Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জানাজায় গিয়েছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাড়াও ৫ জেলার মানুষ


২০ এপ্রিল ২০২০ ১৬:০৩

চট্টগ্রাম ব্যুরো: লকডাউন ভেঙে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির যোবায়ের আহমদ আনসারীর জানাজায় বিপুল জনসমাগমের তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ সদর দফতরের গঠিত কমিটি। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ওইদিন জানাজায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাড়াও আশপাশের অন্তঃত পাঁচ জেলা থেকে লোকসমাগমের প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে।

গত দুদিন ধরে তদন্ত কমিটির প্রধান পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবস্থান করছেন।

বিজ্ঞাপন

রোববার (১৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় কমিটির সদস্যরা জেলার সরাইল থানার বেড়তলা জামিয়া রাহমানিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে জানাজাস্থল পরিদর্শন করেন। এরপর সোমবার সকাল থেকে উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় পুলিশ, জনপ্রতিনিধি, গ্রাম পুলিশ, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা এবং জানাজায় অংশ নেওয়া ব্যক্তি ও প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য নেন।

অতিরিক্ত ডিআইজি ইকবাল হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ৫০ জনেরও বেশি লোকের বক্তব্য গ্রহণ করেছি। প্রত্যেকেই আমাদের কাছে ঘটনার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী। আমরা আরও কয়েকদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবস্থান করব। আরও লোকজনের বক্তব্য নেব।’

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তদন্ত কমিটি জানাজায় কি পরিমাণ লোক হয়েছিল, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাইরে কোন কোন জেলা থেকে লোকজন এসেছিল, লকডাউন ভেঙে তারা কিভাবে বিনা বাধায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঢুকতে পারল, পুলিশসহ স্থানীয় প্রশাসনের গাফেলতি এবং রাজনৈতিক মহলের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কোনো পরিস্থিতির তৈরির ইচ্ছা ছিল কি-না এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে।

বিজ্ঞাপন

জানাজায় কি পরিমাণ লোক হয়েছিল, সেই বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত ডিআইজি ইকবাল হোসেন। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘কি পরিমাণ লোকজন জড়ো হয়েছিলেন, সেটা জানতে চেয়েছিলাম। গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনকেও জিজ্ঞেস করেছি। কেউ বলে ৭-৮ হাজার, কেউ ১৫ থেকে ২০ হাজার, আবার কেউ বলে ২৫ হাজার। স্থানীয় লোকজন তো লক্ষাধিক লোক বলছে। বাস্তবে কত হয়েছে সেটা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন, স্থানীয় লোকজন এবং গোয়েন্দা সংস্থার বক্তব্যে ব্যাপক গরমিল আছে। সেটা আমাদের আরও তদন্ত করতে হবে।’

সূত্রমতে, প্রাথমিক তদন্তে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাইরে ঢাকা, কুমিল্লা, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও নরসিংদী থেকে লোকজন জানাজায় আসার তথ্য পাওয়া গেছে। বাস, ট্রাক, অটোরিকশা, রিকশা, মোটর সাইকেল, ট্রাক্টরসহ স্থানীয়ভাবে চলাচলরত বিভিন্ন যানবাহনে করে লোকজন দূর-দূরান্ত থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গেছে এবং জানাজায় অংশ নিয়েছে।

জানতে চাইলে অতিরিক্ত ডিআইজি ইকবাল হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘এতটুকু তথ্য পেয়েছি যে, জানাজায় ‍শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার লোকজন ছিল না। বাইরের জেলা থেকেও এসেছে বলে শুনেছি। তবে কোন কোন জেলা থেকে এসেছিল সেটা আমরা এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত নই।’

২২ এপ্রিল তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দেওয়ার সময় নির্ধারণ করে দিয়েছে পুলিশ সদর দফতর। তবে সময় আরও বেশি লাগবে বলে জানিয়েছেন কমিটির প্রধান পুলিশ কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন।

গত ১৭ এপ্রিল সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মার্কাসপাড়ায় নিজের বাসায় মারা যান জেলার সরাইল থানার বেড়তলা জামিয়া রাহমানিয়া মাদ্রাসারপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রিন্সিপাল যোবায়ের আহমদ আনসারী। পরদিন সকাল ১০টায় মাদরাসা প্রাঙ্গণে আনসারীর জানাজায় হাজার হাজার লোকের সমাগম হয়। মানুষের ভিড় মাদ্রাসার সীমানা ছাড়িয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে গিয়ে পৌঁছে।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে গত ১১ এপ্রিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। সেটা উপেক্ষা করে হাজার, হাজার মানুষের জানাজায় অংশগ্রহণ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

মানুষের সমাগম ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ও সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) সরিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করে পুলিশ সদর দফতর। পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (প্রশাসন ও অর্থ) ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পঙ্কজ কুমার (অপরাধ) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন (প্রশাসন)।

জানাজা টপ নিউজ ব্রাহ্মণবাড়িয়া যোবায়ের

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

উর্মিলার সংসার ভেঙে যাওয়ার কারণ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:০২

নতুন পরিচয়ে কুসুম সিকদার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:৫৭

সম্পর্কিত খবর