করোনাভাইরাস সংক্রমণে হঠাৎ স্ট্রোকের ঝুঁকিতে তরুণরা
২৪ এপ্রিল ২০২০ ১৯:১৩
নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে সৃষ্ট বিশ্বমহামারি কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার পর তরুণদের অনেকেরই হঠাৎ স্ট্রোকের ঘটনা ঘটছে। তাদের কারোরই আগে অসুস্থতার ইতিহাস ছিল না। মার্কিন চিকিৎসকদের প্রতিবেদনের বরাতে এ খবর জানিয়েছে সিএনএন।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক থেকে চিকিৎসকদের কয়েকজন জানিয়েছেন, নভেল করোনাভাইরাস আক্রান্ত ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সীদের মধ্যে হঠাৎ স্ট্রোকের ঘটনা বেড়েছে।
এ ব্যাপারে নিউইয়র্কের মাউন্ট সিনাই হেলথ সিস্টেমের নিউরোসার্জন ডা. থমাস অক্সলে সিএনএনকে বলেছেন, সম্প্রতি স্ট্রোকের কারণে পাঁচ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী তাদের হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন। প্রত্যেকের বয়স ৫০ এর নিচে। কিন্তু, প্রাথমিকভাবে তাদের মধ্যে কোভিড-১৯ এর কোনো ধরনের উপসর্গ ছিল না বললেই চলে।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে আক্রান্তদের ধমনীতে রক্ত জমাট বেধে যাওয়ায় মারাত্মক স্ট্রোক হতে দেখা যাচ্ছে। প্রতিবেদন থেকে দেখা যাচ্ছে, দুই সপ্তাহের মধ্যে তরুণদের হঠাৎ স্ট্রোকের ঘটনা সাত গুণ বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, এদের বেশিরভাগেরই অসুস্থতার কোনো ইতিহাস নেই। কোভিড-১৯ রোগের হালকা লক্ষণ (দুইজনের ক্ষেত্রে কোনো লক্ষণই ছিল না) নিয়ে তারা বাড়িতেই ছিলেন। কিন্তু, টেস্টের পর তারা সবাই নভেল করোনাভাইরাস পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন।
ডা. থমাস অক্সলের মতে, এখন অবধি মানুষকে কেবলমাত্র শ্বাসকষ্ট বা উচ্চ তাপমাত্রার উপসর্গের ক্ষেত্রে অ্যাম্বুলেন্সের জন্য জরুরিভিত্তিতে ফোন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু করোনার হালকা উপসর্গের পাশাপাশি স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকলেও রোগীকে জরুরিভিত্তিতে হাসপাতালে স্থানান্তর করতে হবে। স্ট্রোকের ঘটনায় দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। স্ট্রোকের ক্ষেত্রে কয়েক ঘন্টাই শারীরিক ক্ষতির মাত্রায় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। এ পার্থক্য নির্ভর করবে স্ট্রোকের উপসর্গ দেখা দেওয়ার পর কত দ্রুত তাকে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে তার ওপর।
যেহেতু স্ট্রোক খুব টাইম সেনসিটিভ, তাই জরুরি মেডিকেল সেবার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত ব্রেইনস্টোকের ক্ষেত্রে ছয়ঘন্টার মধ্যে এবং অন্যান্য স্ট্রোকের ক্ষেত্রে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রোগীকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা জরুরি।
স্ট্রোকের রোগী বোঝার ক্ষেত্রে FAST পদ্ধতি অবলম্বনেরও পরামর্শ দেন ডা. অক্সলে, এফ – ফেইস ড্রুপিং (মুখ বেঁকে যাওয়া), এ – আর্ম উইকনেস (হাতের শক্তি হারিয়ে ফেলা), এস – স্পিচ ডিফিকাল্টি (কথা বলতে সমস্যা), টি – টাইম টু কল ইমার্জেন্সি মেডিকেল সার্ভিস (অনতিবিলম্বে অ্যাম্বুলেন্স ডাকা)