Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রামগড় সীমান্তের নো-ম্যানস ল্যান্ডে পড়ে থাকা নারীর ঠিকানা শনাক্ত


২৩ এপ্রিল ২০২০ ১৫:৫২

খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার সীমান্ত নদী ফেনীর নো-ম্যানস ল্যান্ডে গত ২০দিন ধরে খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকা মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর নাম-ঠিকানা শনাক্ত হয়েছে। তার নাম শাহানাজ পারভিন (৩৫)। সে কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার দইখাওয়ারচর গ্রামের জনৈক হাতেম আলী শেখ এবং ওমেলা খাতুনের মেয়ে। মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় প্রায় দুই বছর আগে বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হন এই নারী।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব রেডক্রস (আইসিআরসি) ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির (বিডিআরসিএস) যৌথ প্রচেষ্ঠায় তাকে পরিবারের স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। দুয়েকদিনের মধ্যে এই হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে পারে বলে জানা গেছে।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সূত্রে জানা যায়, গত ২ এপ্রিল সকালে ভারতীয় সীমান্ত বাহিনী (বিএসএফ) মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারীকে বাংলাদেশে পুশইনের চেষ্ঠা করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে পুশইনের চেষ্ঠা রুখে দেয় বিজিবি। পড়ে ওই নারী বিপদে পড়ে যায়। পরে প্রায় ২০ দিন ধরে ওই নারী বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্ত ফেনী নদীর মাঝখানে নো-ম্যানস ল্যান্ডে খোলা আকাশের অবস্থান করছে। এ নিয়ে দুদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মাঝে তিন দফায় বৈঠক হলেও কোনো সমাধান আসেনি। মানসিক ভারসাম্যহীন এই নারী তার বাড়ি একবার ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সাবরুম থানার দোলবাড়ি এলাকায়, আরেকবার হরিণা এলাকায় বলে জানায়। আবার এক পর্যায়ে তার বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার রইখারচর বলে জানায় ওই নারী। তার কথার ভিত্তিতে বিজিবি-বিএসএফ ঠিকানাগুলো শনাক্তের কাজ শুরু করে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রচার হলে আইসিআরসি ও বিডিআরসিএসের নজরে আসে। বিজিবি-আইসিআরসি ও বিডিআরসিএস যৌথভাবে কাজ করে নারীর নাম পরিচয় শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।

বিজিবি সূত্রে আরও জানা যায়, উল্লিখিত সংস্থার কর্মকর্তারা শাহানাজ পারভিনের বড়ভাই ওমর আলী, ছোট ভাই সাহেব আলী, আলগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিক আলী মন্ডল এবং উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবদুল কাদেরের সঙ্গে কথা বলে। এ সময় তাদের শাহানাজ পারভিনের ছবি ও ভিডিও পাঠালে তারা তা শনাক্ত করেন এবং ওই নারী প্রায় দুই বছর ধরে তিনি নিখোঁজ বলে জানান। নাম-পরিচয় নিশ্চিত হবার পর তাকে নো-ম্যানস ল্যান্ড থেকে সরিয়ে বাংলাদেশ অংশে আনা হয় এবং ভারতীয় সীমান্ত বাহিনীকে জানিয়ে দেওয়া হয়।

শাহানাজ পারভিনের বড় ভাই ওমর আলী বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমার বোন নিখোঁজ ছিলেন। হঠাৎ করে বিজিবি-আইসিআরসি ও রেড ক্রিসেন্টের লোকজন আমাদের সঙ্গে যোগায়োগ করে। তারা ছবি ও ভিডিও দেখালে আমরা নিশ্চিত হই আমার বোনের অবস্থান সম্পর্কে। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির কারণে আমরা খাগড়াছড়ির রামগড় গিয়ে বোনকে নিয়ে আসতে পারছি না। তবে শুনেছি রেড ক্রিসেন্টের লোকজন দুয়েকদিনের মধ্যে আমার বোনকে দিয়ে যাবে। যারা আমার বোনকে আমাদের কাছে পৌঁছানোর জন্য কাজ করছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।

রামগড় জোনের ৪৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. তারিকুল হাকিম বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারীর পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর আমরা তাকে নো-ম্যানস ল্যান্ড থেকে সরিয়ে এনে ভালোভাবে রেখেছি। তবে গত দুবছর ওই নারী দেশে ছিলেন না ভারতে ছিলেন, তা তিনি বলতে পারেননি। তবে বিএসএফ ও ভারতীয় লোকজন তাকে বাংলাদেশি বলেই পুশইনের চেষ্ঠা করেছিল। ইতোমধ্যে আইসিআরসি ও বিডিআরসিএস ওই নারীকে তার পরিবারের কাছে পৌঁছানোর জন্য কাজ শুরু করেছে। বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও বিএসএফকে অবগত করেছি।

এদিকে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির জাতীয় কমিটির সদস্য ও খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী বলেন, ‘এটা অত্যন্ত আনন্দের বিষয় যে, দুবছর ধরে নিখোঁজ থাকা এক নারীকে আমরা আইসিআরসির রেস্টোরিং ফ্যামিলি লিংকস (আরএফএল)-এর মাধ্যমে তার পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তরের চেষ্টা করছি। আশা করি, দুয়েকদিনের মধ্যে আমরা ওই নারীকে তার পরিবারের কাছে পাঠাতে পারব।

টপ নিউজ নো ম্যানস ল্যান্ড বিএসএফ বিজিবি রামগড় সীমান্ত


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

‘তুফান’ আসছে হিন্দি ভাষায়
৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৪৯

সম্পর্কিত খবর