খাদ্যপণ্যের মান নিশ্চিতে বিএসটিআইয়ের অভিযান জোরদারের নির্দেশ
২৩ এপ্রিল ২০২০ ২২:২৯
ঢাকা: রমজানে নিরাপদ ও মানসম্মত খাদ্যপণ্য নিশ্চিত করতে বিএসটিআইয়ের সার্ভিলেন্স কার্যক্রম জোরদারের নির্দেশনা দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। পাশাপাশি তিনি যেকোনো পরিস্থিতিতে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মান পরীক্ষাসহ প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য জরুরি সেবা চালু রাখার নির্দেশ দেন।
বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) শিল্প মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত রমজান উপলক্ষে ভোক্তা সাধারণের জন্য নিরাপদ ও মানসম্মত খাদ্যপণ্য নিশ্চিতকরণ, শিল্পখাতের জন্য প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ যথাযথ বাস্তবায়ন ও করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর ৩১ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কার্যকর কৌশল নির্ধারণবিষয়ক সভায় তিনি এসব নির্দেশনা দেন। শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘রমজান উপলক্ষে বিভিন্ন সুপার শপ এবং চালু থাকা খাদ্যপণ্যের দোকানগুলোতে সার্ভিলেন্স বাড়িয়ে নিরাপদ খাদ্যপণ্যের যোগান নিশ্চিত করতে হবে। পণ্যের উৎপাদক, ক্রেতা-ভোক্তা সাধারণসহ সবাইকে মানসম্পন্ন খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও ব্যবহারের বিষয়ে বিএসটিআই সম্প্রতি যে সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে, তার আওতা বাড়াতে হবে।’
এসময় মন্ত্রী খাদ্য উৎপাদনকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে গুণগতমানের পণ্য উৎপাদন এবং বিপণনের জন্য বিএসটিআইয়ের পক্ষ থেকে সতর্কতামূলক চিঠি পাঠানোর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় জনসচেতনতামূলক বিজ্ঞপ্তি প্রচার এবং মোবাইল এসএমএস করে সবাইকে সচেতন করার পরামর্শ দেন।
কৃষকদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, ‘দেশে বর্তমানে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় অধিক পরিমাণে ইউরিয়া সার মজুদ রয়েছে। সুতরাং সার নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। আপনারা উৎপাদন অব্যাহত রাখুন, শিল্প মন্ত্রণালয় আপনাদের চাহিদামাফিক সারের যোগান দেবে।’
সভায় জানানো হয়, বর্তমানে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের আওতাধীন ১৫টি চিনিকলে ৬৫ হাজার মেট্রিক টনেরও বেশি চিনি মজুদ রয়েছে। এছাড়া বিসিআইসির আওতাধীন সার কারখানা ও গোডাউনসমূহে বর্তমানে মোট ৯ লাখ ৩৬ হাজার ২৭৩ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার মজুদ রয়েছে।
দেশে এখন লবণেরও পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। করোনার প্রকোপের মাঝেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে লবণ মাঠ এবং লবণ মিলগুলোতে উৎপাদন অব্যাহত রয়েছে। চলতি লবণ মৌসুমের ২০ এপ্রিল ২০২০ পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার লবণ চাষি ১২ লাখ ৮৩ হাজার মেট্রিক টন লবণ উৎপাদন করেছে, যা গত মৌসুমের এই সময়ের চেয়ে ৭০ হাজার মেট্রিক টন বেশি। এছাড়াও দেশের সকল জেলার ডিলার, পাইকারী ও খুরচা বিক্রেতাপর্যায়ে আয়োডিনযুক্ত ভোজ্য মজুদ রয়েছে। সব মিলিয়ে বর্তমানে মজুদকৃত লবণ দিয়ে আগামী ১০ মাস পর্যন্ত অনায়াসে দেশের লবণের চাহিদা পূরণ করা যাবে বলেও সভায় জানানো হয়।
শিল্প সচিব মো. আবদুল হালিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি), বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি), বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) এবং বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের (বিএসসি) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই) ও বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্রের (বিটাক) মহাপরিচালক, এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।