Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বড় বাপের পোলায় খায়’ এখন শুধুই স্মৃতি


২৫ এপ্রিল ২০২০ ১৮:২৫

ঢাকা: নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) আগ্রাসী আক্রমণে বিশ্বব্যাপী ভিন্ন পরস্থিতিতে এবার এসেছে পবিত্র রমজান মাস। প্রতিবছরই সিয়াম-সাধনার এই মাসকে ঘিরে দেশে-বিদেশে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা কাজ করে। ঘটে প্রচুর পরিমাণে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। কিন্তু আগ্রাসী করোনা যেন এবার সবকিছুতেই পানি ঢেলে দিয়েছে।

রমজান মাসের অন্যতম দিক হচ্ছে, সুবহে সাদিক থেকে শুরু করে সারাদিন রোজা রাখার পর সূর্য ডোবার সময় ইফতার করা। আর রমজান মাসে রাজধানী ঢাকা শহরে এই ইফতারকে ঘিরে এক ধরনের তাণ্ডবই চলে বলে যায়। বিশেষ করে পুরান ঢাকায় ইফতারকে কেন্দ্র করে বসে নানারকম পসরা- যার মধ্যে ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ নামের এক জাতীয় কাবাব বিশেষ উল্লেখযোগ্য। তবে এবার করোনা পরিস্থিতিতে সারাদেশ কার্যত লকডাউনে থাকায় এবং অতি জরুরি ছাড়া বাকি কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকায় কোথাও ইফতারের পসরা বসেনি। পুরান ঢাকার চকবাজারে নেই সেই ইফতারের জৌলুশ। এখন পুরো চকবাজারের রাস্তাই বলতে গেলে ফাঁকা।

বিজ্ঞাপন

মালিটোলার বাসিন্দা মোহাম্মদ হারুনের জন্ম পুরাতন ঢাকায়। তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি যে, রমজান মাস এলে চকবাজার থেকে ইফতার কেনা হতো। কিন্তু এবার করোনার কারণে হচ্ছে না। এছাড়া পুরো শহরজুড়েই ইফতার কেনা-বেচার চিত্র আগের রমজানগুলোতে দেখেছি। ব্যতিক্রম শুধু এবার।’

বনানীর বাসিন্দা হাজী শরিয়ত বলেন, ‘প্রতি রমজানেই আমাদের এখানে (বনানী-গুলশান) ইফতার নিয়ে বিশেষ আয়োজন হত। এবার যেহেতু ভিন্ন পরিস্থিতি, সেজন্য বাঁচতে হলে ঘরে থাকতে হবে। তাই এবার ইফতারের বিশেষ আয়েজনও বাতিল।’

তিনি আরও বলেন, “প্রতি রমজানে আমরা আমাদের এলাকা থেকেই ইফতার কিনতাম। তবে রমযানের মাঝামাঝিতে চকবাজার গিয়ে ‘বড় বাপের পোলায় খায়’সহ পুরান ঢাকার আকর্ষণীয় ইফতার কিনে আনতাম।’

বিজ্ঞাপন

আগের বছরগুলোতে পুরান ঢাকার ইফতারের পসরাতে হরেক রকমের খাবার থাকত। ভাজা-পোড়াসহ বিভিন্ন ধরনের পানীয় নিয়ে ব্যবসায়ীরা পসার জমাত। ভাজা-পোড়ার মধ্যে বেগুনি ছিল সবচেয়ে জনপ্রিয়। সে কারণে আগের বছরগুলোতে রোজার সময় বেগুনির দাম আকাশ-ছুঁতে দেখা গেছে। ভাজা-পোড়ার মধ্যে অভিজাত খাবার হিসেবে মূল্যায়ন পেত বিভিন্ন ধরনের কাবাব- যার মধ্যে শীর্ষে ছিল ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ নামের বিশেষ কাবাব।

এছাড়া ইফতারের আইটেমে বিখ্যাত ঝুনুর মোরগ পোলাও, হাজী বিরিয়ানিসহ বিভিন্ন ধরনের পোলাও-বিরিয়ানির প্রচুর কদর রয়েছে, যেগুলো এবারের ইফতারে অনুপস্থিত থাকবে। আলাউদ্দিন, মরণ চান, মানিকসহ মিষ্টির দোকানেও রমজান মাসকে ঘিরে বিশেষ আয়োজন হত। সেইসঙ্গে পুরান ঢাকায় ছানা-মাখন ও দই-মাঠার বিশেষ পসরা বসত। এর বাইরে পানীয় আইটেমে বিউটির লাচ্ছা সরবত ও ফালুদা জনপ্রিয় ছিল। পাশাপাশি ইফতারের বাজারে ফলমুলের পসরাও অন্য আইটেমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিক্রি হত। বাদ যেত না ফাস্ট ফুডের আয়োজনও।

প্রসঙ্গত, করোনা প্রতিরোধে সবাই এখন বিশেষ সময় অতিবাহিত করছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে আগামী ৫ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এই সময় সবাইকে নিজ নিজ ঘরে অবস্থান করতে বলা হয়েছে। সাধারণ অফিস-আদালত এই সময়ে বন্ধ রয়েছে, সীমিত আকারে খোলা হাট-বাজার। তাই এবারের রোজায় ইফতারের পসরা বসছে না।

চকবাজার টপ নিউজ পুরান ঢাকা বড় বাপের পোলায় খায়

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর