Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

করোনার ধাক্কা ৩১৪ প্রকল্পে, নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়ন নিয়ে শঙ্কা


২৪ এপ্রিল ২০২০ ১২:১০

ঢাকা: মার্চে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (আরএডিপি) ৩১৪টি প্রকল্প দ্রুত শেষ করার জন্য সিদ্ধান্ত হলেও কোনো কার্যক্রম এগোয়নি। নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) বিস্তার রোধে সৃষ্ট লকডাউনের কারণে ২৬ মার্চ থেকেই মাঠ পর্যায়ে প্রকল্পের বাস্তবায়ন থেমে আছে। এদিকে এপ্রিলে চলমান লকডাউন পরিস্থিতি মে’র প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত থাকবে সেটা প্রায় নিশ্চিত। তবে মে মাসে পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে সেটি এখনও বোঝা যাচ্ছে না। ফলে প্রকল্পগুলো নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়ন নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। যদিও চলতি অর্থবছর অর্থাৎ জুনের মধ্যে এসব প্রকল্প শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো।

এ প্রসঙ্গে বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব আবুল মানসুর মো. ফয়েজউল্লাহ সারাবাংলাকে বলেন, ‘কাজ করতে না পারলে প্রকল্পগুলো শেষ হবে কীভাবে। করোনার কারণে দেশে চলছে লকডাউন। এ অবস্থায় মাঠ পর্যায়ে প্রকল্পের কাজ থেমে আছে। তাছাড়া আমরা জানি না, সামনে আর কতদিন এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হলে অধিকাংশ প্রকল্পের মেয়াদ বাড়তে পারে। সেইসঙ্গে ব্যয় বাড়ারও আশঙ্কা রয়েছে।’

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের মূল বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) সমাপ্তর জন্য ৩৫৫টি প্রকল্প নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে বিনিয়োগ প্রকল্প ছিল ৩৪১টি এবং কারিগরি সহায়তা প্রকল্প ১৪টি। কিন্তু অর্থবছরের মাঝ পথে এসে সেই লক্ষ্য থেকে সরে আছে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো। ৪১টি প্রকল্প শেষ করা সম্ভব হবে না বলে পরিকল্পনা কমিশনকে জানায় প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। ফলে আরএএডিপিতে সমাপ্তর জন্য নির্ধারণ করা হয় ৩১৪টি প্রকল্প। এর মধ্যে বিনিয়োগ প্রকল্প রয়েছে ৩১২টি এবং কারিগরি সহায়তা প্রকল্প দুটি।

আরএডিপি অনুমোদনের সময় বলা হয়, এসব প্রকল্পের অনুকূলে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ নিশ্চিত করা হয়েছে। কজেই এসব প্রকল্পে প্রত্যাশা অনুযায়ী ফলাফল যথাসময়ে দিতে হবে এবং প্রকল্পগুলো অবশ্যই চলতি বছরের জুনের মধ্যে শেষ করতে হবে। তাছাড়া প্রকল্পগুলোর পুনরায় মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব বিবেচনায় নেওয়া হবে না। কিন্তু গত ১৯ মার্চ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় আরএডিপি অনুমোদনের পর থেকেই করোনার জন্য লকডাউন শুরু হয়। ফলে প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন বাধার মুখে পড়ে।

এ বিষয়ে পরিকল্পনা সচিব মো. নূরুল আমিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘করোনার কারণে প্রকল্পের তেমন কোনো কাজ করা যচ্ছে না। আশা করা হয়েছিল প্রকল্পগুলো আগামী জুন মাসের মধ্যেই শেষ হবে। কিন্তু সেটি আর সম্ভব হবে না বলেই মনে হচ্ছে। করোনা দীর্ঘায়িত হলে আগামী অর্থবছরে এডিপিতে এগুলো যুক্ত করতে হবে।’

চলতি অর্থবছর সেক্টরভিত্তিক নির্ধারণ সম্ভাব্য সমাপ্য প্রকল্পের সংখ্যা হচ্ছে- কৃষিতে ২৫টি প্রকল্প, পল্লী উন্নয়ন ও পল্লী প্রতিষ্ঠান সেক্টরের প্রকল্প ২৭টি। এছাড়া পানি সম্পদ সেক্টরের ৩৩টি, শিল্প সেক্টরের নয়টি, বিদ্যুতের ১২টি। তৈল-গ্যাস ও প্রাকৃতিক সম্পদ সেক্টরের একটি, পরিবহন সেক্টরের ৬১টি ও যোগাযোগের পাঁচটি। এদিকে ভৌত-পরিকল্পনা-পানি সরবরাহ ও গৃহায়ন সেক্টরে ৬৪টি প্রকল্প রয়েছে। আরও কয়েকটি সেক্টরের প্রকল্পগুলো হচ্ছে-শিক্ষা ও ধর্মে ১৮টি, ক্রীড়া ও সংস্কৃতির ১১টি, স্বাস্থ্য-পুষ্টি-জনসংখ্যা ও পরিবার কল্যাণের ১৫টি, গণসংযোগের তিনটি, সমাজ কল্যাণ-মহিলাবিষয়ক ও যুব উন্নয়ন সেক্টরের ১১টি, জনপ্রশাসন সেক্টরের তিনটি, বিজ্ঞান-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ১০টি এবং শ্রম ও কর্মসংস্থানের তিনটি প্রকল্প রয়েছে।

আগামী জুনের মধ্যে সমাপ্তর জন্য নির্ধারিত কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রকল্প হচ্ছে- তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু নির্মাণ, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভূলতায় ৪ লেনবিশিষ্ট ফ্লাইওভার নির্মাণ, ইজতেমা মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ, ঢাকা-এয়াপোর্ট মহাসড়ককে শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের কাছে পথচারী আন্ডারপাস নির্মাণ প্রকল্প। এছাড়া ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী ইন্টার সেকশন থেকে মাওয়া পর্যন্ত এবং পাচ্চর ভাঙ্গা অংশ ধীরগতির যানবাহনের জন্য পৃথক লেনসহ ৪ লেনে উন্নয়ন প্রকল্পের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্তকরণ, কনভারশন অব ১৫০ মেগাওয়াট সিলেট জিটি টু ২২৫ মেগাওয়াট সিসিপিপি প্রকল্প, শাহজীবাজার ১০০ মেগাওয়াট গ্যাস টারবাইন পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণ, কনস্ট্রাকশন অব বিবিয়ানা-৩, চারশত মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণ এবং ভেরামারা-বহরমপুর দ্বিতীয় ৪০০ কেভি ডাবল সার্কিট সঞ্চালন (বাংলাদেশ অংশ) নির্মাণ প্রকল্প।

৩১৪ প্রকল্প আরএডিপি করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর