Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

করোনায় কর্মহীন ৫ লাখ বিমা এজেন্ট, প্রণোদনার দাবি


১৯ এপ্রিল ২০২০ ১৪:২৪

ঢাকা: করোনাভাইরাসের কারণে সারাদেশে সাধারণ ছুটি থাকায় বিপাকে পড়েছেন বিমা খাতের ৫ লাখেরও বেশি মাঠ পর্যায়ের বিমা এজেন্ট বা মাঠকর্মী। এইসব বিমাকর্মীদের নির্দিষ্ট কোনো বেতন ভাতা না থাকায় তারা চরম আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছে। এর কারণ বিমা কোম্পানির এজেন্টদের আয়ের উৎস নতুন পলিসি খোলা এবং নবায়ন ফি থেকে পাওয়া কমিশন।

লকডাউনের কারনে বিমা ব্যবসা বন্ধ থাকায় কমিশন পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ফলে ৫ লাখের অধিক কর্মহীন হয়ে পড়া বিমা এজেন্ট এবং বিভিন্ন মাঠ পর্যায়ের বিমাকর্মীদের বাঁচিয়ে রাখতে প্রণোদনা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিমা খাতের মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন।

বিজ্ঞাপন

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) সভাপতি শেখ কবির হোসেন সারাবাংলাকে সবলেন, করোনাভাইরাসের কারণে সারাবিশ্বে এখন বিপর্য নেমে এসেছে। বাংলাদেশও একটা কঠিন সময় পার করছে। আমাদের বিমা খাতও এই সমস্যার বাইরে নয়।

তিনি বলেন, এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সরকার থেকে বিমা খাতের জন্য বিশেষ প্রণোদনা দেওয়া দরকার। ইতোমধ্যে এই খাতের মাঠ পর্যায়ের ৫ লাখের অধিক বিমা এজেন্টদের বাঁচিয়ে রাখার চিন্তা করতে হবে। কারণ তাদের কোনো বেতন ভাতা নেই, তারা বিমা করার মাধ্যমে কমিশন পেয়ে থাকেন। পাশাপাশি তারা বিমা কোম্পাগুলোকেও ব্যবসা দিয়ে ঠিকিয়ে রেখেছেন। কিন্তু বর্তমানে সাধারণ ছুটি এবং মানুষ চলাচলে বিধিনিষেধ থাকায় বিমা এজেন্টরা বেকার হয়ে পড়ছেন। এই অবস্থা থেকে তাদের বাঁচিয়ে রাখতে আমরা সরকারের কাছে প্রণোদনা দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, বিমা খাতে প্রণোদনা দেওয়ার জন্য বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)‘র কাছে আমরা লিখিত প্রস্তাব দিয়েছি। আইডিআরএ থেকে বিআইএর প্রস্তবনাটি অর্থমন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মোরতুজা আলী সারাবাংলা বলেন, বিমা শিল্পের প্রধান বিক্রয়শক্তি বিমা কর্মী। কারণ তাদের সংগৃহীত প্রিমিয়াম দিয়েই বিমা কোম্পানিগুলো এগিয়ে যায়। বর্তমানে সারাদেশ লকডাউন থাকায় বিমাকর্মীরা ব্যবসা করতে না পারায়, কোনো কমিশন পাচ্ছেন না। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের বিমা কর্মীদের সুরক্ষায় প্রণোদনা দেওয়া বিশেষ প্রয়োজন।

তিনি বলেন, এই প্রণোদনা প্রথমত সরকারকে দেওয়া উচিত। সেক্ষেত্রে সরকার ২ শতাংশ সুদে বিমা কোম্পানিগুলোকে ঋণ দিতে পারে। ঋণের অর্থ থেকে কোম্পানিগুলো তাদের এজেন্টদের সুরক্ষা দিতে পারে। আবার কোনো কোনো কোম্পানি ইচ্ছা করলে তাদের ভালো এজেন্টদের জন্য কিছু টাকা অগ্রিম দিতে পারে। পরে ব্যবসা হলে কমিশন থেকে কেটে রাখবে।

জেনিথ ইসলামী লাইস ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এস এম নূরুজ্জামান বলেন, করোনাভাইরাস জনিত সসমস্য মোকাবিলায় চরম আর্থিক সংকটের মধ্যে পড়েছে বিমা কোম্পানি।

তিনি বলেন, দেশে কয়েক লাখ বিমা এজেন্ট রয়েছেন। যাদের মাসিক কোনো বেতন-ভাতা নেই। বিমা ব্যবসার ওপর পাওয়া কমিশন দিয়ে তাদের সংসার চলে। বর্তমানে লকডাউন থাকায় বিমা ব্যবসা বন্ধ রয়েছে, ফলে কমিশন পাওয়ারও কোনো সুযোগ নেই। এই অবস্থায় বিমা এজেন্টদের প্রণোদনা দেওয়া যেতে পারে।

অন্যদিকে আলেয়া বেগম নামের একজন বিমাকর্মী বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে বিমা পলিসি বিক্রি ও নবায়ন প্রিমিয়াম সংগ্রহ বন্ধ রয়েছে। এই অবস্থায় বিমা শিল্পের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মাস শেষে বেতন-ভাতা পেলেও আমাদের সেই সুযোগ নেই। এজেন্টদের সংসার চলে শুধুমাত্র কমিশনের ওপর। এই অবস্থায় আমরা খুব করুণ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি।

উল্লেখ্য দেশে সরকারি-বেসরকারি ৭৮টি জীবন বিমা ও সাধারণ বিমা কোম্পানি রয়েছে। এসব বিমা কোম্পানিতে মাঠ পর্যায়ে ৫ লাখের অধিক নারী-পুরুষ কমিশনের ভিত্তিতে কাজ করছেন, যাদেরবে বিমা এজেন্ট বলা হয়। এইসব এজেন্টারা মাসিক কোনো বেতন-ভাতা পান না। কেবল বিমা করার বিনিময়ে কমিশন পেয়ে থাকেন।

সারাবাংলা/জিএস/এমআই

এজেন্ট প্রণোদনা বিমা

বিজ্ঞাপন

নামেই শুধু চসিকের হাসপাতাল!
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৬

আরো

সম্পর্কিত খবর