্তর-দক্ষিণ মিলে মোট ভোটার সংখ্যা ৫৪ লাখ ৬৩ হাজার ৩৬৭ জন। প্রতি ওয়ার্ডে ৫০০ জন দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিলে ১২৯টা ওয়ার্ডে মাত্র ৬৪ হাজার ৫০০ জন মানুষ এই সহায়তা পাবে।
অথচ ঢাকা মহানগরিতে পায় ৭০ লাখ শ্রমজীবী দরিদ্র মানুষ বসবাস করে। বাকি লাখ লাখ শ্রমজীবী মানুষ যারা সারা বছর ঢাকা মহানগরসহ সারাদেশকে উৎপাদন কাজ ও সেবা দিয়ে বাঁচিয়ে রাখে তাদের জীবিকা চলবে কিভাবে? তাদের তো কোনো সঞ্চয় নেই।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন শ্রমজীবী দরিদ্র মানুষকে ঘরবন্দি রেখে খাদ্য-অর্থ সহায়তা না দিয়ে সরকার শিল্প মালিকসহ বড় ব্যবসায়ীদের জন্য নানা আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করছে। নেতৃবৃন্দ সরকারের এই ধনি তোষণ ও গরীব মাারার নীতিরও তীব্র নিন্দা জানান।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ ঢাকা মহানগরে অবস্থানরত সকল দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষ যারা এখানে ভোটার নয় তাদেরকে খাদ্য বা নগদ অর্থ সহায়তার জন্য আগামী ৬ মাস আঙ্গুলের ছাপ ও মোবাইল নাম্বার দিয়ে রেশন বা খাদ্য সহায়তা কার্ড তৈরি করার জন্য জরুরি ভিত্তিতে সরকারকে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
একইসঙ্গে এই শ্রমজীবী মানুষের স্বাস্থ্য নিরাপত্তায় কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যথায় যেকোনো পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটলে এর দায়-দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে।