Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঝুঁকি আর ভোগান্তি নিয়ে কাজে ২০০ কারখানায় লাখো শ্রমিক


২৬ এপ্রিল ২০২০ ১৮:৩১

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে আংশিকভাবে খুলে দেওয়া হয়েছে প্রায় দুই শতাধিক পোশাক কারখানা। ঝুঁকি মাথায় নিয়ে এসব কারখানায় যোগ দিয়েছে লাখ খানেক শ্রমিক। শিল্প পুলিশ বলছে, ঢাকার চেয়ে চট্টগ্রামে বেশি শ্রমিক কাজে যোগ দিয়েছে।

রোববার (২৬ এপ্রিল) চট্টগ্রামের তিনটি রফতানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) এবং এর বাইরে বিজিএমইএর আওতাধীন পোশাক কারখানাগুলোর এক-তৃতীয়াংশ খুলেছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

সকাল থেকে কর্মস্থলে যোগ দিতে গিয়ে শ্রমিকদের নানা ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। সারাদেশের মতো চট্টগ্রামেও গণপরিবহন চলাচল বন্ধ। রাস্তায় নেমে শ্রমিকদের গাড়ি না পেয়ে রিকশায় বাড়তি ভাড়া গুণে অথবা পায়ে হেঁটে কর্মস্থলে যেতে হয়েছে। রোববার দুপুরের দিকে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায় ফের এইচ গ্রুপের একটি কারখানায় এ নিয়ে বিক্ষোভও হয়েছে। এছাড়া কিছু কিছু কারখানায় নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যসুরক্ষা তেমনভাবে মানা হয়নি বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শিল্প পুলিশের চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-পরিচালক মো. নাজিমুল হক সারাবাংলাকে বলেন, ‘ইপিজেড ছাড়াও একশ’র বেশি কারখানা খুলেছে। শ্রমিকের ওভারঅল ডাটা আমাদের কাছে নেই। তবে ঢাকার চেয়ে চট্টগ্রামে বেশি শ্রমিক কাজে যোগ দিতে দেখা গেছে। গণপরিবহনের কারণে শ্রমিকদের একটা অংশকে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। তবে শ্রমিকদের ৯০ শতাংশেরও বেশি নিজ নিজ কারখানার আশপাশের বাসায় বসবাস করে। কিছু কিছু কারখানা স্বাস্থ্যসুরক্ষা সঠিকভাবে মানছে। সব কারখানা তো আমাদের পক্ষে দেখা সম্ভব নয়।’

চট্টগ্রামে বেপজার অধীনে সিইপিজেড ও কর্ণফুলী ইপিজেড আছে। ইয়ং গ্রুপের মালিকানায় আছে কোরিয়ান ইপিজেড। এছাড়া বিজিএমইএ’র অধীনে আছে প্রায় সাত’শ কারখানা।

শিল্প পুলিশের চট্টগ্রাম অঞ্চলের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চট্টগ্রাম জেলায় সচল শিল্পকারখানা আছে ১২২৯টি। এর মধ্যে সাধারণ ছুটিতে কারখানা চালু ছিল ৩৭৭টি। এর মধ্যে ১৮৭টি তৈরি পোশাককারখানা এবং বাকি ১৯০টি রড-সিমেন্টসহ বিভিন্ন খাতের।

সূত্রমতে, চট্টগ্রাম ইপিজেডে মোট কারখানা আছে ১৫৮টি। এসব কারখানায় ২ লাখের মতো শ্রমিক কাজ করে। এর মধ্যে ৭০টি কারখানা রোববার চালু ছিল। তবে শ্রমিক উপস্থিতি ছিল কম।

সিইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক খুরশিদ আলম বলেন, ‘৭০টি কারখানা আমাদের কাছে খোলার আবেদন করেছিল। সেগুলো খুলেছে। ২৫ শতাংশ শ্রমিক অর্থাৎ ৪৫ হাজারের মতো কাজে যোগ দিয়েছিল।’

সিইপিজেডের সব কারখানা সামাজিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলার আদেশ দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তিনি।

সূত্রমতে, চট্টগ্রাম ইপিজেডের অদূরে কর্ণফুলী ইপিজেডে ৪১টি কারখানার মধ্যে ২০টি রোববার চালু ছিল। ৭৬ হাজার শ্রমিকের মধ্যে ২৫ হাজারের মতো কাজে যোগ দিয়েছেন। কোরিয়ান ইপিজেডে ২৩টি কারখানার মধ্যে ১৭টি চালু ছিল। ২৫ হাজার শ্রমিকের মধ্যে প্রায় ১০ হাজার কাজে যোগ দিয়েছেন।

এছাড়া বিজিএমইএ’র চালু থাকা ৩২৬টি কারখানার মধ্যে এক তৃতীয়াংশ রোববার খুলেছে বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএর প্রথম সহসভাপতি এম এ সালাম।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, তিন ইপিজেডের কারখানাগুলোর অধিকাংশটিতে থার্মাল স্ক্যানার বসানো হয়েছে। কিছু কারখানায় হাত ধুয়ে শ্রমিকদের প্রবেশ করতে হচ্ছে। শ্রমিকদের মাস্ক এবং গ্লাভসও সরবরাহ করা হয়েছে। তবে ইপিজেডের বাইরের কারখানাগুলোতে স্বাস্থ্যসুরক্ষার ব্যবস্থা তেমন নেই বলে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, কারখানা খোলা মানেই জনসমাগম। আর জনসমাগমের কারণে করোনা ঝুঁকি বাড়ছে। কারখানাগুলোকে অবশ্যই স্বাস্থ্যসুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। তবে কারখানাগুলো বন্ধ থাকলেই ভালো হতো।

এদিকে করোনা ঝুঁকির মধ্যে কারখানা খুললেও প্রতিদিনি বিভিন্ন কারখানায় বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ সামাল দিতে হচ্ছে পুলিশকে।

শিল্প পুলিশের কর্মকর্তা মো. নাজিমুল হক সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রতিদিন ২-৩টি কারখানায় বিক্ষোভ হচ্ছে। আমাদের গিয়ে সেগুলো সামাল দিতে হচ্ছে। অধিকাংশ কারখানার শ্রমিকদের দাবি, তারা গতমাসের বেতন পাননি।’

কর্মী গার্মেন্টস


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর