Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কোন হাসপাতালে কত পিপিই, তালিকা প্রকাশের আহ্বান আর্টিকেল ১৯ এর


২৪ এপ্রিল ২০২০ ১৮:৩৫

ঢাকা: করোনা রোগীদের চিকিৎসার শুরু থেকে চিকিৎসকসহ প্রথম সারির স্বাস্থ্যকর্মীদের অনেকে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) না পাওয়ার অভিযোগ করে আসছেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার স্বার্থে কোন প্রতিষ্ঠানে কতসংখ্যক পিপিই সরবরাহ করা হয়েছে সেই তালিকা প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আর্টিকেল ১৯।

শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংগঠনটি বলছে, করোনার মতো বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য সংকট মোকাবিলায় সম্মুখ সারিতে আছেন চিকিৎসক, নার্স, টেকনিশয়ানসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী। করোনার সংক্রমণ এড়িয়ে রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে এসব স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক সুরক্ষা উপকরণ তথা পিপিই অত্যাবশ্যক। তাই পিপিই বিতরণের ক্ষেত্রে এর যথাযথ মান ও বিতরণ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

আর্টিকেল ১৯ এর বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল বলেন, “করোনা মোকাবিলা সম্পর্কিত কর্ম পরিকল্পনায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, ’যে সব স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখোমুখি নিজেরা ও আপনজন হচ্ছেন, সে সম্পর্কে জানার এবং বোঝার অধিকার মানুষের রয়েছে। শুধু তাই নয়, ঝুঁকি মোকাবিলার এই প্রক্রিয়ায় সক্রিয় অংশগ্রহণের অধিকারও তার রয়েছে।’ অর্থাৎ করোনা মোকাবিলার অংশ হিসেবে কোথায় কী পরিমাণ পিপিই বিতরণ করা হয়েছে তা স্বাস্থ্যকর্মী তথা দেশের সাধারণ মানুষ জানতে চাইতেই পারেন। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, তথ্যের অধিকার একটি মৌলিক মানবাধিকার এবং সঠিক তথ্যের প্রয়োজনও এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি। করোনার মতো জরুরি পরিস্থিতিতে তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করতে না পারলে স্বাস্থ্য সেবা যেমন ব্যহত হবে তেমনি সঠিক তথ্যের অভাবে ভুল তথ্য এবং ভুয়া খবর ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বেড়ে যাবে।”

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্বাস্থ্য অধিদফতর ২০ এপ্রিল পর্যন্ত সারা দেশে ১০ লাখেরও বেশি পিপিই বিতরণের তথ্য নিশ্চিত করেছে। অধিদফতরের তথ্য মতে, সারাদেশে সরকারি চিকিৎসক-নার্সসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী আছেন ৮২ হাজার ৫১ জন। এ হিসেবে একজনের গড়ে ১২টি পিপিই পাওয়ার কথা।

আর্টিকেল ১৯ লক্ষ্য করেছে, এই বিপুল পরিমাণ পিপিই বিতরণের সরকারি তথ্যের বিপরীতে দেশজুড়ে অনেক স্বাস্থ্যকর্মী উদ্বেগের সঙ্গে জানিয়েছেন, কোনো পিপিই তারা পাননি। যারা পেয়েছেন, তারাও পিপিইর মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। মানসম্মত মাস্ক ও পিপিই সরবরাহ না পাওয়া নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় ১৮ এপ্রিল নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের অ্যানেসথেশিয়া বিভাগের চিকিৎসক আবু তাহেরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

আবু তাহের ১৬ এপ্রিল তার স্ট্যাটাসে লেখেন, এখন পর্যন্ত আমিসহ আমার ডিপার্টমেন্ট এর কেউ ১টিও n95/kn95/ffp2 মাস্ক পাইনি। তাহলে স্বাস্থ্য সচিব মিথ্যাচার কেন করলেন উনি n95 ইকোয়িভেলেন্ট মাস্ক দিচ্ছেন? গত একমাসে আমার ডিপার্টমেন্টে ৮ জনের জন্য ২টি পিপিই দেওয়া হয়েছে। এই হলো পর্যাপ্ত পিপিই মজুদ।

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক-নার্সরা শুরু থেকেই পর্যাপ্ত ও মান সম্মত সুরক্ষ উপকরণ এবং উপযুক্ত কর্মপরিবেশ না থাকার কথা জানিয়েছেন, যা গণমাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে। এমন প্রেক্ষাপটে সরকারি হাসপাতালে কর্মরত নার্সদের গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে নিষেধ করে ১৫ এপ্রিল একটি নোটিশ জারি করে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতর।

ফারুখ ফয়সল বলেন, ’স্বাস্থ্যকর্মীদের বিভিন্ন যৌক্তিক উদ্বেগ প্রশমনের পরিবর্তে তাদের বিরুদ্ধে এই ধরনের নিবর্তনমূলক পদক্ষেপ অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এটি স্পষ্টতই মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও তথ্যের অধিকাররে লঙ্ঘন। তাছাড়া এর প্রতিক্রিয়া করোনা ব্যবস্থাপনার সঙ্কটকে আরো নাজুক করবে। কারণ, সুরক্ষা উপকরণ ও সেবাদানের উপযুক্ত পরিবেশ না থাকলে চিকিৎসকরা যেমন ঝুঁকির মধ্যে পড়বেন, তেমনি অসুরক্ষিত অবস্থায় বহু রোগীকে চিকিৎসা দেয়া চিকিৎসকরাও অন্য রোগীকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবেন।’

ফারুখ ফয়সল মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও তথ্যের অধিকার সমুন্নত রাখার স্বার্থে চিকিৎসক আবু তাহেরকে দেওয়া কারণ দর্শানোর নোটিশ ও নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের জারি করা নোটিশ প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।

সারাবাংলা/ইএইচটি/একে

আর্টিকেল ১৯ করোনা মোকাবিলা করোনাভাইরাস টপ নিউজ পিপিই পিপিই বিতরণ হাসপাতাল


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর